সবুজদেম ডেক্সঃ ২ বছরে ৪ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা বদলের পর ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাচেষ্টা মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত ২০ অক্টোবর ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) ইউনুচ আলী। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর দিনগত রাতে  ৮ দুর্বৃত্ত ১৫ লাখ টাকার চুক্তিতে এমপি আনারকে হত্যার মিশনে নামে এমন অভিযোগ এনে তার পিএস আব্দুর রউফ বাদি হয়ে পরদিন কালীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় একজন সরকারি কর্মচারীসহ আওয়ামী লীগের অপর পক্ষের দলীয় নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। যার মামলা নং-১ তারিখ ০২/১১/২০১৬ ইং।

মামলাটি প্রথম তদন্ত করেন থানার তৎকালীন সেকেন্ড অফিসার এসআই ইমরান আলম। তিনি বদলি হয়ে যাওয়ার পর মামলার দায়িত্ব নেন পরবর্তী সেকেন্ড অফিসার এসআই নিরব হোসেন। তিনিও বদলি হয়ে গেলে মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব পড়ে সেকেন্ড অফিসার এসআই শফিকুল ইসলামের উপর। সর্বশেষ তিনিও বদলি হয়ে গেলে মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব পড়ে বর্তমান সেকেন্ড অফিসার এসআই জাহিদুল ইসলামের ওপর।

এসআই জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি মামলাটি গ্রহণের কয়েকদিন মাথায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এমপি হত্যা চেষ্টা মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ পান। গত ২০ অক্টোবর  আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ ১৭০ পাতার মামলার নথিটি ডিবি’র কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ফরাসপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদ (৪৬), হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসের কর্মচারী ও ঝিনইদহ সদর উপজেলার রাধানগর মোল্ল্যাপাড়ার কুড়ল মন্ডলের ছেলে কওসার আলী (৪৫),হরিণাকুন্ডু উপজেলার কেষ্টপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মন্ডলের ছেলে আজিজুল মন্ডল ও ঝিনাইদহ উপশহর পাড়ার শাহাদৎ শেখের ছেলে নাসির শেখ (৩৫) সহ ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়।

এ মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইমরান আলম সর্বপ্রথম গ্রেপ্তার করেন আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদকে। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে পরবর্তীতে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসের কর্মচারী কওসার আলী, সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ কর্মী ওহিদুজ্জামান, মালিয়াট ইউপি’র সাবেক  চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান খান।

এছাড়া একই মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল হোসেনকেও আটক করে পুলিশ। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ মামলার অধিকাংশ আসামি সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান পক্ষের দলীয় নেতাকর্মী। মামলাটি দায়েরের পর প্রথম দিকে দ্রুত গতিতে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করলেও পরবর্তী কর্মকর্তারা মামলাটির আর কোন অগ্রগতি করতে পারেননি।

মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কালীগঞ্জ থানার তৎকালীন সেকেন্ড অফিসার (বর্তমান ঝিনাইদহ ডিএসবি ওসি) ইমরান আলম জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মালিয়াট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খান এমপি হত্যা চেষ্টার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক অন্যান্যদের গ্রেফতার করা হয়।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) ইউনুচ আলী বলেন, মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here