যশোরঃ

যশোরে স্বামীর বিরুদ্ধে এবার ধর্ষণের মামলা করেছেন এক নারী। তালাকের বিষয় গোপন রেখে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখায় তিনি সোমবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি করেন। আদালতের বিচারক সাইফুদ্দীন হোসাইন অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত স্বামীর নাম আব্দুর রহমান। তিনি যশোর শহরের নাজির শংকরপুর সাদেক দারোগার মোড় এলাকার আব্দুল ওহাবের ছেলে।

বাদী অভিযোগে বলেছেন, তিনি সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহায়ক পদে চাকরি করেন। ২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর আসামি আব্দুর রহমানের সাথে তার ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করতো স্বামী আব্দুর রহমান। কিন্তু ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নির্যাতন সহ্য করে তিনি সংসার করতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্বামীর চাহিদা মতো যৌতুকের টাকা না দেয়ায় তাকে মারপিটের পর তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর তার আশ্রয় হয় পিতার বাড়িতে। কিছুদিন পর দ্বিতীয় বিয়ে করে আব্দুর রহমান। এরপর স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে ২০২০ সালে তিনি একটি মামলা করেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসে স্ত্রীকে তালাক দেয়া হয়েছে বলে একটি তালাকের কপি আদালতে উপস্থাপন করে আব্দুর রহমান। ওই তালাকনামায় উল্লেখ করা হয় ২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি তাকে তালাক দেয়া হয়েছে। অথচ তালাকের কোনো নোটিশ বাদীকে বা সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় প্রদান করা হয়নি। তালাকনামা উপস্থাপনের পর ওইদিন বিকেল চারটার দিকে আব্দুর রহমানকে বাদীর বাবা শহরের খড়কির বাড়িতে ডেকে নেন। এসময় তার কাছে তালাকের বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ও ১৬ মার্চ বাদীকে চিকিৎসা করানোর জন্য ঢাকায় নিয়ে যান তার স্বামী আব্দুর রহমান। ওই সময় নয়াপল্টনে দি ক্যাপিটাল আবাসিক হোটেলে আব্দুর রহমান তার সাথে রাতযাপন করেন। এছাড়া ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল ও ২৩ জুন ভারতে চিকিৎসার জন্য বাদীকে নিয়ে যান। সেখানেও তার সাথে রাতযাপন করেন আব্দুর রহমান। ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে তালাকনামা গোপন রেখে শারীরিক সম্পর্ক করা ধর্ষণের শামিল উল্লেখ করে বাদী ন্যায়বিচার পেতে আদালতে এ মামলা করেছেন।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার আব্দুল হালিম জানান, স্বামীর বিরুদ্ধে তালাকের তথ্য গোপন করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে এক নারী আদালতে মামলা করেছেন। মামলা নম্বর সিআর-৩০০/২১। বিচারক মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here