বিশেষ প্রতিনিধিঃ

১৯ কোটি টাকার নির্মানাধীন ত্রুটিপুর্ন সড়কের তদন্তে এসে সাংবাদিক দেখেই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেন তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা। এ সময় ঘটনাস্থলে দাড়িয়ে থাকা ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও সহ স্থানীয় সাংবাদিকরা হতবাক হয়ে পড়েন। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে কালীগঞ্জ গান্না সড়কের আলাইপুর নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য’ নির্মাণের ৭ দিনের মাথায় ১৯ কোটি টাকার নতুন রাস্তাটির কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে মর্মে সমকাল সহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। এরই প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের হেড অফিস থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম ঘটঁনাস্থলে আসেন শুক্রবার।

ঢাকা থেকে আসা তদন্ত টিমের সাথে উপস্থিত কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্না রানী সাহা জানান, তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা কালীগঞ্জ থেকে গান্না হয়ে ঝিনাইদহের ডাকবাংলা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার নির্মানাধীন ত্রুটিপুর্ণ সড়কটি সরেজমিনে দেখতে আসেন। পথিমধ্যে তিনিও ওই টিমের সাথে যোগ দেন। তারা ওই সড়কের কাদিরকোল নামকস্থানে নেমে সড়কের কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। এরমধ্যে হাজির হন স্থানীয় সাংবাদিকগন।

সাংবাদিকগন তদন্ত টিমকে জানান, এখান থেকে আরো আধা কিলোমিটার দুরে সড়কটিতে পুরো কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। এ কথা শুনে টিমের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ওইস্থানে আসতে বলেন। কিন্তু তাদের কথামত সাংবাদিকরা ওইস্থানে গিয়ে দাড়িয়ে থাকলে ঢাকার টিমটি সেখানে না থেমে দ্রুত গতিতে গাড়ী চালিয়ে চলে যায়।

তবে রাতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপসচিব (বাজেট শাখা) মোঃ আব্দুল মোক্তাদের মুঠোফোনে সবুজদেশ নিউজকে বলেন, আমরা সড়কটির বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেছি। বিভিন্ন কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। এই ঠিকাদার যেসকল সড়ক নির্মাণ করেছে সেগুলোর কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। এই সড়ক নির্মাণের কাজে দুর্নীতি হয়েছে কিনা সেটা গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। আমরা আগামী তিনদিনের মধ্যে সচিব মহোদয়ের নিকট আমাদের প্রতিবেদন দাখিল করবো।

উল্লেখ্য, কালীগঞ্জ থেকে গান্না হয়ে ঝিনাইদহের ডাকবাংলা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার এ রাস্তার মজবুতিসহ ওয়ারিং এর কাজ চলছে তিন বছর ধরে। এরমধ্যে তিন কিলোমিটার পিচ কার্পেটিং কাজ সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু ৭ দিনের মধ্যে ওই সড়কের শ্রীরামপুর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশে রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে যায়। এছাড়া কোথাও বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে সে সময়ে সমকাল সহ বিভিন্ন পত্রিকাতে অনিয়মের খবর প্রকাশ হয়। এর দুইদিন পর কতৃপক্ষের নির্দ্দেশে রাস্তার কিছু অংশ ভেকু গাড়ী দিয়ে তুলে ফেলা হয়েছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, টেন্ডারে ওই রাস্তার কাজটি পান খুলনার মুজাহার এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার নির্মান ব্যয় ধরা হয় ১৯ কোটি টাকা। কিন্তু হাত বদল হয়ে রাস্তার কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম মিয়া।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here