ঢাকা ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার ১০ কোটি টাকার সরঞ্জাম পাহারায় ব্যয় ৪৬ কোটি

Reporter Name

ঢাকাঃ

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্পে হরিলুট চলছে। এর মধ্যে নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস) প্রকল্পে ১০ কোটি টাকা মূল্যের কমপ্রেসড এয়ার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (সিএএমএস) সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। রক্ষণাবেক্ষণের নামে ওই টাকার বেশির ভাগই লুটপাট হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে কমিটির বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। আবার মূল কাজ শুরুর আগেই ‘টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল)’ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েও কমিটিতে প্রশ্ন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেইস ও সুফল প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসছে। এর আগে কেইস প্রকল্প নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। দেখা যায়, প্রকল্পের কাজের নামে বিদেশ ভ্রমণ, গাড়িবিলাস, পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন কাজকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্পের টাকা বেশির ভাগই লুটপাট করা হয়েছে। ২০০৯ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের জুনে। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৯ সাল নির্ধারিত হয়। সর্বশেষ ২২১ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকার এ প্রকল্পের মেয়াদ নতুন করে বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত প্রতিবেদনে প্রকল্পের খাতওয়ারি ব্যয়ের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কেইস প্রকল্পের মূল কাজের থেকে আনুষঙ্গিক ব্যয় বেশি। এর মধ্যে সিএএমএস সরঞ্জাম ক্রয়ে চার কোটি ৫২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা এবং সিএএমএস ও প্রকল্প ভবনের জন্য সোলার প্যানেল ক্রয়ে পাঁচ কোটি ৭১ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আর ওই সব সিএএমএস সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি ১৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই প্রকল্পে সাধারণ খরচ (স্থানীয় যাতায়াত, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ) ব্যয় ধরা হয়েছে আট কোটি ৫১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। আর গাড়ি ও যাতায়াত নামে আরেকটি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৬১ লাখ চার হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রকল্পে মিডিয়া ক্যাম্পেইনে সাত কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার, প্রশিক্ষণে এক কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার এবং গবেষণা সরঞ্জাম কেনা বাবদ চার কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো দেখা গেছে, কেইস প্রকল্পে একই ব্যক্তি ঘুরেফিরে প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকসহ (পিডি) প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ২৯৯ ব্যক্তি অবৈধভাবে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। সিটি মেয়র, কাউন্সিলর, সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওসি থেকে কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা এ তালিকায় রয়েছেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের ওই প্রকল্প শেষ না হতেই এবার ‘সুফল’ প্রকল্পের নামে বিদেশ সফর শুরু হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, প্রকল্পের টাকায় প্রশিক্ষণের নামে কর্মকর্তারা বিদেশ সফর করেছেন। দেখা যায়, যাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে তাঁরা প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই অবসরে চলে গেছেন। ফলে প্রকল্পের উন্নয়নে তাঁদের প্রশিক্ষণ কোনোই কাজে লাগেনি। এটা কেইস প্রকল্পে হয়েছে। আবার সুফল প্রকল্পে এসেও তেমনটি দেখা যাচ্ছে। কমিটির পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং প্রকল্প এলাকায় বননির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প আয়বর্ধক কাজের সুযোগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নেওয়া হয় সুফল প্রকল্প। এর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ জুলাই। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের ৩০ জুন। দেশের আটটি বিভাগের ১৭টি বন বিভাগের ২৮ জেলায় ৬০০ গ্রামে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এখনো সেই গ্রামগুলো চিহ্নিত করা হয়নি। অথচ প্রকল্পের কর্মকর্তারা এরই মধ্যে বিদেশে প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে ১১৩ কোটি টাকা লুটপাটের আয়োজন চলছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দাবি করেছেন।

সূত্র জানায়, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওই দুই প্রকল্পের প্রতিবেদন নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। গত শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে এ নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা। কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক থেকে তদন্তসাপেক্ষ ওই দুটি প্রকল্পে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কমিটির সদস্য রেজাউল করিম বাবলু বলেন, প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রতিবেদনেই অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠেছে। এভাবে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সরকারের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। এই কারণে প্রকল্পের কাজে মনিটরিং জোরদার করতে বলা হয়েছে ।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৩:১০:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
৪২৭ Time View

এবার ১০ কোটি টাকার সরঞ্জাম পাহারায় ব্যয় ৪৬ কোটি

আপডেট সময় : ০৩:১০:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঢাকাঃ

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্পে হরিলুট চলছে। এর মধ্যে নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস) প্রকল্পে ১০ কোটি টাকা মূল্যের কমপ্রেসড এয়ার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (সিএএমএস) সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। রক্ষণাবেক্ষণের নামে ওই টাকার বেশির ভাগই লুটপাট হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে কমিটির বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। আবার মূল কাজ শুরুর আগেই ‘টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল)’ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েও কমিটিতে প্রশ্ন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেইস ও সুফল প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসছে। এর আগে কেইস প্রকল্প নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। দেখা যায়, প্রকল্পের কাজের নামে বিদেশ ভ্রমণ, গাড়িবিলাস, পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন কাজকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্পের টাকা বেশির ভাগই লুটপাট করা হয়েছে। ২০০৯ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের জুনে। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৯ সাল নির্ধারিত হয়। সর্বশেষ ২২১ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকার এ প্রকল্পের মেয়াদ নতুন করে বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত প্রতিবেদনে প্রকল্পের খাতওয়ারি ব্যয়ের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কেইস প্রকল্পের মূল কাজের থেকে আনুষঙ্গিক ব্যয় বেশি। এর মধ্যে সিএএমএস সরঞ্জাম ক্রয়ে চার কোটি ৫২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা এবং সিএএমএস ও প্রকল্প ভবনের জন্য সোলার প্যানেল ক্রয়ে পাঁচ কোটি ৭১ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আর ওই সব সিএএমএস সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি ১৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই প্রকল্পে সাধারণ খরচ (স্থানীয় যাতায়াত, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ) ব্যয় ধরা হয়েছে আট কোটি ৫১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। আর গাড়ি ও যাতায়াত নামে আরেকটি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৬১ লাখ চার হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রকল্পে মিডিয়া ক্যাম্পেইনে সাত কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার, প্রশিক্ষণে এক কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার এবং গবেষণা সরঞ্জাম কেনা বাবদ চার কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো দেখা গেছে, কেইস প্রকল্পে একই ব্যক্তি ঘুরেফিরে প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকসহ (পিডি) প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ২৯৯ ব্যক্তি অবৈধভাবে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। সিটি মেয়র, কাউন্সিলর, সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওসি থেকে কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা এ তালিকায় রয়েছেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের ওই প্রকল্প শেষ না হতেই এবার ‘সুফল’ প্রকল্পের নামে বিদেশ সফর শুরু হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, প্রকল্পের টাকায় প্রশিক্ষণের নামে কর্মকর্তারা বিদেশ সফর করেছেন। দেখা যায়, যাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে তাঁরা প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই অবসরে চলে গেছেন। ফলে প্রকল্পের উন্নয়নে তাঁদের প্রশিক্ষণ কোনোই কাজে লাগেনি। এটা কেইস প্রকল্পে হয়েছে। আবার সুফল প্রকল্পে এসেও তেমনটি দেখা যাচ্ছে। কমিটির পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং প্রকল্প এলাকায় বননির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প আয়বর্ধক কাজের সুযোগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নেওয়া হয় সুফল প্রকল্প। এর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ জুলাই। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের ৩০ জুন। দেশের আটটি বিভাগের ১৭টি বন বিভাগের ২৮ জেলায় ৬০০ গ্রামে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এখনো সেই গ্রামগুলো চিহ্নিত করা হয়নি। অথচ প্রকল্পের কর্মকর্তারা এরই মধ্যে বিদেশে প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে ১১৩ কোটি টাকা লুটপাটের আয়োজন চলছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দাবি করেছেন।

সূত্র জানায়, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওই দুই প্রকল্পের প্রতিবেদন নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। গত শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে এ নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা। কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক থেকে তদন্তসাপেক্ষ ওই দুটি প্রকল্পে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কমিটির সদস্য রেজাউল করিম বাবলু বলেন, প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রতিবেদনেই অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠেছে। এভাবে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সরকারের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। এই কারণে প্রকল্পের কাজে মনিটরিং জোরদার করতে বলা হয়েছে ।