ঢাকা ০৪:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজের বিয়ে নিজেই ভেঙে দিল ২য় শ্রেণির ছাত্রী

Reporter Name

বরগুনাঃ

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের নিজের বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে ২য় শ্রেণীর ছাত্রী মনিকা (১০)। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে। এ ঘটনায় বরের মা ও কনের মাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও অনাদায়ে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

জানাগেছে, আমতলী পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের বাসুগী এলাকার রিক্সা চালক জুয়েল প্যাদার মেয়ে আমতলী মফিজ উদ্দিন বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্রী মনিকার সাথে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের রিক্সা চালক মোঃ তৌফিকের পুত্র পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী সুমন (১৪) এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহের সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। শিশু মনিকা তার বিয়ের কথা জানতে পেরে শুক্রবার বিকেলে কৌশলে বাসা থেকে বের হয়ে বান্ধবী কনিকা ও ফারজানাকে নিয়ে পরামর্শ করে বিয়ে বন্ধ করার জন্য প্রথমে তারা আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে যায়। কোর্ট বন্ধ দেখে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করে মনিকা তার বান্ধবীদের নিয়ে আমতলী থানায় আসে।

থানার ওসিকে সব ঘটনা খুলে বললে তাৎক্ষণিক এসআই নাসরিন সুলতানাকে দায়িত্ব দিয়ে বর সুমন, বরের মা ডলি বেগম ও কণ্যার মা শাহানাজ ওরফে শাহিনুরকে আটক করে। পরে পুলিশ আটককৃতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করে। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ মজুমদার বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ২০১৭ এর ৮ ধারা মোতাবেক বরের মা ডলি বেগমকে ২ হাজার টাকা ও কনের মা শাহানাজ ওরফে শাহিনুরকে ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।

সাহসী শিশু কণ্যা মনিকা জানান, আমি দুপুরে জানতে পারি শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার বিবাহ হবে। আমি বিকেলে বান্ধবী কনিকা ও ফারজানার সাথে কোর্টে যাই। সেখানে কাউকে না পেয়ে আমতলী থানায় এসে বড় স্যারকে সব খুলে বলি। আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই।

আমতলী থানার ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, আমি সব ঘটনা শুনে পুলিশ পাঠিয়ে বর, বরের মা ও কনের মাকে আটক করে থানায় এনে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করি।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ মজুমদার বলেন, এর পূর্বে অনেক বাল্য বিবাহ রোধ করেছি। সার্বিক বিবেচনায় আমার নিকট এটি একটি হৃদয়বিদারক বাল্যবিয়ে। ধন্যবাদ জানাই সাহসী কণ্যা মনিকাকে। এত অল্প বয়সে নিজে নিজের বিয়ে ভেঙ্গে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, সাহসী কণ্যা মনিকা যতদূর লেখাপড়া করতে চায় আমরা তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবো।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৯
৪৪১ Time View

নিজের বিয়ে নিজেই ভেঙে দিল ২য় শ্রেণির ছাত্রী

আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৯

বরগুনাঃ

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের নিজের বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে ২য় শ্রেণীর ছাত্রী মনিকা (১০)। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে। এ ঘটনায় বরের মা ও কনের মাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও অনাদায়ে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

জানাগেছে, আমতলী পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের বাসুগী এলাকার রিক্সা চালক জুয়েল প্যাদার মেয়ে আমতলী মফিজ উদ্দিন বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্রী মনিকার সাথে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের রিক্সা চালক মোঃ তৌফিকের পুত্র পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী সুমন (১৪) এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহের সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। শিশু মনিকা তার বিয়ের কথা জানতে পেরে শুক্রবার বিকেলে কৌশলে বাসা থেকে বের হয়ে বান্ধবী কনিকা ও ফারজানাকে নিয়ে পরামর্শ করে বিয়ে বন্ধ করার জন্য প্রথমে তারা আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে যায়। কোর্ট বন্ধ দেখে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করে মনিকা তার বান্ধবীদের নিয়ে আমতলী থানায় আসে।

থানার ওসিকে সব ঘটনা খুলে বললে তাৎক্ষণিক এসআই নাসরিন সুলতানাকে দায়িত্ব দিয়ে বর সুমন, বরের মা ডলি বেগম ও কণ্যার মা শাহানাজ ওরফে শাহিনুরকে আটক করে। পরে পুলিশ আটককৃতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করে। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ মজুমদার বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ২০১৭ এর ৮ ধারা মোতাবেক বরের মা ডলি বেগমকে ২ হাজার টাকা ও কনের মা শাহানাজ ওরফে শাহিনুরকে ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।

সাহসী শিশু কণ্যা মনিকা জানান, আমি দুপুরে জানতে পারি শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার বিবাহ হবে। আমি বিকেলে বান্ধবী কনিকা ও ফারজানার সাথে কোর্টে যাই। সেখানে কাউকে না পেয়ে আমতলী থানায় এসে বড় স্যারকে সব খুলে বলি। আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই।

আমতলী থানার ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, আমি সব ঘটনা শুনে পুলিশ পাঠিয়ে বর, বরের মা ও কনের মাকে আটক করে থানায় এনে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করি।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ মজুমদার বলেন, এর পূর্বে অনেক বাল্য বিবাহ রোধ করেছি। সার্বিক বিবেচনায় আমার নিকট এটি একটি হৃদয়বিদারক বাল্যবিয়ে। ধন্যবাদ জানাই সাহসী কণ্যা মনিকাকে। এত অল্প বয়সে নিজে নিজের বিয়ে ভেঙ্গে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, সাহসী কণ্যা মনিকা যতদূর লেখাপড়া করতে চায় আমরা তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবো।