ঢাকা ০৫:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেই ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া

Reporter Name

সবুজদেম ডেক্সঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য কারাগার থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসারে গতকাল বিকাল পৌনে ৪টার দিকে প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে বিএসএমএমইউ-তে হাসপাতালে এসে পৌঁছান তিনি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এক নজর দেখতে আসা শত শত নেতা-কর্মী মুহুর্মুহু স্লোগান দেন এবং তাদের প্রিয় নেত্রীর মুক্তি দাবি করে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ভর্তি করা হয়। পরে কেবিনে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখেন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী। চিকিৎসা শুরুর আগে যা যা ‘ফরমালিটিজ’ সেগুলো সম্পন্ন করেন তিনি। আজ দুপুরে অনুষ্ঠেয় মেডিকেল বোর্ডের মিটিংয়ের পর থেকেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করা হবে বলে জানান অধ্যাপক জলিল চৌধুরী।

এর আগে বেলা ৩টা ১৮ মিনিটে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা  জোনের একটি পেট্রোল কারে হাসপাতালে হয়। গাড়িবহর হাসপাতালে এসে পৌঁছায় ৩টা ৪২ মিনিটে। হাসপাতালের ৬১১ নম্বর কেবিনে উঠেছেন খালেদা জিয়া। পাশের ৬১২ নম্বর কেবিনটিতে তার ব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। এখানে চিকিৎসাকালে তিনি ভিআইপি এই কেবিনে থাকবেন।

কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার হাসপাতালে আসা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় পুরো এলাকায়। গোটা এলাকাই ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। রোগীদের স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। শাহবাগ এলাকায় তখন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। আগে থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য হুইল চেয়ার নিয়ে অপেক্ষমাণ ছিলেন হাসপাতালের দুজন কর্মচারী। ডিএমপির একটি বিশেষ গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই র?্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীরা কয়েকটি ছাতা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। একজন সদস্য গাড়ির দরজা টেনে খুলে দিলে বেগম খালেদা জিয়া ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে আসেন। সেখানে তার ব্যক্তিগত সহকারী ফাতেমা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বেগম জিয়ার পরনে ছিল হালকা গোলাপি রঙের শাড়ি এবং চোখে কালো চশমা। গাড়ি থেকে নামার পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে কেবিন ব্লকের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

কারাগার থেকে আসার সময় খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটির সামনে ও পেছনে ছিল পুলিশ ও র‌্যাবের চৌকস সদস্যদের নিয়ে গড়া বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা পরিবহন। একটি অ্যাম্বুলেন্সও ছিল এই গাড়িবহরে। খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বের করার সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার, আলিয়া মাদ্রাসা চত্বরসহ পুরান ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিএসএমএমইউ এবং আশপাশেও ছিল অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, জেলপুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। গতকাল বেলা ১টা পর থেকেই বিএসএমএমইউ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান নেয়। এ ছাড়া হাসপাতালের সামনের গেটে অবস্থান করা গাড়ি সরিয়ে দিয়ে রাস্তাটি ফাঁকা করে দেওয়া হয়।

এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. উরহাদ হালিম ডোনার, আমান উল্লাহ আমান, দলের যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দীন আলম, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আবু নাসের রহমাতউল্লাহ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।

মেডিকেল বোর্ড গঠন : আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে ভর্তি হয়েছেন। অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী ও সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেছা আহমেদ ছাড়াও এই বোর্ডে নতুন করে অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক (নিউমটোলিজ), অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক নকুল কুমার দত্তকে (অর্থোপেডিকস) বোর্ডে যুক্ত করা হয়েছে। তবে বেগম খালেদা জিয়া চাইলে মেডিকেল বোর্ডের আজকের সভার পর আরও দুই-তিনজন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানা যায়।

এ সম্পর্কে হাসপাতালের পরিচালক সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কেবিন ব্লকের ছয়তলায় অবস্থান করছেন। হাই কোর্টের একটি নির্দেশনা হাসপাতালে এসেছে। সে অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। পরিচালক বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে আমাদের দেখা ও কুশল বিনিময় হয়েছে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে যে বোর্ড গঠন করা হয়েছে, সেই বোর্ড তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব পালন করবে।’

মেডিকেল বোর্ড নিয়ে বিএনপির অভিযোগ :  বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত সরকারি পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্গঠিত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল বিকালে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন অর রশিদের ব্রিফিংয়ে পর তিনি এ অভিযোগ করেন। ডা. জাহিদ বলেন, ‘আজকে যে মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে, এতে যে নামগুলো পরিচালক মহোদয় বলেছেন, সেখানে যে তিনজন নতুন সদস্য অন্তভুক্ত করা হয়েছে, তা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হয়নি।’

হাসপাতাল এলাকায় স্লোগান ও নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে নিয়ে আসার সময় কেবিন ব্লকের বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ভিজে  দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক শ নেতা-কর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং স্লোগান দেন। এ সময় নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তাদের বেশ কয়েকবার ধাক্কাধাক্কিসহ দুই দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে পূর্ব দিকের গেট দিয়ে পুলিশ সরিয়ে দেয় বলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন জানান। এ বিষয়ে মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান বলেন, ‘আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। কত দিন আমরা নেত্রীকে দেখি না। তাই আমরা তাকে দেখতে এসেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের বের করে দিয়েছে।’

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:৩২:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ অক্টোবর ২০১৮
৭৪৪ Time View

অবশেষে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেই ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া

আপডেট সময় : ০৯:৩২:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ অক্টোবর ২০১৮

সবুজদেম ডেক্সঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য কারাগার থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসারে গতকাল বিকাল পৌনে ৪টার দিকে প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে বিএসএমএমইউ-তে হাসপাতালে এসে পৌঁছান তিনি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এক নজর দেখতে আসা শত শত নেতা-কর্মী মুহুর্মুহু স্লোগান দেন এবং তাদের প্রিয় নেত্রীর মুক্তি দাবি করে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ভর্তি করা হয়। পরে কেবিনে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখেন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী। চিকিৎসা শুরুর আগে যা যা ‘ফরমালিটিজ’ সেগুলো সম্পন্ন করেন তিনি। আজ দুপুরে অনুষ্ঠেয় মেডিকেল বোর্ডের মিটিংয়ের পর থেকেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করা হবে বলে জানান অধ্যাপক জলিল চৌধুরী।

এর আগে বেলা ৩টা ১৮ মিনিটে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা  জোনের একটি পেট্রোল কারে হাসপাতালে হয়। গাড়িবহর হাসপাতালে এসে পৌঁছায় ৩টা ৪২ মিনিটে। হাসপাতালের ৬১১ নম্বর কেবিনে উঠেছেন খালেদা জিয়া। পাশের ৬১২ নম্বর কেবিনটিতে তার ব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। এখানে চিকিৎসাকালে তিনি ভিআইপি এই কেবিনে থাকবেন।

কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার হাসপাতালে আসা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় পুরো এলাকায়। গোটা এলাকাই ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। রোগীদের স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। শাহবাগ এলাকায় তখন প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। আগে থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য হুইল চেয়ার নিয়ে অপেক্ষমাণ ছিলেন হাসপাতালের দুজন কর্মচারী। ডিএমপির একটি বিশেষ গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই র?্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীরা কয়েকটি ছাতা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। একজন সদস্য গাড়ির দরজা টেনে খুলে দিলে বেগম খালেদা জিয়া ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে আসেন। সেখানে তার ব্যক্তিগত সহকারী ফাতেমা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বেগম জিয়ার পরনে ছিল হালকা গোলাপি রঙের শাড়ি এবং চোখে কালো চশমা। গাড়ি থেকে নামার পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে কেবিন ব্লকের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

কারাগার থেকে আসার সময় খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িটির সামনে ও পেছনে ছিল পুলিশ ও র‌্যাবের চৌকস সদস্যদের নিয়ে গড়া বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা পরিবহন। একটি অ্যাম্বুলেন্সও ছিল এই গাড়িবহরে। খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বের করার সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার, আলিয়া মাদ্রাসা চত্বরসহ পুরান ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিএসএমএমইউ এবং আশপাশেও ছিল অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, জেলপুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। গতকাল বেলা ১টা পর থেকেই বিএসএমএমইউ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান নেয়। এ ছাড়া হাসপাতালের সামনের গেটে অবস্থান করা গাড়ি সরিয়ে দিয়ে রাস্তাটি ফাঁকা করে দেওয়া হয়।

এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. উরহাদ হালিম ডোনার, আমান উল্লাহ আমান, দলের যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দীন আলম, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আবু নাসের রহমাতউল্লাহ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।

মেডিকেল বোর্ড গঠন : আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে ভর্তি হয়েছেন। অধ্যাপক আবদুল জলিল চৌধুরী ও সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেছা আহমেদ ছাড়াও এই বোর্ডে নতুন করে অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক (নিউমটোলিজ), অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক নকুল কুমার দত্তকে (অর্থোপেডিকস) বোর্ডে যুক্ত করা হয়েছে। তবে বেগম খালেদা জিয়া চাইলে মেডিকেল বোর্ডের আজকের সভার পর আরও দুই-তিনজন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানা যায়।

এ সম্পর্কে হাসপাতালের পরিচালক সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কেবিন ব্লকের ছয়তলায় অবস্থান করছেন। হাই কোর্টের একটি নির্দেশনা হাসপাতালে এসেছে। সে অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। পরিচালক বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে আমাদের দেখা ও কুশল বিনিময় হয়েছে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে যে বোর্ড গঠন করা হয়েছে, সেই বোর্ড তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব পালন করবে।’

মেডিকেল বোর্ড নিয়ে বিএনপির অভিযোগ :  বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত সরকারি পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্গঠিত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল বিকালে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন অর রশিদের ব্রিফিংয়ে পর তিনি এ অভিযোগ করেন। ডা. জাহিদ বলেন, ‘আজকে যে মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে, এতে যে নামগুলো পরিচালক মহোদয় বলেছেন, সেখানে যে তিনজন নতুন সদস্য অন্তভুক্ত করা হয়েছে, তা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হয়নি।’

হাসপাতাল এলাকায় স্লোগান ও নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে নিয়ে আসার সময় কেবিন ব্লকের বিল্ডিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ভিজে  দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক শ নেতা-কর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং স্লোগান দেন। এ সময় নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে তাদের বেশ কয়েকবার ধাক্কাধাক্কিসহ দুই দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে পূর্ব দিকের গেট দিয়ে পুলিশ সরিয়ে দেয় বলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন জানান। এ বিষয়ে মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান বলেন, ‘আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। কত দিন আমরা নেত্রীকে দেখি না। তাই আমরা তাকে দেখতে এসেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের বের করে দিয়েছে।’