সবুজদেম ডেক্সঃ বুড়িগঙ্গা পাড়ের কামরাঙ্গীরচরে আজ মঙ্গলবার ১২০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ। কামরাঙ্গীরচরের নবাবচর মৌজায় হুজুরপাড়া, আশ্রাফাবাদ ও সাইনবোর্ড এলাকায় এই অভিযান চলে। এ সময় নদীর তীরভূমি দখল ও ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে তিনজনকে আটক করে জরিমানা করা হয়।

কংক্রিটের তৈরি অনেক স্থাপনাই আজ ভেঙে ফেলা হয়। ছবি: হাসান রাজা

আজ বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেন। কামরাঙ্গীরচরের হুজুরপাড়া এলাকায় আলাউদ্দিন মিয়ার একতলা সাতটি পাকা দোকান ও গোডাউন অপসারণের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান।কামরাঙ্গীরচরে উচ্ছেদ অভিযানের সময় ভেঙে ফেলা হয় অবৈধ স্থাপনা। আজ ছয় ঘণ্টা ধরে চলে এই উচ্ছেদ অভিযান। এ সময় একটি তিনতলা পাকা ভবন, ছয়টি দোতলা ভবন, ১১২টি ছোট-বড় টিনশেডের ছাপরা, টংঘরসহ ১২০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ ছাড়া নদীর তীরভূমি দখল ও ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে শাহ সিমেন্টের পরিবেশক আরাফাত ট্রেডিংয়ের দুই কর্মচারী আবুল কালাম (৪৮) ও লিটন ইসলামকে (৪৭) আটক করা হয়। এ সময় প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ফারুক হোসেন নামের এক দখলদারকে আটক করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।কংক্রিটের তৈরি অনেক স্থাপনাই আজ ভেঙে ফেলা হয়।সাইনবোর্ড এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর আগে আমরা এখানে ৫ কাঠা জমি কিনে সেখানে তিনতলা ও একতলার দুইটি পাকা ভবন নির্মাণ করেছি। আমাদের ভবন তিনটি নদীর জায়গায় পড়েনি। অথচ বিআইডব্লিউটিএর লোকজন আমাদের ভবনটি উচ্ছেদ করেছে।’

হুজুরপাড়া এলাকার জসিম উদ্দিন মিয়ার একতলা পাঁচটি পাকাঘর উচ্ছেদকালে জসিম মিয়া বলেন, ‘২৫ থেকে ৩০ বছর আগে এখানে ৭ কাঠা জমি কিনে আমি একটি একতলা পাকা ঘর নির্মাণ করেছিলাম। আমি নদীর জায়গা দখল করিনি। বিআইডব্লিউটিএর লোকজন নদীর জায়গা বলে আমার স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে।’

উচ্ছেদ অভিযানে এমন বড় স্থাপনাও ভেঙে ফেলা হয়। ছবি: হাসান রাজা

উচ্ছেদ অভিযানে এমন বড় স্থাপনাও ভেঙে ফেলা হয়। রাজাবিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফউদ্দিন বলেন, অবৈধ দখলদারদের নোটিশ দেওয়া হয়নি, এ অভিযোগটি সঠিক নয়। নদীর তীরে অবৈধ দখলদারদের তাঁদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে একাধিকবার নোটিশ ও মাইকিং করা হয়েছে। বরং তাঁরা সেটি কর্ণপাত করেননি।

আরিফউদ্দিন বলেন, কারও ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গার স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। নদীর জায়গাতেই গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

আজ উচ্ছেদ অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক, উপপরিচালক মিজানুর রহমান, সহকারী পরিচালক নুর হোসেন, মো. আসাদুজ্জামানসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here