যশোরঃ

যশোরে দিনে-দুপুরে থানার একশ’ গজের মধ্যে বোমা ফাটিয়ে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আরও দুইজনকে গ্রেফতার এবং আরও সাড়ে ছয় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

এ নিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় সরাসরি জড়িত আটজনের মধ্যে সাতজন গ্রেফতার এবং নয় লাখ টাকা উদ্ধার হলো। গ্রেফতারকৃত নতুন দুুজন হলেন যশোর সদরের মোল্যাপাড়া আমতলা এলাকার লিটন হোসেনের ছেলে ইয়াসির আরাফাত রাজু (২৮) ও ধর্মতলা এলাকার তবিবর শেখের ছেলে সোহেল শেখ (২৪)।

সোমবার (০৫ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সামনে ব্রিফিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত পথসভা করে এসব তথ্য জানান যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন।

এছাড়া ছিনতাইকারীরা যে ‘গডফাদারের’ ছত্রছায়ায় ছিল ঘটনার সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান এসপি।

২৯ সেপ্টেম্বর দিনে-দুপুরে থানার একশ’ গজের মধ্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সামনে বোমা ফাটিয়ে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছুরিকাঘাত ও বোমার আঘাতে টাকা বহনকারী দুজন আহত হন।

যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোর কোতোয়ালি ও গোয়েন্দা পুলিশ ৩ অক্টোবর রাতে মাগুরার আড়পাড়া এলাকায় জিএম পরিবহন থেকে আরাফাতের মা মেহেরুনকে হেফাজতে নেন। এ সময় তার কাছ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

৫ অক্টোবর ভোরে ঢাকার আদাবর শান্তিরবিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সরাসরি জড়িত আরাফাতকে গ্রেফতার ও এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এরপর অভিযান চালিয়ে যশোর সদরের কাশিমপুর গ্রামে তার ভগ্নিপতি সেলিমের বাড়ি থেকে ডাকাতিকালে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। এছাড়া র্যাব-৪ অক্টোবর নড়াইলের কালনা ফেরিঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে আরেক আসামি সোহেল শেখকে গ্রেফতার করে। রোববার রাতে তাকে কোতোয়ালি থানায় তাকে সোপর্দ করা হয়।

যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন আরও বলেন, সবমিলিয়ে এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার ও নয় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ছিনতাইয়ের পরিকল্পনাকারী রাজ্জাক ওরফে জামাই রাজ্জাককে গ্রেফতার ও বাকি টাকা উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ব্রিফিংকালে পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন বলেন, আরএন রোড এলাকার আগমনী মোটরসের মালিক ইকবাল হোসেনের মোটরপার্টস ও ফলের আড়তের ব্যবসা রয়েছে। তার ভাই এনামুল হক ফলের আড়তের ১৭ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য যাচ্ছিল। এই আড়তে দীর্ঘদিন ধরে কর্মচারী ছিলেন টিপু।

টিপুই এই টাকা লুটের পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পাশের ফল ব্যবসায়ী রাজ্জাক ফকির ওরফে জামাই রাজ্জাককে সঙ্গে নেন। জামাই রাজ্জাকই বাকি অপরাধীদের যুক্ত করেন।

আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত পথসভায় পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন বলেন, যশোরবাসীর নিরাপত্তা প্রদান ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার জন্য মানুষের মনে যে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছিল, তা দূর করতে ঘটনাস্থলেই এ সভা করা হচ্ছে। এই সভা থেকে অপরাধীদের এই বার্তা দেয়া হচ্ছে, অপরাধ করে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদার, তৌহিদুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও ডিবি ওসি সোমেন দাস প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here