ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে এবার জারবেরা ফুলের চাষ

Reporter Name

Posted By : Mison

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে এবার চাষ হচ্ছে জারবেরার। উপজেলা ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ছোট ঘিঘাটির মাঠে এবারই প্রথম এই বিদেশি জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে।
ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী টিপু সুলতান এবং নুর মোহাম্মদ যৌথ ভাবে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে এবার জারবেরা ফুলের চাষ করেছেন। প্রায় ২০ বছর ধরে এই ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে কৃষকরা শত শত একর জমিতে গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ চাষ করে আসছেন। সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয় গ্লাডিওলাস। আর এবারের সংযোজন জারবেরা।চলতি বছর কালীগঞ্জ উপজেলার ৩২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে। এরই মধ্যে রয়েছে টিপু সুলতান ও নুর মোহাম্মদের ক্ষেত।জারবেরা লাল, সাদা, হলুদ ও গোলাপিসহ আটটি বাহারি রঙের হয়ে থাকে। তবে এই ফুলের কোনো গন্ধ নেই। বিদেশি জাতের এই ফুলটি ক্ষেত থেকে তোলার পরও দশ থেকে ১৫ দিন তাজা থাকে। যে কারণে এই ফুলের বাজারমূল্য বেশ।
২০১৭ সালের জুন মাসে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে প্রথম জারবেরার বীজ রোপণ করেন ফুলচাষি টিপু সুলতান ও নুর মোহাম্মদ। বীজ আনা হয় ভারত থেকে। আর ফুল ক্ষেতের ওপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন; যা তৈরি হয় ইউরোপের দেশ গুলোতে। রোপণের তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে দুই থেকে তিন বছর ফুল দেয়। এ সময়ে একটি গাছে ২০ থেকে ২৫টি ফুল পাওয়া যায়।
কৃষিবিদ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জারবেরা চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়। তবে শীত মৌসুমে উৎপাদন বেশি হয়। দেশের বাজারে এই ফুলের দাম ও চাহিদা বেশ। তবে চাষের খরচও অনেক।ফুলচাষি টিপু সুলতান বলেন, ‘গেল রমজান মাসে ভারত থেকে জারবেরার বীজ সংগ্রহ করে ৯৬ শতক জমিতে রোপণ করি। এরপর তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। বীজ রোপণ, ক্ষেতের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া, ছাউনি স্থাপন, সার, ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই ফুল পরিচর্যা করার জন্য চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে।
তিনি আরো জানান, গত ছয় মাসে ১৫ লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিনন এক হাজার থেকে ১২শ’ ফুল সংগ্রহ করা যাচ্ছে। একটি ফুল দশ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন এই ফুল ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, জার্মান পরিবেশবিদ ডাক্তার ট্রগোট জারবের-এর নামানুসারে ফুলটির নামকরণ করা হয়।

Tag :

About Author Information
Update Time : ০৮:৩০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
১০৪৮ Time View

কালীগঞ্জে এবার জারবেরা ফুলের চাষ

Update Time : ০৮:৩০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

Posted By : Mison

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে এবার চাষ হচ্ছে জারবেরার। উপজেলা ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ছোট ঘিঘাটির মাঠে এবারই প্রথম এই বিদেশি জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে।
ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী টিপু সুলতান এবং নুর মোহাম্মদ যৌথ ভাবে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে এবার জারবেরা ফুলের চাষ করেছেন। প্রায় ২০ বছর ধরে এই ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে কৃষকরা শত শত একর জমিতে গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ চাষ করে আসছেন। সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয় গ্লাডিওলাস। আর এবারের সংযোজন জারবেরা।চলতি বছর কালীগঞ্জ উপজেলার ৩২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে। এরই মধ্যে রয়েছে টিপু সুলতান ও নুর মোহাম্মদের ক্ষেত।জারবেরা লাল, সাদা, হলুদ ও গোলাপিসহ আটটি বাহারি রঙের হয়ে থাকে। তবে এই ফুলের কোনো গন্ধ নেই। বিদেশি জাতের এই ফুলটি ক্ষেত থেকে তোলার পরও দশ থেকে ১৫ দিন তাজা থাকে। যে কারণে এই ফুলের বাজারমূল্য বেশ।
২০১৭ সালের জুন মাসে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে প্রথম জারবেরার বীজ রোপণ করেন ফুলচাষি টিপু সুলতান ও নুর মোহাম্মদ। বীজ আনা হয় ভারত থেকে। আর ফুল ক্ষেতের ওপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন; যা তৈরি হয় ইউরোপের দেশ গুলোতে। রোপণের তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে দুই থেকে তিন বছর ফুল দেয়। এ সময়ে একটি গাছে ২০ থেকে ২৫টি ফুল পাওয়া যায়।
কৃষিবিদ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জারবেরা চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়। তবে শীত মৌসুমে উৎপাদন বেশি হয়। দেশের বাজারে এই ফুলের দাম ও চাহিদা বেশ। তবে চাষের খরচও অনেক।ফুলচাষি টিপু সুলতান বলেন, ‘গেল রমজান মাসে ভারত থেকে জারবেরার বীজ সংগ্রহ করে ৯৬ শতক জমিতে রোপণ করি। এরপর তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। বীজ রোপণ, ক্ষেতের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া, ছাউনি স্থাপন, সার, ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই ফুল পরিচর্যা করার জন্য চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে।
তিনি আরো জানান, গত ছয় মাসে ১৫ লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিনন এক হাজার থেকে ১২শ’ ফুল সংগ্রহ করা যাচ্ছে। একটি ফুল দশ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন এই ফুল ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, জার্মান পরিবেশবিদ ডাক্তার ট্রগোট জারবের-এর নামানুসারে ফুলটির নামকরণ করা হয়।