ঢাকা ০৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইভটিজিং প্রতিরোধ ও প্রতিকার

Reporter Name

ইভটিজিং বলতে কি বুঝি?

ইভটিজিং বলতে সাধারণত কোনো নারী বা কিশোরীকে তার স্বাভাবিক চলাফেরা বা কাজকর্ম করা অবস্থায় অশালীন মন্তব্য করা, ভয় দেখানো, তার নাম ধরে ডাকা এবং চিৎকার করা, বিকৃত নামে ডাকা, কোনো কিছু ছুড়ে দেয়া, ব্যক্তিতে লাগে এমন মন্তব্য করা, যোগ্যতা নিয়ে টিটকারী করা, তাকে নিয়ে অহেতুক হাস্যরসের উদ্রেক করা, রাস্তায় হাঁটতে বাধা দেয়া, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা, ইঙ্গিতপূর্ণ ইশারা দেয়া, সিগারেটের ধোঁয়া গায়ে ছাড়া, উদ্দেশ্যেমূলকভাবে পিছু নেয়া, অশ্লীলভাবে প্রেম নিবেদন করা, উদ্দেশ্যেমূলকভাবে গান, ছড়া বা কবিতা আবৃত্তি করা, চিঠি লেখা, পথ রোধ করে দাঁড়ানো, প্রেমে সাড়া না দিলে হুমকি প্রদান ইত্যাদি ইভটিজিংয়ের মধ্যে পড়ে।

দণ্ডবিধি আইন, ১৮৬০-এর ৫০৯ ধারায় ইভটিজিং সম্পর্কে বলা হয়েছে- যদি কোনো কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে সে নারী যাহাতে শুনিতে পায় এমনভাবে কোনো কথা বলে বা শব্দ করে কিংবা সে নারী যাহাতে দেখিতে পায় এমনভাবে কোনো অঙ্গভঙ্গি করে বা কোনো বস্তু প্রদর্শন করে, কিংবা অনুরূপ নারীর গোপনীয়তা অনাধিকার লঙ্ঘন করে, তাহা হইলে সেই ব্যক্তি এক (১) বৎসর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে কিংবা অর্থদণ্ডে কিংবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ এর ৭৬ ধারায় ইভটিজিং বা উত্ত্যক্ততা বিষয়ে বলা হয়েছে-

যদি কেউ কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বা সেখান হতে দৃষ্টিগোচরে স্বেচ্ছায় এবং অশালীনভাবে নিজ দেহ এমনভাবে প্রদর্শন করে, যা কোনো গৃহ বা দালানের ভিতরে থেকে হোক বা না হোক কোনো মহিলা দেখতে পায় বা স্বেচ্ছায় কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে কোনো নারীকে পীড়ন করে বা তার পথ রোধ করে বা কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে কোনো অশালীন ভাষা ব্যবহার করে, অশ্লীল আওয়াজ, অঙ্গভঙ্গি বা মন্তব্য করে কোনো মহিলাকে অপমান বা বিরক্ত করে, তবে সেই ব্যক্তি ১ বৎসর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ডে অথবা ২ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ৭৫ ধারায়-

‘সর্ব সমাজে অশালীন বা উচ্ছৃঙ্খল আচরণের শাস্তি হিসেবে ৩ মাস মেয়াদ পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।’

১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ৩৫৪ ধারায় বলা হয়েছে-

যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর শালীনতা নষ্ট করার অভিপায় বা সে তদ্বারা তার শালীনতা নষ্ট করতে পারে জেনেও তাকে আক্রমণ করে বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ করে তা হলে সে ব্যক্তি ২ বৎসর পর্যন্ত যেন কোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে বা জরিমানাদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ৯ (খ) ধারায় বলা হয়েছে-

যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর বা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক ১০ বৎসর কিন্তু অন্যূন ৫ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯ ধারা অনুযায়ী- যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবেন। ধর্ষণ-পরবর্তী নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম করাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উহার অতিরিক্ত অন্যূন ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ২৯৪ ধারায় বলা হয়েছে-

যদি কোনো ব্যক্তি অন্যদের বিরক্তি সৃষ্টি করে কোনো প্রকাশ্য স্থানে কোনো অশ্লীল কার্যও করে অথবা কোনো প্রকাশ্য স্থানে বা তার সন্নিকটে কোনো অশ্লীল গান, গাঁথা, সংগীত বা পদাবলি গায়, আবৃত্তি করে বা উচ্চারণ করে তাহলে সে ব্যক্তি ৩ মাস পর্যন্ত যে কোনো ধরনের কারাদণ্ডে বা জরিমানাদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

কারা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়?

কিশোরী মেয়ে, শিশু, স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গামী ছাত্রীবৃন্দ, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত নারী শ্রমিকরা, বিভিন্ন অফিসে কর্মরত নারী কর্মচারী, কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, ডাক্তারসহ সকল স্তরের নারীরা। ইদানীং পাবলিক পরিবহনেও নারীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন।

ইভটিজিং বন্ধে কারা ভূমিকা রাখতে পারে-

 পরিবারের সদস্য ও একে অপরকে সচেতন করতে পারেন।

 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।

 কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীরা।

 রাস্তাঘাটে চলাচলকারী সাধারণ জনগণ।

 আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

 বিজ্ঞ আদালত।

 ভ্রাম্যমাণ আদালত।

 জনপ্রতিনিধি।

 সাংবাদিকসহ সব সচেতন মানুষ।

ইভটিজিং প্রতিরোধ-

১। ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

২। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লাসরুমে ইভটিজিং সম্পর্কে আলোচনা করা এবং নেতিবাচক বিষয় তুলে ধরা।

৩। গণমাধ্যমে ইভটিজিং উৎসাহিত হয় এ ধরনের বক্তব্য, বিজ্ঞাপন, নাটক কঠোরভাবে প্রচার না করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৪। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সচেতন ও কার্যকর করা।

৫। ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটলে ভিকটিমের পাশে সবাইকে দাঁড়ানো।

৬। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ইভটিজিং প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা।

ইভটিজিংয়ের শিকার হলে কি করবেন?

ইভটিজিংয়ের শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ডায়াল করলে পুলিশি সহায়তা পাবেন। আপনার আশপাশের র‌্যাব ব্যাটালিয়নে জানাতে পারেন। উপজেলা পার্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিতভাবে এবং সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত বা মৌখিকভাবে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। জেলাপর্যায়ে বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করতে পারেন। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকেও জানাতে পারেন। জবঢ়ড়ৎঃ ২ জঅই এই অঢ়ঢ়ং এ জানাতে পারেন। আশা করি ইভটিজিংয়ের প্রতিকার পাবেন। আসুন সবাই ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি। আমাদের কন্যা, জায়া ও জননীদের পথচলা নিরাপদ করায় সবাই এগিয়ে আসি।

লেখক: উপসচিব (র‌্যাবের আইন কর্মকর্তা)।

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:২৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮
৯৩২ Time View

ইভটিজিং প্রতিরোধ ও প্রতিকার

আপডেট সময় : ১০:২৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ইভটিজিং বলতে কি বুঝি?

ইভটিজিং বলতে সাধারণত কোনো নারী বা কিশোরীকে তার স্বাভাবিক চলাফেরা বা কাজকর্ম করা অবস্থায় অশালীন মন্তব্য করা, ভয় দেখানো, তার নাম ধরে ডাকা এবং চিৎকার করা, বিকৃত নামে ডাকা, কোনো কিছু ছুড়ে দেয়া, ব্যক্তিতে লাগে এমন মন্তব্য করা, যোগ্যতা নিয়ে টিটকারী করা, তাকে নিয়ে অহেতুক হাস্যরসের উদ্রেক করা, রাস্তায় হাঁটতে বাধা দেয়া, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা, ইঙ্গিতপূর্ণ ইশারা দেয়া, সিগারেটের ধোঁয়া গায়ে ছাড়া, উদ্দেশ্যেমূলকভাবে পিছু নেয়া, অশ্লীলভাবে প্রেম নিবেদন করা, উদ্দেশ্যেমূলকভাবে গান, ছড়া বা কবিতা আবৃত্তি করা, চিঠি লেখা, পথ রোধ করে দাঁড়ানো, প্রেমে সাড়া না দিলে হুমকি প্রদান ইত্যাদি ইভটিজিংয়ের মধ্যে পড়ে।

দণ্ডবিধি আইন, ১৮৬০-এর ৫০৯ ধারায় ইভটিজিং সম্পর্কে বলা হয়েছে- যদি কোনো কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে সে নারী যাহাতে শুনিতে পায় এমনভাবে কোনো কথা বলে বা শব্দ করে কিংবা সে নারী যাহাতে দেখিতে পায় এমনভাবে কোনো অঙ্গভঙ্গি করে বা কোনো বস্তু প্রদর্শন করে, কিংবা অনুরূপ নারীর গোপনীয়তা অনাধিকার লঙ্ঘন করে, তাহা হইলে সেই ব্যক্তি এক (১) বৎসর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে কিংবা অর্থদণ্ডে কিংবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ এর ৭৬ ধারায় ইভটিজিং বা উত্ত্যক্ততা বিষয়ে বলা হয়েছে-

যদি কেউ কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বা সেখান হতে দৃষ্টিগোচরে স্বেচ্ছায় এবং অশালীনভাবে নিজ দেহ এমনভাবে প্রদর্শন করে, যা কোনো গৃহ বা দালানের ভিতরে থেকে হোক বা না হোক কোনো মহিলা দেখতে পায় বা স্বেচ্ছায় কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে কোনো নারীকে পীড়ন করে বা তার পথ রোধ করে বা কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে কোনো অশালীন ভাষা ব্যবহার করে, অশ্লীল আওয়াজ, অঙ্গভঙ্গি বা মন্তব্য করে কোনো মহিলাকে অপমান বা বিরক্ত করে, তবে সেই ব্যক্তি ১ বৎসর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ডে অথবা ২ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ৭৫ ধারায়-

‘সর্ব সমাজে অশালীন বা উচ্ছৃঙ্খল আচরণের শাস্তি হিসেবে ৩ মাস মেয়াদ পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।’

১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ৩৫৪ ধারায় বলা হয়েছে-

যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর শালীনতা নষ্ট করার অভিপায় বা সে তদ্বারা তার শালীনতা নষ্ট করতে পারে জেনেও তাকে আক্রমণ করে বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ করে তা হলে সে ব্যক্তি ২ বৎসর পর্যন্ত যেন কোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে বা জরিমানাদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ৯ (খ) ধারায় বলা হয়েছে-

যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর বা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক ১০ বৎসর কিন্তু অন্যূন ৫ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯ ধারা অনুযায়ী- যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবেন। ধর্ষণ-পরবর্তী নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম করাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উহার অতিরিক্ত অন্যূন ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ২৯৪ ধারায় বলা হয়েছে-

যদি কোনো ব্যক্তি অন্যদের বিরক্তি সৃষ্টি করে কোনো প্রকাশ্য স্থানে কোনো অশ্লীল কার্যও করে অথবা কোনো প্রকাশ্য স্থানে বা তার সন্নিকটে কোনো অশ্লীল গান, গাঁথা, সংগীত বা পদাবলি গায়, আবৃত্তি করে বা উচ্চারণ করে তাহলে সে ব্যক্তি ৩ মাস পর্যন্ত যে কোনো ধরনের কারাদণ্ডে বা জরিমানাদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

কারা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়?

কিশোরী মেয়ে, শিশু, স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গামী ছাত্রীবৃন্দ, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত নারী শ্রমিকরা, বিভিন্ন অফিসে কর্মরত নারী কর্মচারী, কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, ডাক্তারসহ সকল স্তরের নারীরা। ইদানীং পাবলিক পরিবহনেও নারীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন।

ইভটিজিং বন্ধে কারা ভূমিকা রাখতে পারে-

 পরিবারের সদস্য ও একে অপরকে সচেতন করতে পারেন।

 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।

 কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীরা।

 রাস্তাঘাটে চলাচলকারী সাধারণ জনগণ।

 আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

 বিজ্ঞ আদালত।

 ভ্রাম্যমাণ আদালত।

 জনপ্রতিনিধি।

 সাংবাদিকসহ সব সচেতন মানুষ।

ইভটিজিং প্রতিরোধ-

১। ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

২। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লাসরুমে ইভটিজিং সম্পর্কে আলোচনা করা এবং নেতিবাচক বিষয় তুলে ধরা।

৩। গণমাধ্যমে ইভটিজিং উৎসাহিত হয় এ ধরনের বক্তব্য, বিজ্ঞাপন, নাটক কঠোরভাবে প্রচার না করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

৪। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সচেতন ও কার্যকর করা।

৫। ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটলে ভিকটিমের পাশে সবাইকে দাঁড়ানো।

৬। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ইভটিজিং প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা।

ইভটিজিংয়ের শিকার হলে কি করবেন?

ইভটিজিংয়ের শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ডায়াল করলে পুলিশি সহায়তা পাবেন। আপনার আশপাশের র‌্যাব ব্যাটালিয়নে জানাতে পারেন। উপজেলা পার্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিতভাবে এবং সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত বা মৌখিকভাবে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। জেলাপর্যায়ে বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করতে পারেন। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকেও জানাতে পারেন। জবঢ়ড়ৎঃ ২ জঅই এই অঢ়ঢ়ং এ জানাতে পারেন। আশা করি ইভটিজিংয়ের প্রতিকার পাবেন। আসুন সবাই ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি। আমাদের কন্যা, জায়া ও জননীদের পথচলা নিরাপদ করায় সবাই এগিয়ে আসি।

লেখক: উপসচিব (র‌্যাবের আইন কর্মকর্তা)।