ভারতের ভোপালে এক হোস্টেলে ধর্ষণের ঘটনায় এখন তোলপাড় চলছে ভারতজুড়ে। অভিযোগের তির ওই হোস্টেলের পরিচালকের দিকে। এ ঘটনায় তিন নারী এরই মধ্যে যৌন নির্যাতনের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন। এবার চতুর্থ আরেক নারী আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, হোস্টেলের পরিচালক তাঁকে পর্নো ভিডিও দেখতে বাধ্য করতেন এবং এরপর ধর্ষণ করা হতো। এভাবে চলেছিল টানা ছয় মাস।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ওই বেসরকারি হোস্টেলের পরিচালকের নাম অশ্বিনী শর্মা। গত বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের অভিযোগ, শাসক দল বিজেপির নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা এই অশ্বিনী শর্মার। গত সপ্তাহের ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনাটি সবার নজরে আসে। অশ্বিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, দলিতদের বিরুদ্ধে নির্যাতনসহ নানা ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে।

চতুর্থ নারীর অভিযোগ, অশ্বিনী শর্মা তাঁকে হোস্টেলে রেখে টানা ছয় মাস নিয়মিত ধর্ষণ করেছেন। ইন্দোরে পুলিশের কাছে দেওয়া বক্তব্যে তিনি জানান, ‘আমাকে আটকে রেখে পর্নো ভিডিওচিত্র দেখতে বাধ্য করা হয়েছিল।’ ওই নারী আরও জানান, অশ্বিনীর কথামতো কাজ না করায় তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।

অশ্বিনীর বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়েরের দুই দিনের মধ্যে আরও দুই নারী অভিযোগ তোলেন। চতুর্থ এই নারীর বয়স ২৩ বছর। অভিযোগ আছে, এই চার নারীকে আলাদা একটি বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন অশ্বিনী শর্মা।

ভোপালের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ধর্মেন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘আমি ইন্দোর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের একটি কেস নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরে ভোপাল পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত করবে।’

বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র শোভা ওজা বলেছেন, অশ্বিনী শর্মা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) একজন সক্রিয় কর্মী। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের আশীর্বাদপুষ্ট।

তবে বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলটির মুখপাত্র রাহুল কোঠারি বলেছেন, ‘এই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস রাজনীতি করছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।’

এদিকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার প্রতি মাসে মেয়েদের সব হোস্টেল পরিদর্শন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here