যশোরঃ

যশোরের শার্শায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও পুলিশের সোর্সের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে বাড়িতে ঢুকে এক নারী (৩২)কে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

পঞ্চাশ বোতল ফেনসিডিলসহ ওই নারীর স্বামীকে গ্রেফতারের পর সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পঞ্চাশ হাজার টাকার দাবিতে বাড়িতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

ভিকটিম মঙ্গলবার দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন।

ভিকটিম নিজেই ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আসেন। কিন্তু পুলিশের মাধ্যমে না আসায় তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভিকটিম অভিযোগ করেন, তার স্বামী এক সময় চোরাচালানী পণ্য আনা নেওয়ার কাজ করতেন। বর্তমানে ওই কাজের সঙ্গে জড়িত নেই।

তিনি দাবি করেন, গত ২৫ আগস্ট শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল তার স্বামীকে আটক করে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেন।

ভিকটিম বলেন, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুল, পুলিশের সোর্স কামরুল, লতিফসহ বেশ কয়েকজন আমার বাড়িতে যায়। রাতে ঘরের দরজায় ধাক্কা দেয়। প্রথমে দরজা খুলতে রাজি হইনি। এক পর্যায়ে স্বামীকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবে, সেই বিষয়ে কথা বলতে এসেছে, জানালে দরজা খুলে দিই। এসময় আামার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে। এসআই খায়রুল বলে, পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে মামলা হালকা করে দিবে, ৫৪ ধারার মামলা দিবে। আমি বলেছি, আটকের পর ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দিয়েছেন। এখন বলছেন পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে মামলা হালকা করে দিবেন?

তিনি বলেন, আমি কোনো টাকা দিতে পারবো না। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে পুলিশের সোর্স কামরুল, এসআই খায়রুলসহ ২/৩জন আমাকে ধর্ষণ করেছে। বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে, তারা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য আসতে বলে। এজন্য থানায় না গিয়ে এখানে চলে এসেছি।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে শার্শার ওই নারী জরুরী বিভাগে এসে জানান পুলিশ কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তখন বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়। ভিকটিমকে আমার দপ্তরে ডেকে ঘটনা শুনি। তাকে জিজ্ঞাসা করলে, জানান শারীরিক পরীক্ষা করাতে চান। ভর্তি হবেন না। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা পুলিশের রেফারেন্স ছাড়া আমরা পরীক্ষা করতে পারি না। পরে বিষয়টি কোতয়ালি থানার ওসিকে অবহিত করেছি। তিনি এসে ভিকটিমকে নিয়ে গেছেন।

জানতে চাইলে কোতয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ওই নারীকে নিয়ে আসি নাই। শার্শা থানার কেস। সেখানে কথা বলেন।

শার্শা থানার ওসি এম মশিউর রহমান বলেন, ওই নারীর স্বামীকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ এসআই খায়রুল গ্রেফতার করেছে গত ২৫ আগস্ট। এরপর আর ওই বাড়িতে খায়রুল যায়নি। অথচ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করছেন ওই নারী। আর কামরুল ওই নারীর স্বামীর চাচাতো ভাই। স্থানীয় রাজনৈতিক দলাদলির কারণে ওই মহিলাকে কেউ ইন্ধন দিচ্ছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। ওই নারীর স্বামীর বিরুদ্ধে চারটি মাদক মামলা রয়েছে।

ওসি আরও বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here