নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় ধর্ষণের শিকার হয়ে এক কিশোরী (১৩) অন্তঃসত্ত্বা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কিশোরীর মা গত সেপ্টেম্বর মাসে মিলন মোল্লাসহ (৩৫) পাঁচজনের নামে আদালতে মামলা করেন। তবে এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামিরা মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে এবং কোনোভাবে রাজি করাতে না পেরে হুমকির পাশাপাশি হামলা চালিয়েছে বলে কিশোরীর মায়ের অভিযোগ।  
 
ওই কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার মায়ের (৫৪) সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বামীর সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তাঁর দুই মেয়ে। বড় মেয়ের (২২) বিয়ে হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ছোট মেয়ে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে এই মায়ের ভাষ্য, তিনি গ্রামের এক প্রতিবন্ধী নারীকে (৫৫) দেখাশোনার কাজ করেন। গত ৫ জুলাই তিনি সেখানে কাজে যান। এ সময় মেয়ে বাড়িতে একা ছিল। তবে কেমন যেন অস্বাভাবিক আচরণ করছিল, সবকিছুতে ভয় পাচ্ছিল। মাসখানেক পর মেয়ের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তিনি মেয়েকে নানা প্রশ্ন করেন। মেয়ে তখন ভয়ে কিছু বলতে চায়নি। পরে জানায় যে মিলন তাকে ধর্ষণ করেছে। একই সঙ্গে জানায় যে এই কথা কাউকে বললে মা-মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন মিলন।বিজ্ঞাপন

ঘটনা সম্পর্কে ওই কিশোরীর ভাষ্য, সে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। মিলন তার ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে। মিলনের হুমকিতে সে ভয় পেয়ে মাকে কিছু বলেনি। মিলন এখন মামলা থেকে বাঁচতে তাকে বিয়ে করতে চাইছে—উল্লেখ করে সে বলে, ‘আমি এই বিয়েতে রাজি নই। মিলনের বিচার চাই।’

মেয়ের মা বলেন, মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন যে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। এই খবরে ১৩ বছরের মেয়েকে নিয়ে তিনি চিন্তিত। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে হুমকি আর হামলা। এই অবস্থায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি ঝিনাইদহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। আদালত তার আরজিটি এজাহার হিসেবে নিতে শৈলকুপা থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেন। পুলিশ মামলাটি নিলেও এখন পর্যন্ত একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করতে পারেননি। তাঁর অভিযোগ, উল্টো আসামিরা মাঝে মধ্যেই তাদের বাড়িতে এসে নানাভাবে হুমকি দেন। মামলা তুলে না নিলে আরও বড় ক্ষতি হবে বলে প্রায়ই হুমকি দেন তাঁরা। এর মধ্যে একবার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরও করা হয়েছে।বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে প্রধান আসামি মিলন মোল্লার ভাষ্য, তাঁর স্ত্রী মারা গেছেন ২ মাস আগে। ১৪ বছরের একটি ছেলে আছে তাঁর। তিনি কিশোরীকে বিয়ে করে মামলা মিটিয়ে ফেলতে চান। কিন্তু গ্রামের একটি পক্ষ তাঁকেসহ অন্য আসামিদের ফাঁসাতে চাইছেন।

এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আরেক আসামি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরিদ মুন্সির দাবি, তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় করতে এই মামলা করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনার কিছুই জানেন না।

শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আদালতের নির্দেশ পেয়ে পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here