ঢাকা ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি, এএসআই ক্লোজড

Reporter Name

অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এএসআই কামরুজ্জামানকে ক্লোজড করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে তাকে সিলেট পুলিশ লাইন থেকে ক্লোজড করা হয়।

জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জানাইয়া মশুলার বাসিন্দা আশিক আলীর মেয়ে বিশ্বনাথ ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর (১৯) পরিবারের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় একটি অভিযোগ দেন তার সৎ মা মনোয়ারা বেগম। ওই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এএসআই কামরুজ্জামান ওই কলেজছাত্রী, তার ছোট বোন ও মায়ের সাথে আশালিন আচরণ করেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বখাটেদের দিয়ে তাকে ধর্ষণের হুমকি দেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কলেজছাত্রী ওই তরুণীর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর বাবার কাছ থেকে কিছু জমি ক্রয় করে একই বাড়িতে বসবাস করছিলেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে সৎ মায়ের সাথে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া চলে আসছিল তাদের। সৎ মায়ের দেয়া অভিযোগের তদন্ত করতে ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় সাদা পোশাকে তাদের বাড়িতে যান এএসআই কামরুজ্জামান। এসময় বাড়িতে ছিলেন ওই তরুণী, তার ছোটবোন (১৬) ও মা (৪৬)। স্থানীয় কিছু বখাটেদের নিয়ে কামরুজ্জামান প্রথমেই অশ্লীল গালি দিয়ে বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করেন। উচ্চ আওয়াজে অকথ্য ভাষায় সবাইকে গালি দেন। কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি চড়াও হন কলেজছাত্রী ওই তরুণীর উপর। একই সঙ্গে সঙ্গীয় পুলিশ কন্সটেবলরাও লাঠি নিয়ে তেড়ে আসেন তার দিকে। পরে তার মা ও বোনের ঘরে কামরুজ্জামান প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেন ওই তরুণী।

এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘তোকে বিবস্ত্র করে পেটাবো, সঙ্গীয় ছেলেদের দিয়ে ধর্ষণ করাবো। তোরা নষ্টা মেয়ে মানুষ। আমি তোর  এমন অবস্থা করব আর কেউ তোকে বিয়ে করবে না। আমার বিরুদ্ধ স্বাক্ষী হবে না কেউ। আমি যেই সেই দারোগা নয়! থানার সব পুলিশ আমার কথায় ওঠে বসে। তোরা দেখবি কামরুজ্জামানের হাত কতো লম্বা।’

এসময় হট্টগোল শুনে ওই কলেজছাত্রীর মা ও বোন ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাদের সাথেও অভদ্র আচরণ করেন কামরুজ্জামান। সঙ্গীয় বখাটে ছেলেদের বলে যান তারা যেন এই তরুণীদের ভালোভাবে ঠিক করে দেয়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে এএসআই কামরুজ্জামানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি যা বলেছি ওদের ভালোর জন্যেই বলেছি। ওদের শাসিয়েছি মাত্র।’

বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, রাতে কামরুজ্জামানকে ক্লোজড করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা হলে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ওসমানীনগর সার্কেল) কামরুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

About Author Information
Update Time : ১০:২২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
৮৮০ Time View

কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি, এএসআই ক্লোজড

Update Time : ১০:২২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ থানা পুলিশের এএসআই কামরুজ্জামানকে ক্লোজড করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে তাকে সিলেট পুলিশ লাইন থেকে ক্লোজড করা হয়।

জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জানাইয়া মশুলার বাসিন্দা আশিক আলীর মেয়ে বিশ্বনাথ ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর (১৯) পরিবারের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় একটি অভিযোগ দেন তার সৎ মা মনোয়ারা বেগম। ওই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এএসআই কামরুজ্জামান ওই কলেজছাত্রী, তার ছোট বোন ও মায়ের সাথে আশালিন আচরণ করেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বখাটেদের দিয়ে তাকে ধর্ষণের হুমকি দেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কলেজছাত্রী ওই তরুণীর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর বাবার কাছ থেকে কিছু জমি ক্রয় করে একই বাড়িতে বসবাস করছিলেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে সৎ মায়ের সাথে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া চলে আসছিল তাদের। সৎ মায়ের দেয়া অভিযোগের তদন্ত করতে ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় সাদা পোশাকে তাদের বাড়িতে যান এএসআই কামরুজ্জামান। এসময় বাড়িতে ছিলেন ওই তরুণী, তার ছোটবোন (১৬) ও মা (৪৬)। স্থানীয় কিছু বখাটেদের নিয়ে কামরুজ্জামান প্রথমেই অশ্লীল গালি দিয়ে বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করেন। উচ্চ আওয়াজে অকথ্য ভাষায় সবাইকে গালি দেন। কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি চড়াও হন কলেজছাত্রী ওই তরুণীর উপর। একই সঙ্গে সঙ্গীয় পুলিশ কন্সটেবলরাও লাঠি নিয়ে তেড়ে আসেন তার দিকে। পরে তার মা ও বোনের ঘরে কামরুজ্জামান প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেন ওই তরুণী।

এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘তোকে বিবস্ত্র করে পেটাবো, সঙ্গীয় ছেলেদের দিয়ে ধর্ষণ করাবো। তোরা নষ্টা মেয়ে মানুষ। আমি তোর  এমন অবস্থা করব আর কেউ তোকে বিয়ে করবে না। আমার বিরুদ্ধ স্বাক্ষী হবে না কেউ। আমি যেই সেই দারোগা নয়! থানার সব পুলিশ আমার কথায় ওঠে বসে। তোরা দেখবি কামরুজ্জামানের হাত কতো লম্বা।’

এসময় হট্টগোল শুনে ওই কলেজছাত্রীর মা ও বোন ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাদের সাথেও অভদ্র আচরণ করেন কামরুজ্জামান। সঙ্গীয় বখাটে ছেলেদের বলে যান তারা যেন এই তরুণীদের ভালোভাবে ঠিক করে দেয়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে এএসআই কামরুজ্জামানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি যা বলেছি ওদের ভালোর জন্যেই বলেছি। ওদের শাসিয়েছি মাত্র।’

বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, রাতে কামরুজ্জামানকে ক্লোজড করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কথা হলে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ওসমানীনগর সার্কেল) কামরুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।