সবুজদেশ ডেক্সঃ মেহেদী হাসান বাকের নামের এক যুবককে ধরতে গিয়ে না পেয়ে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর ওপর নির্যাতন, ভাঙচুর, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগে লস্কর লাজুল ইসলাম ওরফে জিয়া নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা জিয়া মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বুধবার দুপুরে বাকের হোসেনের স্ত্রী মারিয়া খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ২য় আদালতের বিচারক মো. হাদিউজ্জামানের আদালতে এসআই জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন মেহেরপুরের পুলিশ সুপার। তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি ওবাইদুর রহমান ও ডিআইও ওয়ান ফারুক হোসেন। মামলার বিবরণে বাকেরের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মারিয়া খাতুন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আমি বাড়িতে একা ছিলাম এবং দুপুরের রান্না করছিলাম। এমন সময় এসআই জিয়া আরও দুইজন পুলিশ কনস্টেবল নিয়ে বাড়ির দরজায় ডাকাডাকি শুরু করেন। বাড়িতে কেউ নাই বলাতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে টিনের দরজায় লাথি মারলে দরজা খুলে যায়। তখন তিনি ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় গালিগালাজ করতে করতে ঘরের মধ্যে ঢুকে ঘরের আসবাবপত্র তছনছ শুরু করেন। চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর এবং আলামারিতে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করেন। পরে রান্না ঘরে মোটরসাইকেল দেখে চাবি চান। চাবি দিতে না চাইলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং বিভিন্ন হুমকি দেন। একপর্যায়ে চাবি দিলে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের মোটরসাইকেলটি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এবং বলেন টাকা নিয়ে গিয়ে মোটরসাইকেল ফেরত দেবেন। এ ব্যাপারে মেহেদী হাসান বাকের বলেন, সোহেল নামের এক অটোচালকের সঙ্গে পূর্বের একটি বিরোধ থেকে থানায় আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই জিয়া আটক করতে আসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অপরাধ করলে আমি করেছি। আমার স্ত্রী কোনো অপরাধ করেনি। আমার বাড়ি ঘর কোনো অপরাধ করেনি। আমার বাবাও একজন পুলিশ কর্মচারী। পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরনের ব্যবহার তিনি করতে পারেন না। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। প্রতিবেশী আনজিরা খাতুন বলেন, তিন পুলিশ এসে বাড়ির ভেতরে সবকিছু ভেঙে মোটরসাইকেলটি নিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় আজে বাজে গালিগালাজ করেছে। বাকেরের গর্ভবতী বউকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই লস্কর লাজুল ইসলাম জিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তবে তার বাড়ি থেকে একটি লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছি। মোটরসাইকেল কেন নিয়ে আসলেন এমন প্রশ্নে কোনো জবাব দেননি তিনি। এ ব্যাপারে মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পুলিশ প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রসঙ্গত, মেহেদী হাসান বাকেরের বাবা সামসুল ইসলাম একজন পুলিশের কনস্টেবল। তিনি রংপুরে কর্মরত রয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here