নিহত ফার্ম শ্রমিক জিনারুল ইসলাম

চুয়াডাঙ্গাঃ

ফরিদপুরে এগ্রো ফার্মের এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার পর পুকুর পাড়ে লাশ ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার বেলা ২টার দিকে ওই শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে নিহতের বড় ভাই মিনারুলসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ফরিদপুরে লাশ আনতে যান।

নিহত শ্রমিক জিনারুল ইসলাম ওরফে শুকুর চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বড়গাংনী ইউনিয়নের সাহেবপুরের মৃত কাবুল মন্ডলের ছেলে।

এ দিকে লাশ উদ্ধারের পরে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ চুয়াডাঙ্গাতে আনা হয়। এ ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ দিকে জিনারুলের মৃত্যুর পরে তার দুই সহকর্মী পালিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে ফার্মমালিকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জিনারুল ইসলাম ওরফে শুকুর প্রায় দেড় বছর আগে ফরিদপুর জেলা সদরের শিবরামপুর গ্রামের বিপুল এগ্রো ফার্মে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যান। সেখানে তিনি এক বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত। সোমবার বেলা ২টার দিকে ফার্মের ভেতরে অবস্থিত পুকুর পাড়ের স্যালোমেশিন ঘর থেকে এগ্রো ফার্মে শ্রমিক জিনারুল ইসলাম ওরফে শুকুরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

নিহত জিনারুলের প্রতিবেশী আমজাদ জানান, ‘জিনারুল প্রায় দেড় বছর আগে ফরিদপুরে কাজের জন্য যান। তারপর থেকে তিনি আর বাড়িতে আসেনি। তাকে তার বাড়ির লোকজন বাড়ি আসার কথা বললে তিনি বলতেন মালিক বেতন দেয়নি। বেতন দিলে তবেই তিনি বাড়িতে আসবেন। আমরা জিনারুলের ফার্মের মালিকের সাথে তার বাড়ি আসার বিষয়ে ছুটি চেয়ে ফোন করেছি। ফার্ম মালিক লোকটাকে আমাদের সুবিধার মনে হয়নি। তিনি বলতেন জিনারুলের সব বেতন পরিশোধ করে দেয়া হবে। এ ছাড়া ওই ফার্ম মালিক জিনারুলের মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের কিছু জানাননি। জিনারুল ব্যক্তি জীবনে অবিবাহিত ও সহজ-সরল প্রকৃতির ছিলেন।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুল করিম জানান, ‘আমরা স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে শিবরামপুর গ্রামের বিপুল এগ্রো ফার্মের ভেতরে অবস্থিত পুকুর পাড়ের স্যালোমেশিন ঘর থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করি। পরে তার কাছের আইডি কার্ড থেকে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিহতের বাড়িতে খবর দেয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘নিহত জিনারুলের মাথায় গুরুতর ক্ষতচিহ্নসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, জিনারুলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা জিনারুলের কর্মস্থল বিপুল এগ্রো ফার্মের অন্যান্য শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি। ঘটনার তদন্তের স্বার্থে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) শহিদুল ইসলাম জানান, ‘লাশ উদ্ধারের পরে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে অপরাধী শনাক্তে ও হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে জোর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here