ফারুক নোমানী:

ইসলামপূর্ব যুগে কন্যা সন্তান:

আজকের শিশু কন্যাটি আগামী দিনের নারী। কারো মা, কারো বোন আর কারো বা স্ত্রী। জাহেলী যুগে আরবে এই নারীকে ভাবা হতো সৃষ্টির সবচে’ নিকৃষ্ট প্রাণী। সেই আইয়্যামে জাহেলিয়্যাত বা মূর্খতার যুগে নারীর ছিল না কোন মান-মর্যাদা, সম্মান ও অধিকার। তাকে মনে করা হতো শুধুই ভোগের পণ্য। সকল পাপের উৎস ও সকল অনিষ্ঠের মূল। তার ছিল না কোন হক বা পাওনা, মমতা ও ভালোবাসার বন্ধন। সমাজ তাকে চিনতো পুরুষের সেবাদাসী হিসেবেই। এর বাইরে কোন প্রাপ্য ও মর্যাদা কল্পনা করাই যেত না। ‘সকল অনিষ্টের মূল’ এই নারীর প্রতি চলতো অমানাবিক সব নির্যাতন ও নিপীড়ন। জুলুম-অত্যাচার। সে সময়ের লোকেরা নারীকে অভিশপ্ত ভাবতো। তাদের চোখে সবচে’ জঘন্য ও নিকৃষ্টতম ছিল এই নারীরা। আর চূড়ান্ত দুর্ভাগ্যের প্রতীক মনে করতো কন্যা সন্তানের জন্মকে। সমাজের চোখে নিকৃষ্ট ছিল কন্যার জনক। আপমান ও লজ্জায় সে থাকতো আত্মগোপন করে। চলতো মানুষ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে। কন্যা সন্তানকে তারা এতটাই নিকৃষ্ট ভাবতো যে, চরম শত্রুর জন্য কন্যা কামনা করতো, এমনকি আল্লাহর প্রতি তাদের চরম বিদ্বেষের প্রকাশ হিসেবে আল্লাহর জন্যও তারা কন্যার সম্পর্ক সাব্যস্ত করতো। অথচ তা তাদের নিজেদের বেলায় ঘটলে তাদের অবস্থা কেমন হতো কুরআনুল কারীমে তার স্পষ্ট বিবরণ রয়েছে। ‘তারা রহমান আল্লাহর জন্য যে কন্যা সন্তানের বর্ণনা করে, যখন তাদের কাউকে তার সংবাদ দেয়া হয়, তখন তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং ভীষণ মনস্তাপ ভোগ করে।’ (সূরা যুখরুফ: ১৭)।

আরো স্পষ্ট করে অন্যত্র বলা হয়েছে। ‘যখন তাদের কাউকে কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তার মুখ কালো হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দিবে, না তাকে মাটির নীচে পুঁতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।’ (সূরা নাহল: ৫৮-৫৯)।

সম্পদের সবটুকু অংশই দিয়ে দেয়া হতো পুত্র সন্তানকে। চরমভাবে বঞ্চিত করা হতো হতভাগা কন্যাকে। পিতার রেখে যাওয়া বিত্ত বৈভবে আদর আহ্লাদ আর পরম যত্মে বেড়ে উঠতো পুত্র সন্তানটি। আর কন্যাটির ভাগ্যে জুটতো যতসব অবজ্ঞা, উপেক্ষা, লাঞ্চনা ও বঞ্চনা। মেয়েরা পেত না বাবার সোহাগ, তার মধুমাখা হাসিমুখ। তিরষ্কার অবহেলাকে সাথী করে মানবেতর জীবন নিয়ে বেড়ে উঠতো এক একটি কন্যা। ইতিহাসের সকল হিংস্রতা, বর্বরতাকে হার মানাতো ততকালীন জাহেলী যুগের কুপ্রথা ও পিতার নিষ্ঠুর আত্মমর্যাদাবোধ। চাঁদের মতো ফুটফুটে , ফুটন্ত ফুলের মতো কোমল নিরীহ নিষ্পাপ এই কন্যাকে শুধু কন্যা হিসেবে জন্ম নেয়ার অপরাধেই হতে হতো পাষণ্ড পিতার হাতে আরবের পাথুরে ভূমিতে জীবন্ত প্রোথিত। সে সময়ে মায়েরাই ছিলেন যখন নির্যাতনের লক্ষবস্তু তখন কীভাবে বাঁচাবেন নাড়িছেঁড়া নয়নের মনিকে। শুধু নির্জনে অশ্রুপাতই ছিলো তাদের পুঁজি। এ কুপ্রথার বিরুদ্ধে কোন কথা বলার ছিলো না তাদের কোন সুযোগ। কোন অধিকার।

নির্দয় পিতার নির্মম মনে যখন কন্যার ব্যাপারে আত্মমর্যাদাবোধ জেগে উঠতো তখন মাকে বলতো মেয়েকে সাজিয়ে দাও আত্মীয় বাড়ি নিয়ে যাব। পাষাণ পিতার মুখে ‘আত্মীয় বাড়ি’ শুনে নিশ্চয় মায়ের বুকের ভেতরটা হাউমাউ করে কেঁদে উঠতো। তার মন হয়ত ডেকে বলতো কলিজার টুকরোকে জনমের মতো বিদায় দেয়ার সময় চলে এসেছে। মায়ের চোখ ফাটা জল আর সন্তানের গোসলের পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যেত। হতভাগা মা তার সামর্থ্যকে একত্রিত করে কন্যাকে নিজহাতে গুছিয়ে বাবার কাছে সপে দিয়ে আঁচলে মুখ লুকাতেন। এ মায়ের বুকফাটা আহাজারিতে বাতাস ভারী হলেও নরম হতো না পিতা নমক এই পাষণ্ডের হৃদয়। অবুঝ কন্যার হাত ধরে পিতা মরুভূমিতে এসে একটি গর্ত খুঁড়তো। ‘এখানে কী হবে বাবা’ বলে অবুঝ মেয়েটি বারবার জিজ্ঞাসা করলেও থাকতো না মুখে তার কোন কথা। গর্তের গভীরতা পরিমাণ মতো হওয়ার পর এই জালেম পিতা নিজহাতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিত গর্তের ভেতরে নিজের কন্যাকে। বাঁচার সবটুকু অনুনয় নিয়ে শরীরের শেষ শক্তি দিয়ে কন্যার বাবা …বাবা… চিৎকারেও একটুও গলতো না তার শক্ত দিল। পাথর আর মাটি চাপা দিয়ে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতো মরুর বুকে অবুঝ কন্যার কণ্ঠের শেষ বাবা ডাকটিকেও। এ আওয়াজে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠতো, কেঁপে উঠতো আল্লাহর আরশ কুরসি পর্যন্ত। কিন্তু কন্যার জীবনভিক্ষার সেই আহাজারি পৌঁছতো না জাহেলী যুগের নির্দয় পিতার কার্ণকুহরে। আর যারা অপমান সহ্য করে কন্যাকে জীবিত রাখতো, তারা একটি পশমী জামা পরিয়ে পশু চরাতে মরুভূমিতে পাঠিয়ে দিতো, এভাবেই সে বেড়ে উঠতো।

পাঠক, এই ছিলো ইসলামের আগমনপূর্ব আরবের দৃশ্বপট। কন্যার প্রতি তাদের আচরণ। সমাজের ব্যবহার। আরবের অধিকাংশ গোত্র কন্যা সন্তানকে এভাবে জীবন্ত কবর দিত। রাবিয়াহ, কিন্দা ও তামীম গোত্র আরবে এ ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ ছিল। (বুলূগুল আরব ৩/৪২)। তারা দারিদ্রতা ও অভাবের ভয়ে এটা করত। তবে অধিকাংশ ইতিহাসবিদের মত হলো, আরবের প্রায়ই সকল গোত্রই এ কাজ জড়িত ছিল (প্রগুক্ত :৪৩, উসদুল গাবাহ ৪/২২০)।

কায়েস ইবনু আসিম নামক এক ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পর রাসূূলুুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, আমি নিজ হাতে আমার আটটি মেয়েকে জীবিত মাটির নীচে দাফন করেছি। (তাফসীরে ইবনে কাসির ৪/২৯৯৩) এ ব্যক্তির নিজহাতে কন্যাহত্যার ভয়ংকর বিবরণ তার মুখেই বর্ণিত হয়েছে ইতিহাসের বিভিন্ন গ্রন্থে। দেখুন- আলওয়াফী বিলওয়াফাত ২৪/২১৫।

পাঠক, এভাবেই সেই অন্ধকার যুগে নির্মম হত্যার শিকার হতো কন্য সন্তানরা। পিতার হাতেই জীবন্ত প্রোথিত হতে হতো শুধু কন্যা হিসেবে জন্ম নেয়ার অপরাধে। তবে এ অন্ধকারের মাঝেও কিছু ভালো মানুষ ছিলেন, যাঁরা নিজেদের সবটুকু সম্পদ উজাড় করে দিতেন কন্যা সন্তানদের বাঁচাতে। তাঁদেরই একজন ছিলেন সা’সা’। তিনি মুসলমান হওয়ার পর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, আমি মূর্খতার যুগে তিনশ’ ষাটটি মেয়েকে জীবন্ত প্রোথিত করা থেকে রক্ষা করেছি। প্রত্যেকটি মেয়ের পরিবর্তে আমাকে তিনটি করে উট দিতে হয়েছে। (তাফসীরে রুহুল মা’য়ানী ১৫/ ২৫৭, তারিখুল মাদীনা ২/৫৩২)

ইসলামে কন্যা সন্তান:

প্রিয় পাঠক, কন্যা সন্তানের প্রতি আরবের জাহিলী সমাজের নিকৃষ্ট এই অচরণকে শুধু ইসলাম বন্ধই করেনি বরং তাদের প্রতিপালনের বিনিময় জান্নাত বলে ঘোষণা করেছে। আর যে মায়ের গর্ভে কন্যা জন্ম নিবে সে মাকেও সম্মানিত করেছে। এ সম্পকেই ওয়াছিলাহ ইবনুল আসকা’ রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন: নারী ভাগ্যবতী হওয়ার প্রমাণ তার প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়া। এর কারণ আল্লাহ তা‘য়ালা বলেছেন- ‘তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন আর যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দেন। (মাকারিমুল আখলাক ৬৪৬, কানযুল উম্মাল ৪৬০৪৬, জামিউল আহাদীস : সুয়ুতী ৪১২৯৮)।

আলী রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সা. বলেছেন: কন্যা সন্তান হলো উত্তম সন্তান। কেননা তারা হচ্ছে বিনম্র ও মিষ্টভাষী। এছাড়া তারা পিতা-মাতার খেদমতের জন্য সদাসর্বদা প্রস্তুত থাকে এবং তারা মায়া-মমতাময়ী, স্নেহময়ী, বিনয়ী ও বরকতময়। (মুসনাদে ফেরদাউস ৪/২৫৫)

কন্যা ও জান্নাত:

কন্যা সন্তানের মর্যাদার ঘোষণাই শুধু ইসলাম দেয়নি, আরো দিয়েছে আদর-সোহাগ, মায়া-মমতা, প্রীতি ও ভালোবাসা দিয়ে কন্যাকে লালন-পালনকারী পিতার জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাতের নিশ্চয়তা। দেখুন উকবা ইবনু আমের রা. বর্ণিত হাদীস,নবীজী সা. বলেছেন: যার তত্ত্বাবধানে তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে,আর সে তাদের লালন-পালনের কষ্ট সহ্য করেছে এবং সামার্থ্য অনুযায়ী তাদের পানাহার ও পোষাক পরিধানের ব্যবস্থা করেছে, কিয়ামতের দিন সে কন্যা সন্তানেরা তার জন্য জাহান্নামের পথে প্রতিবন্ধক ও বাধা হয়ে দাঁড়াবে। (ইবনু মাজাহ ২৬১)।

আয়শা রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন: আল্লাহ তা‘য়ালা যাকে কন্যা সন্তান দিয়ে পরীক্ষায় অবতীর্ণ করেছেন, আর সে কন্যাদের ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করেছে, কিয়ামতের দিন এ কন্যাগণ জাহান্নামের আগুন হতে তার নাজাতের কারণ হবে। (তিরমিযী ১৯১৩)।

আরো দেখুন, আয়শা রা. বলেন, আমার নিকট একবার এক মিসকিন মহিলা আসলো, যার সাথে ছিল তার দু’টি কন্যা। আমি তাদের খাওয়ার জন্য তিনটি খেজুর দিলাম। তখন সে মহিলা প্রত্যেক কন্যাকে একটি করে খেজুর দিল এবং নিজে একটি খাওয়ার জন্য মুখের নিকট নিল। তখন তার কন্যাদ্বয় সে খেজুরটিও চাইল। তখন মা খেজুরটিকে দু’টুকরো করে দ’জনের ভেতর ভাগ করে দিলো। আয়শা রা. বলেন, আমি পরে এ ঘটনা নবীজী সা. কে জানালাম, তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ এ মেয়েদের কারণে তার জন্য জান্নাত অবধারিত করে দিয়েছেন এবং তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন। (সহীহ বুখারী ১৪১৮, শুয়াবুল ঈমান ৮৩০৪)।

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা. বলেন, নবীজী সা. বলেছেন: যার গৃহে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলো, আর সে তাকে কষ্ট দেয়নি, তার উপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার উপর প্রাধান্যও দেয়নি, তাহলে সে কন্যার কারণে আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ( মুসনাদে আহমাদ ১৯৫৭)।

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রা. বলেন- রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: যার তিন জন কন্যা সন্তান হবে আর সে তাদের লালন-পালন করে, তাদের প্রতি মমতা প্রদর্শন করে এবং তাদের ভার বহন করে তাহলে তার বেহেশত নিশ্চিত। প্রশ্ন করা হলো – হে আল্লাহর রাসূল! যদি দুইজন হয়? বললেন: দুইজন হলেও। জাবের বলেন: কারো কারো ধারণা, যদি কেউ বলতো -একজন হলে? তাহলে নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ সা. বলতেন: একজন হলেও। (ইবনু মাজাহ ৩৬৬৯, আহমাদ ৮৪২৫, তাবরানী আওসাত ৪৭৬০, মাজমাউয যাওয়াইদ ১৩৪৯০ সহীহাহ ২৯৪, ১০২৭)।

আনাস রা. থেকে বর্ণিত- নবীজী সা. বলেছেন: আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তির তিনজন কন্যা কিংবা তিনজন বোন থাকবে আর সে তাদের দেখাশোনা ও ব্যয়ভার বহন করবে- সাবালক হওয়া পর্যন্ত সে আমার সাথে এইভাবে বেহেশতে থাকবে- বলে তিনি বৃদ্ধা ও তর্জনী এক সাথে করে দেখান। ( তাবরানী আওসাত ৫৪৩২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১৩৪৯৫)।

পাঠক, এ সমস্ত হাদীস দ্বারা স্পষ্ট হলো কন্যা সন্তানকে যেই লালন-পালন করুক তাকেই দেয়া হবে এই পুরষ্কার। তিনি পিতা, মাতা, ভাই বা অন্যকেউ হতে পারেন। শুধু কন্যার কারণেই তাকে এভাবে সম্মানিত করেছে ইসলাম। এবার দেখুন নবীজী নিজে কেমন ব্যবহার করতেন কন্যাদের সাথে। উম্মুল মুমিনীন আয়শা রা. বলেন। তিনি বলেন: কথাবার্তায় রাসূলুল্লাহর সাথে ফাতেমার মতো এমন মিল আমি আর কারো মধ্যে দেখিনি। ফাতেমা যখন রাসূলের সাক্ষাতে আসতো নবীজী তার দিকে এগিয়ে যেতেন। তার কপালে চুমু খেতেন। স্বাগত জানাতেন। তার হাত ধরে আপন আসনে বসাতেন। ফাতেমাও ছিলো এমনই। নবীজী তার সাক্ষাতে গেলে ফাতেমা এগিয়ে আসত। তাঁকে চুমু খেতো এবং তাঁর হাত ধরে বসাতো। (ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ শামী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ: দারুল কুতুব বৈরুত: ১১:৪৪)।

অনেকে পুত্র সন্তানকে কন্যার উপর প্রাধান্য দেন। ইসলাম এটাকে নিষেধ করেছে। আনাস রা. বলেন-এক ব্যক্তি নবীজীর কাছে উপবিষ্ট ছিল। এরই মধ্যে তার এক ছেলে এলো। লোকটি তাকে চুমু খেলো এবং কোলে বসালো। একটু পরেই এলো তার ছোট্ট কন্যা। লোকটি তাকে সামনে বসিয়ে দিলো। তখন নবীজী বললেন- তুমি তাদের উভয়ের সাথে একই রকম আচরণ করলে না কেন? (শরহু মায়ানিল আসার ৫৮৪৭, মুসনাদে বাযযার ৬৩৬১ কাশফুল আসতার ১৮৯৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ১৩৪৮৯, সহীহাহ ২৯৯৪, ২৮৮৩)।

আসুন জান্নাত কিনে নিই:

কন্যা সন্তানকে মানুষের মত মানুষ বানিয়ে পিতা জান্নাতের মালিক হতে পারেন। ইসলাম সেই ঘোষণাই দিয়েছে। তবে অতি বাস্তব সত্য হলো সভ্যতার এই যুগেও কন্যা সন্তান অবহেলিত। প্রাচীন বর্বরতার যুগে তাদেরকে হত্যা করা হতো জন্মের পর আর এখন তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই। মায়ের পেটে থাকতেই। অনেক পরিবারে মাকে নির্মমভাবে নির্যাতিত হতে হচ্ছে শুধু কন্যা জন্ম দেয়ার অপরাধে। মনে রাখতে হবে, কন্যা আপনার জান্নাত। আপনার জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায়। তাই আসুন, কন্যা সন্তানকে হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলে জান্নাত কিনে নিই।

লেখক: ইমাম, মেইন বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ কালীগঞ্জ।
মুহাদ্দিস, বলিদাপাড়া মাদরাসা, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here