সবুজদেশ ডেক্সঃ বিদ্যুতের কেব্‌ল চুরি করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের তিন ক্যানটিন বয়সহ চারজন ১৭ দিন ধরে কারাগারে আছেন। মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের ভাষ্য, শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার নির্দেশে তাঁরা চুরি করতে গিয়েছিলেন।

গত ১৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন রমনা কালী মন্দির এলাকায় চুরি ও গ্রেপ্তারের ওই ঘটনা ঘটেছিল। অভিযুক্ত ব্যক্তি নাহিদ হাসান সুজন। তিনি এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক (শাখা ছাত্রলীগের চলতি কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি)।

গ্রেপ্তার তিন ক্যানটিন বয়, মো. মিজানুর রহমান, মো. দুলাল হোসেন ও মো. সেলিম হোসেন ৷ অপর ব্যক্তির নাম মো. রাজিব হোসেন। গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, রাজিব অভিযুক্ত নাহিদের বন্ধু ও এসএম হলেরই আবাসিক শিক্ষার্থী। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, সুজনের নির্দেশে মো. বজলু মিয়া নামের এক গাড়িচালক তাঁদের চুরিতে সহযোগিতা করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামলার এজাহারে নাহিদ ও বজলুর নাম যুক্ত করে পুলিশ। নাহিদ ও বজলু পলাতক।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরাসহ কয়েকজন মিলে ১৯ অক্টোবর রাতে রমনা কালী মন্দির এলাকায় ফুটপাতে রাখা কেব্‌ল পিকআপ ভ্যানে ওঠাচ্ছিলেন। সেখানে টহলরত এক পুলিশ সদস্য কেব্‌ল গাড়িতে ওঠানোর কারণ জানতে চাইলে তাঁরা সন্তোষজনক জবাব দিতে না পেরে পালিয়ে যেতে চান। এ সময় দুজন পালিয়ে গেলেও এই চারজনকে পুলিশ ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। তাঁদের কাছ থেকে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের ৩৩ কিলো ভোল্টের ৩১ ফুট ভূগর্ভস্থ তামার কেব্‌ল ও ব্যবহৃত পিকআপটি জব্দ করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যে দুজন পালিয়ে গেছেন তাঁরা হলেন, অভিযুক্ত নাহিদ হাসান ও পিকআপ চালক বজলু।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মো. মহসীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার ও তাঁদের কাছ থেকে চুরির আরও মাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

যোগাযোগ করা হলে নাহিদ হাসান সুজন অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। এর পক্ষে তাঁর কাছে কিছু প্রমাণ আছে। তিনি রাজিব নামের কাউকে চেনেনও না।
নাহিদ হাসান সুজন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অনুসারী বলে পরিচিত। এ ব্যাপারে জানতে গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘অন্যায়কারী যে ছাত্র সংগঠনেরই হোক, এ বিষয়ে কোনো ছাড় আমরা দেব না। নাহিদ যেহেতু ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত, সেহেতু তাঁকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং বহিষ্কার করতে হবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here