ছাত্রদলের সভাপতি কে এই খোকন?
ঢাকাঃ
২৮ বছর পর ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বুধবার রাতে কাউন্সিলররা সরাসরি ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করে। স্কাইপিতে এই আয়োজনের পুরোটা তত্ত্বাবধান করেন লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ছাত্রদলের নতুন সভাপতি হয়েছেন ফজলুর রহমান খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ইকবাল হোসেন শ্যামল। এরা দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ষষ্ঠ কাউন্সিলে ৯ জন সভাপতি প্রার্থী এবং ১৯ জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর মধ্য থেকে এই দুজনকে বেছে নিয়েছেন কাউন্সিলররা। সারা দেশে ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক শাখার ৫৩৪ কাউন্সিলরের মধ্যে ৪৮১ জন ভোটাভুটিতে অংশ নেন।
কাউন্সিলরদের ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে সভাপতি হয়েছেন খোকন। তিনি পেয়েছেন ১৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ পেয়েছেন ১৭৮ ভোট।
খোকন ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তিনি সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক ছাত্র। ছাত্রদলের গত কমিটিতে গণশিক্ষাবিষয়ক সহসম্পাদক ছিলেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলায়। তার পৈতৃক নিবাস বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পারভবানীপুর গ্রামে।
ফজলুর রহমান খোকনের জীবনবৃত্তান্ত ঘেঁটে জানা গেছে, তার বয়স ৩৫ বছরের কিছু বেশি। তার বাবা মো. খালেকুজ্জামান ও মা ফরিদা ইয়াসমিন। জন্ম ১৯৮৪ সালের ১০ জুন। বগুড়ায় জন্ম হলেও থাকেন ১০২/এ লালবাগ ঢাকায়।
খোকন পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে ২০০০ সালে এসএসসি, শেরপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০০২ সালে এইচএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স এবং ২০১০ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে জাপানিজ স্ট্যাডিজে অধ্যয়নরত।
২০০৩-০৪ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে রাজনীতিতে পদার্পণ তার। ২০০৫ সালের ছাত্রদলের এই হল শাখা কমিটির সহদফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পান।
ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত খোকন রাজনৈতিক কারণে ২৩টি মামলার শিকার হয়েছেন। চারবার তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে।
জানা গেছে, ছাত্রদলের কাউন্সিলের শুরুতে সভাপতি হিসেবে এগিয়ে ছিলেন রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় তার জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। তা ছাড়া শ্রাবণ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর অনুসারী। দলের বড় অংশ টুকুর সিন্ডিকেট থেকে ছাত্রদলকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়। যার প্রভাব পড়ে ভোটে।
সভাপতি হিসেবে শুরুতে খোকন আলোচনায় থাকলেও দিন দিন তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। উত্তরবঙ্গের সবাই তার পক্ষে মাঠে নামেন। উত্তরবঙ্গে মোট ভোটার ১২৫; যার বেশিরভাগই খোকন পায়। শেষ মুহূর্তে ৮ ভোটের ব্যবধানে সভাপতি নির্বাচিত হন খোকন।