মিথ্যা সত্যকে ঢেকে রাখতে পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ছাড়া কখনোই বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা হতে পারে না। কারণ, বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্যের মূল অংশজুড়েই আছেন জাতির পিতা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের গোপন নথি নিয়ে ১৪ খণ্ডের বইয়ের প্রথম খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক বইটির এ প্রকাশনা অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা।

আজ শুক্রবার বিকেলে গণভবন প্রাঙ্গণে বইটির প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, তাঁর ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ জাতির জনকের স্বপ্নের সমৃদ্ধ দেশ গঠনে মুক্তিযুদ্ধের পথের ইতিহাস অনুসরণ করবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ এখন দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানার সুযোগ পাচ্ছে এবং তারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর ভিত্তি করেই উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।’ তিনি বলেন, ‘একটি মিথ্যা কখনোই সত্যকে ঢেকে রাখতে পারে না। জাতির পিতাকে ছাড়া কখনোই বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা হতে পারে না। কারণ, বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্যের মূল অংশজুড়েই রয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনের সূচনা থেকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার ৪৬টি ফাইলে ৪০ হাজার পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে রচিত ১৪ খণ্ডের প্রথম খণ্ড শুক্রবার প্রকাশিত হলো। এ খণ্ডে ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন, সংগ্রাম, ভাষণ, গতিবিধি ও কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন তথ্য সংযোজিত হয়েছে।

পুলিশের আইজি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে কীভাবে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার বিশাল এ তথ্যভান্ডারকে স্পেশাল ব্রাঞ্চের ২২ সদস্যের একটি দলের সাহায্যে নথি হিসেবে প্রস্তুত করেন, তার বৃত্তান্ত তুলে ধরেন।

ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অন্যদের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) দায়িত্ব পালনের সময় এসব গুরুত্বপূর্ণ দলিল সংগ্রহে সহায়তাকারী বর্তমান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্যসচিব শেখ হাফিজুর রহমান, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান, হাক্কানী পাবলিশার্সের প্রকাশক গোলাম মোস্তফা।

জাতির পিতার বিরুদ্ধে তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সেসব গোপন নথি বই আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা।

ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে অমূল্য এসব ডকুমেন্ট দেশ, জাতি ও বহির্বিশ্বে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াসে ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক ১৪ খণ্ডে বই আকারে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে। এর ধারাবাহিকতায় ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালির স্বাধীনতার ধারাবাহিক আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসংবলিত বইয়ের প্রথম খণ্ডের (১৯৪৮-১৯৫০) প্রকাশ হলো শুক্রবার।

বইটির প্রকাশক হাক্কানী পাবলিশার্স। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বইটির এডিটিংসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, তিন বাহিনী প্রধান, বিদেশি কূটনৈতিক, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীসহ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here