সবুজদেশ ডেক্সঃ আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

লতিফ সিদ্দিকীর ভাতিজা মোশারফ হোসেন সিদ্দিকী জানান, কালিহাতী উপজেলার প্রতিটি এলাকায় লতিফ সিদ্দিকীর গণভিত্তি রয়েছে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা–কর্মীই তাঁকে চান। তাই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নিতে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত সমর্থন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। লতিফ সিদ্দিকীর জন্য ভোটারদের সেই স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ চলছে। আগামী রোববার (২৫ নভেম্বর) লতিফ সিদ্দিকী কালিহাতীতে এসে এ ব্যাপারে ঘোষণা দেবেন বলে মোশারফ হোসেন সিদ্দিকী জানান।

২০০৮ সালের নির্বাচনের পর মহাজোট সরকারে লতিফ সিদ্দিকী পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। পরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন। সে নির্বাচনের পর তিনি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে হজ, তাবলিগ জামাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ সম্পর্কে মন্তব্য করে সমালোচিত হন। এ জন্য তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার ও মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে
দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাঁর নামে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। দেশে ফিরে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। কয়েক মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি লাভ করেন। তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় টাঙ্গাইল-৪ আসনটি শূন্য হয়।

সংসদ থেকে পদত্যাগের পর লতিফ সিদ্দিকী এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত অব্যাহত রাখেন। বিভিন্ন সময় সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি ও তাঁর স্ত্রী যোগদান করতেন। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত তৃণমূল পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের ওপর লতিফ সিদ্দিকীর প্রভাব রয়েছে।

২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে হাসান ইমাম খান সাংসদ হন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলার একাধিক নেতা জানান, এবারের নির্বাচনেও হাসান ইমাম খান এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন। হাসান ইমাম খানের সঙ্গে কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের দূরত্ব রয়েছে বলে কেউ কেউ অভিযোগ করেন।

এবার এ আসন থেকে বর্তমান সাংসদ ছাড়াও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবু নাসের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য লিয়াকত আলী এবং জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সোলায়মান হাসান মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তাঁরা সাংসদের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে অন্য যে কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দলের নেতাদের কাছে দাবি জানান।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here