সবুজদেশ ডেক্সঃ এক সময় তিনি খাবার হোটেল চালাতেন। র‍্যাব বলছে, পরে তিনি ঝুঁকে পড়েন মাদক ব্যবসায়। একবার ভাটারা এলাকার বহুতল এক ভবনে পুলিশ তাঁকে ঘেরাও করলে পুলিশের এক সদস্যকে বেধড়ক মারধর করে ওই ভবন থেকে লাফ দেন তিনি। প্রাণে বেঁচে গেলেও মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। পরে কুঁজো হয়ে যান তিনি। তাঁর নাম মো. জাহাঙ্গীর আলম হলেও ওই ঘটনার পর ‘গুঁজা জাহাঙ্গীর’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। এই ‘গুঁজা জাহাঙ্গীর’ শুক্রবার দিবাগত রাতে র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

র‍্যাব-১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, রাজধানীর ভাটারার নুরেরচালা এলাকা থেকে মাদক ব্যবসায়ী ‘গুঁজা জাহাঙ্গীর’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে গোপন সংবাদ পেয়ে নুরেরচালার পশ্চিমপাড়ায় জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘরের দরজা খুলে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাঁর শয়নকক্ষে তল্লাশি চালিয়ে বিদেশি একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুটি গুলি, ১৯৭৫টি ইয়াবা বড়ি এবং দুটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে গুঁজা জাহাঙ্গীর ভাটারা এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। ভাটারার নতুন বাজার এলাকায় একসময় তাঁর খাবার হোটেলের ব্যবসা ছিল। ২০০৯ সালে বারিধারা জে-ব্লক তৈরির সময় জাহাঙ্গীরের হোটেল ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয় তাঁর। এরপর তিনি মাদক ব্যবসা শুরু করেন। চার বছর ধরে ভাটারা এলাকায় মাদকের ব্যবসা করছেন তিনি। প্রথমদিকে তিনি মাদকের খুচরা বিক্রেতা ছিলেন তিনি। পরে বেশি লাভের আশায় মাদকদ্রব্যের পাইকারি ব্যবসা শুরু করেন জাহাঙ্গীর।

র‍্যাব সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, তিনি ইয়াবার বিপুল পরিমাণ চালান নিজের ঘরে মজুত রাখেন। ইয়াবার এই চালান নুরেরচালা বোটঘাট এলাকার আরও কয়েক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রাজু, নার্গিস, সোলমাইদ এলাকার আনু, সোলমাইদ খন্দকার বাড়ির মনির এবং আমিরের কাছ থেকে সংগ্রহ করতেন জাহাঙ্গীর। এরপর তিনি সুমন (২৭) নামের এক যুবকের মাধ্যমে ইয়াবাসহ মাদকের চালান পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করতেন। এ ছাড়া জাহাঙ্গীরের ভাই ফারুক (৩০) ও ভাইয়ের স্ত্রী লাবণীও মাদক ব্যবসায় জড়িত। লাইসেন্সবিহীন অস্ত্র জাহাঙ্গীর তাঁর বিছানার তোশকের নিচে রাখেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করতেন তিনি। এ ধরনের অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন জাহাঙ্গীর। ভাটারা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে ১০টি মামলা রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here