রাজশাহীঃ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান, উপ-উপাচার্য  প্রফেসর চৌধুরী জাকারিয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই বিষয়ে গণমাধ্যমে এখন পর্যন্ত মুখ খোলেননি উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান ।

তবে এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের  অবস্থান জানাতে আগামী রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।  

এদিকে, গত বুধবার ইউজিসির তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম শেষে সুপারিশসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ইউজিসির সদস্য এবং এই তদন্ত কমিটির প্রধান দিল আফরোজা বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, তদন্ত কমিটি সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দেয়া হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছি।  তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ এবং আরও কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা মোট ২৫ টি অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেয়েছে এই তদন্ত কমিটি। এই প্রতিবেদনে, উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুল বারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল সবার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছে ইউজিসি। এছাড়া তদন্তে সহযোগিতা না করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম.এ বারীকে অপসারণেরও সুপারিশ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

জানা যায়, চলতি বছরের গত ৪ঠা জানুয়ারি ৬২ জন শিক্ষক এবং দুজন চাকরিপ্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সম্বলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও ইউজিসিতে দাখিল করে। অভিযোগ পত্রে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ আনা হয়েছিল। পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অভিযোগগুলো তদন্তে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগমকে আহ্বায়ক করে, ইউজিসি একটি কমিটি গঠন করে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটি উভয় পক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনে উন্মুক্ত শুনানির ও আয়োজন করে।

তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে সুপারিশসহ সর্বমোট ৭৩৬ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। যেখানে ৩৬ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন এবং ৭০০ পৃষ্ঠার সংযোজনী প্রতিবেদন রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here