কমলাপুরে যুবলীগ নেতা খালেদের ‘টর্চার সেল’, ২টি ইলেকট্রিক শক মেশিন
ঢাকাঃ
রাজধানীর ৬৪/৬৮ ইস্টার্ন কমলাপুর কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে র্যাব। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার কমলাপুরের অফিসে অভিযান চালিয়ে এই টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া যায়।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের উপপরিচালক মেজর হুসাইন রইসুল আজম মনি বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তার অফিসে অভিযান চালিয়ে ইলেকট্রিক শক মেশিন ২টি, লাঠি ৫টি, অস্ত্রের তেলের বোতল ২টি, ইয়াবা ১৯০ পিস, বিয়ার ৫ ক্যান, সিসা ৭০০ গ্রাম, সিসা খাওয়ার কয়লা দেড় কেজি, মোবাইল ৩টি, ল্যাপটপ ২টি ও নগদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।’
র্যাব সূত্র জানিয়েছে, ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে গুলশান থেকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের পরপরই তার কমলাপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। চাঁদা না দিলে এই কার্যালয়ে এনে মানুষকে নির্যাতন করা হতো।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, এই ঘটনায় মতিঝিল থানায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে, রাজধানীর ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবে ‘ক্যাসিনো’ চালানোর অভিযোগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর গুলশানের নিজ বাসা থেকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এসময় তার বাসা থেকে একটি অবৈধ পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি, ২০১৭ সালের পর নবায়ন না করা একটি শটগান ও ৫৮৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে গুলশান থানায় নেয় র্যাব। সেখান থেকে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। অস্ত্র মামলায় ৪ দিন এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় খালেদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা দুটি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি, উত্তর) স্থানান্তর করা হয়েছে। ডিবি কার্যালয়েই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ১৪ সেপ্টেম্বর যুবলীগের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের চার দিনের মাথায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার চারটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব। ক্যাসিনোতে অভিযান চলাকালেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়াকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। খালেদসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় পরিচালনাধীন চারটি ক্যাসিনো সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। অভিযানে মোট ১৮২ জনকে আটকের পর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে বিপুল অংকের টাকা, মদ ও বিয়ারসহ জুয়া খেলার বিভিন্ন সরঞ্জাম।