ঢাকাঃ

ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালের করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া ‘স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন’ বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

সোমবার রাত ৮টায় এভার কেয়ার হাসপাতালের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিএনপি চেয়ারপারসনের সর্বশেষ অবস্থা জানান তিনি।

অধ্যাপক জাহিদ বলেন, করোনারী কেয়ার ইউনিটে উনি আছে। এই ইউনিটে যখন রোগী থাকে তখন তো সেটা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসই নেয়।

খালেদা জিয়া কেমন আছেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দেখুন- আমি এখানে আসার কয়েক মিনিট আগে উনার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেখা করে আসছি, আমি উনার সঙ্গে কথা বলে এসেছি। উনি কেমন আছেন খোঁজ নিয়েছি।
 
সকালের দিকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা বিকাল ৪টায় খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন।
 
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে ভোরের দিকে উনি একটু শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। উনি যখন শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন চিকিৎসকরা উনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর উনাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে ম্যাডামকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।

উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আমরা দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করব যে, উনার (খালেদা জিয়া) রোগমুক্তির জন্য আপনারা মহান রাব্বুল আ’লামীনের কাছে দোয়া করার জন্য বলবেন।

কী কারণে শ্বাসকষ্টটা হলো প্রশ্ন করা হলে ডা. জাহিদ বলেন, আপনাদের বুঝতে হবে মানুষের যে কোনো সময় যে কোনো পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। উনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এবং সেগুলো এখানকার চিকিৎসকরা কালেকটিভলি করছেন।সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গে দেশে বিদেশে কনসালটেন্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে।পরবর্তিতে বিস্তারিত জানা যাবে।

এভার কেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন। গত ২৭ এপ্রিল  ওই হাসপাতালে ভর্তির পরদিনই তার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
 
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর গত ১১ এপ্রিল থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন খালেদা জিয়া। ১৪ দিন পর আবার পরীক্ষা করা হলে তখনও তার করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে।

এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৭ এপ্রিল রাতে তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চেস্টের সিটিস্ক্যান ও কয়েকটি পরীক্ষার পর সেই রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে ‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরও ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হন। তবে ফিরোজার সব স্টাফরা ইতোমধ্যে করোনামুক্ত হয়েছেন।

৭৫ বছ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয়। পরে আরও দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here