২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচারে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করছে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এটি ছিল একটা নৃশংস হত্যাকাণ্ড। হামলায় আইভী রহমানসহ ২২ জনের প্রাণের প্রদীপ নিভে গেছে। সারা দেশ জানে, এই হামলা হাওয়া ভবনের পরিকল্পনায় হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা তো ওই দিন আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছেন। এ রকম একটা নির্মম, বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড যেখানে ঘটেছে, তার রায় হতে যাচ্ছে। কারা জড়িত, সেটা বিচারালয় সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। এখানে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।’

আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নির্মাণাধীন টানেল পরিদর্শন করে ওবায়দুল কাদের এই মন্তব্য করেন। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলটি নির্মিত হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আশা করি, বাস্তবতার নিরিখেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হবে। ঘটনা যা ঘটেছে, সেই নিরিখেই রায় হবে। বিচার বিভাগ তার স্বাধীন কার্যক্রমের আওতায় স্বাধীন সিদ্ধান্ত দেবে, রায় দেবে। এতে বিএনপির অনেক নেতারাও জড়িত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সুতরাং তাঁরা যদি কনভিকটেড (দণ্ডিত) হন, সামনে জাতীয় নির্বাচন, তাহলে তো বলাই যায় যে তাঁদের অস্তিত্ব কিছুটা সংকটের মুখে পড়বে।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি একটা বড় দল, তাদের অস্তিত্ব থাকবে। আমি বলছি, রাজনৈতিক অস্তিত্ব কিছুটা সংকটের মুখে পড়বে। সংকটে তো পড়তেই পারে। কারণ, বিএনপি গ্রেনেড হামলার দায় এড়াতে পারে না। ২১ আগস্টের কিলিংয়ে (হত্যাকাণ্ড) প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) টার্গেট ছিলেন। বিএনপি তখন ক্ষমতায়। সারা দেশ জানে, হাওয়া ভবনের পরিকল্পনার কথা। এগুলো এখন আর গোপন কোনো বিষয় নয়। বিএনপি তো দায় এড়াতে পারে না।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় দলের কেন্দ্রীয় মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২২ জন মারা যান। এই ঘটনায় করা মামলায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন নেতা আসামি। আগামী মাসে মামলাটির রায় ঘোষণা হতে পারে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমি অন্ধকারে ঢিল ছুড়ি না। কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে কেউ ইন্ধন দিয়ে থাকলে সেটা আস্তে আস্তে বের হবে। তবে এসব আন্দোলনে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল।’ তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের শুরুটা বাইরের ইন্ধনে হয়েছে, সেটা আমি মনে করি না। তবে পরে বাইরের ইন্ধন এবং উসকানি যুক্ত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, দুই কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুর পর যে আন্দোলন হয়েছে সেটা একেবারে যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু আন্দোলন যখন একটা পর্যায়ে গেছে, তখন শেষ সময়ে এসে ইন্ধন যুক্ত হয়েছে। এটাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা হয়েছে। গুজব সন্ত্রাস করে দেশে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতা আমীর খসরু সাহেব, তিনি কুমিল্লার নেতা-কর্মীদের ঢাকায় ডাকলেন। অথচ আন্দোলন ছিল নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের। ক্ষমতা দখলের জন্য আন্দোলনটা ছিল না। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতা দখলের জন্য নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে নিরাপদ রাস্তা খুঁজছিল। তাঁরা নিজেদের আন্দোলনে ব্যর্থতার পর শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করেছিলেন।’

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here