ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
‘আব্বু বলেছে আগামী মাস থেকে আর স্কুলে যেতে হবে না’। ‘‘মনে বড় স্বপ্ন ছিলো, বড় হয়ে একটা চাকরী করে সংসারের অভাব দুর করবো’’ সেটা আর হলো না। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে কথাটি বললেন ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র মেহেদী হাসান। আমাদের সংসারে বড্ড অভাব। আমার আব্বু ঝিনাইদহ হাটের রাস্তার পাশে ফুতপাতে হকারীর মালামাল বিক্রি করেন। কিন্তু তার উপার্জনে সংসার চলে না। এছাড়া বাবা-মায়ের অসুখও আছে। ওষুধপত্র কিনতে প্রতি মাসে টাকা লাগে। তারপর সেদিন শুনছি আমার আব্বু লোকের কাছ থেকে সুধের টাকা দিয়ে আমার স্কুলে বেতন এবং পরীক্ষার ফী দিয়েছে। আমি চাইছি নিজে কোনো উপার্জন করে আমার লেখাপড়াটা চালু রাখতে। যদি উপার্জন করার কোনো পথ খুঁজে না পাই তাহলে আগামী মাস থেকে আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে।’ মেহেদী বলেন, বাসা থেকে আমার স্কুলে যাওয়া আসা করতে প্রতিদিন ত্রিশ টাকা লাগে। এছাড়া বই-খাতা কেনার খরচও তো আছে। এখন আব্বু আর আমার টাকা দেয় না, তাই পায়ে হেটে স্কুলে যায়। টাকা-পয়সার অভাবে লেখাপড়া এখানেই শেষ হয়ে যাবে। বিষয়টি সত্যতা যাচায় করতে মেহিদীর পিতা শেখ শরিফ কে ০১৯১৬৭৪১৩৩৭ নম্বরে ফোন করে সরোজমিনে গিয়ে দেখি ঝিনাইদহের হাটের রাস্তা সংলগ্ন এ্যাপেক্স শো রুমের সামনে চৌকির উপর হরেক রকমের জিনিস প্রত্র নিয়ে বসে আসেন মেহেদীর পিতা শরিফ। মেহেদীর বিষয়ে জানতে চাইয়ে তিনি জানান, নুন আনতে পানতা ফুরায় ছেলের লেখাড়ার খরচ দেব কেমন করে। এমনিতেই সংসার চলে না। তার উপর মার্কেটে ২/৩ লাখ টাকা দিনা হয়ে গেছি। ছেলের ভবিষতের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আর কি যেভাবে আমি লাঠি গুতো খাচ্ছি সে ভাবেই হবে। বলেই কেঁদে ফেললেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here