সবুজদেশ ডেক্সঃ মাদারীপুর-৩ আসনের এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এমপি হওয়ার পর থেকেই তিনি এলাকায় নিয়মিত। এবারও এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন। এ আসনে নৌকা প্রতীক পেতে দলের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ গণসংযোগ করে চলেছেন। এ দুই কেন্দ্রীয় নেতা সমানতালেই এলাকায় যাচ্ছেন। তাদের দুজনেরই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন এ আসনের সাবেক এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন।

চাঁদপুর-৩ আসনের এমপি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এ আসনে মনোনয়ন চান। নিয়মিত দলীয় ও সরকারি কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডা. দীপু মনির সামনে শক্ত বাধা দলের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। সুজিত রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ডে খুবই সক্রিয়। নেতা-কর্মীরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। শুধু আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ডা. দীপু মনি ও সুজিত রায় নন্দীই নন, মনোনয়ন অর্জনের জন্য এমন দুই ডজন কেন্দ্রীয় নেতা মুখোমুখি অবস্থানে। দলের প্রেসিডিয়াম থেকে শুরু করে সম্পাদকমণ্ডলী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও উপদেষ্টা পরিষদের এই নেতারা অভিন্ন আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী। এরই মধ্যে তারা সমানতালে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ভোটের মাঠে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলার আগেই অনেকটা কেন্দ্রীয় নেতার প্রতিপক্ষ কেন্দ্রীয় নেতা। কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ১৪ দিন আগে শেষ পর্যন্ত কে পাবেন নৌকা প্রতীক তা নিয়ে স্নায়ুচাপ বাড়ছে নেতাদের মধ্যে। মনোনয়নপ্রত্যাশী এসব নেতা বলছেন, আমরা মাঠে সরকারের উন্নয়ন প্রচার করছি। নেত্রী যাকে প্রার্থী করবেন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাকেই বিজয়ী করব। আর বর্তমান এমপি যারা আছেন, তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল, এ দলে যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেস। নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই নৌকা দেবেন। এতে পাল্টাপাল্টির কিছু নেই। ফরিদুপর-১ আসনের এমপি আবদুর রহমান। তিনি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দাবিদার। তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন এ আসনের সাবেক এমপি কাজী সিরাজুল ইসলাম। তিনি দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। মনোনয়ন পেতে সমানতালে নিয়মিত গণসংযোগ, কর্মিসভা, মতবিনিময় করে চলেছেন। অপরদিকে এ আসনে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার। সিলেট-১ আসনের এমপি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি ঘোষণা করেছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন না। এ আসনে দলের মনোনয়ন চান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তবে সিরাজকে ছাড় দিতে চান না কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। কামরান মেয়র পদে নির্বাচনে হেরে সিলেটের ‘ভিআইপি’ আসনে নৌকার হাল ধরতে চান। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ভূঁইয়া মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনিই নৌকার কাণ্ডারি হতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তার সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা ইকবাল হোসেন অপু। অপু নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ, কর্মিসভা করে চলেছেন। দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় মোজাম্মেলও। টাঙ্গাইল-১ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি এবারও মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ আসন থেকে দলের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ড. আবদুর রাজ্জাকের বোন ও দলের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা। গোপালগঞ্জ-১ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান। সবকিছু ঠিক থাকলে ফারুক খানই দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন এটা নিশ্চিত। তবে এ আসনে দলের মনোনয়ন পেতে চান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মুকুল বোস। গোপালগঞ্জ-২ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। এবারও তিনিই মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে নির্বাচনী এলাকার সবাই মনে করেন। তবে এ আসনে এবার মনোনয়ন চাইতে পারেন দলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ। নরসিংদী-৫ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। এ আসনে এবার আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী হচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার। কাওছার নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ করে চলেছেন। মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণালকান্তি দাস। এবারও তিনি মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে এ আসনে দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরাও মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম-১৪ আসনের এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদভী। শুরু থেকে তার বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবির সম্পৃক্ততা, দলীয় নেতা-কর্মীদের উপেক্ষা করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এ আসনে এবার মনোনয়ন পেতে আগ্রহী আওয়ামী লীগের দুই উপ-সম্পাদক। তারা হলেন প্রচার-প্রকাশনা উপ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। তারা সমানতালে এলাকায় গণসংযোগ করছেন। তবে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আমিনুল ইসলাম আমিন। খুলনা-৪ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক শক্তিশালী মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা এস এম কামাল হোসেন। এস এম কামাল হোসেন নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ, উঠোন বৈঠকসহ নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশ নিচ্ছেন।

(সংগ্রহ কৃত)

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here