ঝিনাইদহঃ

১১ বছর ধরে সুমাইয়া খানম নামে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক মেডিকেল সনদ দেখিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এই শিক্ষক স্বামী সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। কর্মস্থলে না এসেও তিনি প্রতি মাসেই বেতন তুলে নিচ্ছেন। ১১ বছর ধরে কি ভাবে মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে ছুটি ভোগ করে আসছেন এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ২৩ নং কচুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। চাকুরী জীবনের বেশীর ভাগ সময়ই শিক্ষক সুমাইয়া খানম মেডিকেল সার্টিফিকেট জোগাড় করে কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চাকরী করে যাচ্ছেন। শিক্ষক সুমাইয়া খানম চাকুরী বিধি অনুযায়ী সিভিল সার্জন অফিসের শারীরিক অক্ষমতার সার্টিফিকেট নিয়ে অবসরে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে কৈফিয়ত তলব এবং বিভাগীয় মামলা কোন কিছুই আটকিয়ে রাখতে পারেনি শিক্ষিকা সুমাইয়া খানমকে। বরং উপর মহলকে খুশি করে চাকরী টিকিয়ে রেখেছেন। সর্বশেষ গত বছরের ঈদুল আযহার আগে মেডিকেল ছুটি শেষ হলেই যোগদান করে র বোনাস নিয়ে আবার চম্পট দেন ঢাকায়। শিক্ষক সুমাইয়া খানম শৈলকুপার রতিডাঙ্গা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের কন্যা। তার স্বামী ঢাকায় মার্কেন্টাইল ব্যাংকে কর্মরত আছেন।

জানা গেছে, সুমাইয়া খানম ২০০১ সালের ২৯ মার্চ কচুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। কচুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিন আক্তার জানান, তিনি প্রধান শিক্ষক হিসাবে ২০০৯ সালে এই স্কুলে যোগদান করার পর থেকেই দেখে আসছেন সুমাইয়া খানমের মেডিকেল সার্টিফিকেটের কেরামতি। তিনি স্কুলে না আসলেও শিক্ষক হিসাবে তার পদ থাকায় সেখানে আর কেউ যোগদান করতে করতে পারছে না।

কর্মস্থলে না আসলেও ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খুলনা বিভাগীয় উপসহকারী পরিচালক এ,কে,এম গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে দেখা যায় সুমাইয়া খানমের সব কিছু সঠিক পন্থায় হওয়ায় তাকে পাওনাদি প্রদানের সুপারিশ করেন। ২০১৭ সালের ২৬ নভেম্বর তিনি আবার বিনা বেতনে চিকিৎসা ছুটির আবেদন করেন এবং ২০১৮ সালে ঢাকা থেকে একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী থেকে অব্যাহতি প্রদানের আবেদন জানান।

চাকুরীতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন জানান, সুমাইয়া খাতুন দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাকে বরখাস্তের প্রক্রিয়া চলছে।

কর্মস্থলে অনুপস্থিত নিয়ে শিক্ষক সুমাইয়া খানমের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, আমি কচুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তবে অনুপস্থিতির ব্যাপারে কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here