সবুজদেশ ডেস্কঃ

প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক আগামী সপ্তাহে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৯ জানুয়ারির ওই বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিবেন।

বুধবার এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ৯ অথবা ১০ (জানুয়ারি) তারিখে সচিব পর্যায়ের ত্রিদেশীয় ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তারাই এ তারিখ বলেছিল এবং আমরা রাজি হই। কিন্তু পরে এটি তারা (মিয়ানমার) পিছিয়ে দেয়। পেছানোর একটি কারণ হলো চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (ওয়াং ই) এখন মিয়ানমারে অবস্থান করছেন। সে কারণেই তারা বলছেন ওনার সঙ্গে আলাপের পরে এটি ১৯ তারিখ হবে। আশা করি ফলপ্রসূ কিছু হবে।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে সঙ্গীত-শিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সুরের ধারা আয়োজিত পৌষ উৎসবের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী বলেন, ঢাকার বৈঠকে চীন ও মিয়ানমারের প্রতিনিধি থাকবেন। আমরা বৈঠকটির প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা আমাদের কাজ করছি। শেষ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক গত বছরের ২০ শে জানুয়ারি হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ওই বৈঠকে আমার মনে হয় কিছু প্রগ্রেস হয়েছিল। তারা তো কোনও উত্তর দেয় না। শুধু শোনে এবং বলে পরে জানাবে। তখন তারা বলেছিল মিয়ানমারের ভাষায় বুকলেট করবে এবং কিছু আগ্রহ দেখিয়েছিল। এরপরে কোভিড ও মিয়ানমারের নির্বাচনের অজুহাতে আর বৈঠক হয়নি।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সর্বমোট সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা (মিয়ানমারকে) সরবরাহ করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে মিয়ানমার কম সংখ্যক যাচাই বাচাই করেছে। তারা অত্যন্ত ধীরগতিতে কাজ করছে। মাত্র ৪২ হাজার তারা যাচাই বাছাই করেছে তারা। এখানে আন্তরিকতার বড় অভাব আছে। যাদের যাচাই-বাছাই করেছে তাদের মধ্যে কিছু রোহিঙ্গাকে তারা রিজেক্ট করেছে। একটি অসুবিধা হচ্ছে, তারা বিচ্ছিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করছে। যেমন বাবা ও মেয়েকে যাচাই-বাছাই করেছে, কিন্তু স্ত্রীকে করেনি। এ অবস্থায় তারা যাবে কেন? সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গা যারা সম্প্রতি এসেছে তাদের বায়োমেট্রিক হয়েছে এবং এর আগে আসা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক হয়নি জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, আমরা সেগুলোও তৈরি করা শুরু করেছি। কারণ, এগুলো না থাকলে পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র তারা সংগ্রহ করতে পারে।

পৌষ উৎসবের উদ্বোধন বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি অগ্রসর রাষ্ট্র হিসেবে আমরা বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে চাই। এ ক্ষেত্রে সংস্কৃতিকর্মীরা ভূমিকা রাখতে পারেন। উৎসব উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন সুরের ধারার অধ্যক্ষ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও অধ্যাপক শফি আহমেদ। অনুষ্ঠান বিষয়ে মন্ত্রী ড. মোমেন আরও বলেন, এ উৎসবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি ক্ষুদ্র-কুঠির শিল্পের স্টলও বসেছে। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। করোনার সময় সংস্কৃতি কর্মী-সংগঠন ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

এ আয়োজনে বিনোদনের পাশাপাশি আর্থিক সুবিধাও রয়েছে, এটি দারুণ বিষয়। বাঙালির সকল উৎসবকে ঐক্যের প্রতীক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবহমান বাংলার এসব উৎসব আমাদের ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধি করে। এ ধরনের আয়োজন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। বাঙালির পুরনো ঐতিহ্য পৌষ উৎসবকে নতুন করে যান্ত্রিক নাগরিক জীবনে নতুনরূপে চর্চার প্রচেষ্টায় ‘সুরের ধারা’ বিগত ছয় বছর ধরে এ আয়োজন করে আসছে। প্রতি বছর দুই দিনের আয়োজন হলেও এবার করোনার কারণে উৎসবটি একদিনে শেষ হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here