সবুজদেশ ডেক্সঃ শেষপর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু বিক্রি হবে, এমনটা কি ভেবেছিল কেউ কখনো! কিন্তু, এমনই এক ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ায় চার নাগরিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ছবি ও ভিডিও আদান-প্রদানের জনপ্রিয় সাইট ইনস্টাগ্রামে শিশু বিক্রি করছিলেন তারা। পুলিশ লেনদেনটি থামাতে সক্ষম হয় এবং তাদের গ্রেফতার করে। খবর: বিবিসি

জাভা দ্বীপাঞ্চলের বন্দর শহর সুরাবায়ার পুলিশ জানিয়েছে, ইনস্টাগ্রামে ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার এজেন্সি নামের একটি একাউন্ট থেকে কয়েকজন গর্ভবতী নারী, সঙ্গে তাদের গর্ভের আল্টাসোগ্রাফি চিত্র ও নবজাতকদের ছবি পোস্ট করা হয়।

এতে শিশু ক্রয়ের জন্য একটি ফোন নাম্বারও দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলা হয় আগ্রহীদের।

 

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ৩ সেপ্টেম্বর একটি শিশু বিক্রির জন্য অর্থ লেনদেন আটকে দিতে পেরেছে পুলিশ। তবে তার আগেই বিক্রি হয়ে যাওয়া এক শিশুর সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

পুলিশ জানায়, ২২ বছর বয়সী এক নারী তার ১১ মাস বয়সের শিশুকে বিক্রির শেষ পর্যায়ে ছিলেন। অর্থ লেনদেনের আগেই সেটা আটকে দেয়া গেছে।

ওই নারীকে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপিয়া, দালালকে ৫০ লাখ রুপিয়া এবং ইনস্টাগ্রাম পেজটির মালিক অ্যাল্টন ফিনান্দিতাকে ২৫ লাখ রুপিয়া পরিশোধ করার কথা ছিল শিশুটি ক্রেতার।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দেতিককে সুরাবায়ার গোয়েন্দা প্রধান কর্নেল সুদামিরান জানান, শিশু দত্তক নিতেই এতদিন ইনস্টাগ্রামের শরণাপন্ন হতো মানুষ এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করতো।

তিনি আরো জানান, পারিবারিক সমস্যায় পরামর্শ ও সেবা দিতে পরিচালিত হতো একাউন্টটি। সাতশ’রও বেশি ফলোয়ার ছিল এটির। এতে বিক্রির জন্য শিশুদের জন্মের যাবতীয় তথ্য, বয়স, ধর্মপরিচয় ও স্থানের নাম গোপন করা হয়। শিশু ও অন্যান্যদের চেহারাও ঘোলাটে করে দেয়া হয়।

একাউন্টটিতে শিশু বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মধ্যে কথোপকথনের কিছু স্ক্রিনশটও দেখা গেছে। সেখানে একজন নারী বলেছেন, তিনি সাত মাসের গর্ভবতী। কিন্তু, তিনি চান না যে তার পরিবার এটা জেনে যাক।

আরেক পোস্টে এক গর্ভবতী নারীর ছবি ও তার অবস্থানের বিস্তারিত রয়েছে। ছবির ক্যাপশনে লেখা, এই নারী গর্ভবতী এবং যারা বাচ্চা দত্তক নিতে চান, তারা যেন নির্ধারিত নম্বরে যোগাযোগ করেন। তবে কোনো পোস্টেই স্পষ্টভাবে শিশু কেনা বা বেচার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার শিশু সুরক্ষা কমিশনের (কেপিএআই) ভাইস-চেয়ারম্যান রিতা প্রাণওয়াতি বলেছেন, দেশটিতে এর আগেও শিশু পাচারের ঘটনা ঘটেছে। তবে ইনস্টাগ্রামে শিশু পাচারের ঘটনা খুবই বিরল। এটা একটি নতুন পদ্ধতি।

বিবিসি এ ব্যাপারে ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

সুদামিরান বলেন, গ্রেফতার চারজনের শিশু সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here