ঢাকা ০৮:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না

সবুজদেশ ডেস্ক:

 

অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।গত ১৯ সেপ্টেম্বর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ এ সংক্রান্ত আধ্যাদেশ জারি হতে পারে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

অধ্যাদেশটি জারি হলে দেশের কোনো আদালতে বৈধতার প্রশ্ন তুলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ বা বাতিল করা যাবে না। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার দিন পর্যন্তই বর্তমান সরকারের মেয়াদ থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়ার পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। চূড়ান্ত হলে নিয়মানুযায়ী অধ্যাদেশ আকারে আদেশ জারি করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ১৯৯৪ সালের ২৭ মার্চ জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টি একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে যেখানে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করে। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ গত ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর মাস দেড়েক পরেই ৩০ জুন সংসদে গৃহীত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। সেখানেই তিনি অবস্থান করছেন। বিশেষ পরিস্থিতিতে গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। তবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হওয়ায় বর্তমানে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা এবং প্রধান উপষ্টো বা উপদেষ্টার পরিষদ বলে কিছুই নেই।

এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি ভিত্তি নিয়ে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, সে জন্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশে বিলুপ্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টাদের মতোই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় উপদেষ্টাদের সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া থাকলেও এখন উপদেষ্টাদের সর্বোচ্চ সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে না। আইন ও বিচার বিভাগ থেকে প্রণীত অধ্যাদেশের খসড়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছে, যে তারিখে প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, সেই তারিখ থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী তার কার্যভার গ্রহণ করার তারিখ পর্যন্ত অন্তর্ববর্তী সরকার বহাল থাকবে। এর আগে সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মেয়াদ ছিল ৯০ দিন।

সবজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪
২৬ Time View

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না

আপডেট সময় : ০৬:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪

 

অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।গত ১৯ সেপ্টেম্বর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ এ সংক্রান্ত আধ্যাদেশ জারি হতে পারে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

অধ্যাদেশটি জারি হলে দেশের কোনো আদালতে বৈধতার প্রশ্ন তুলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ বা বাতিল করা যাবে না। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার দিন পর্যন্তই বর্তমান সরকারের মেয়াদ থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়ার পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। চূড়ান্ত হলে নিয়মানুযায়ী অধ্যাদেশ আকারে আদেশ জারি করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ১৯৯৪ সালের ২৭ মার্চ জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টি একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে যেখানে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করে। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ গত ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর মাস দেড়েক পরেই ৩০ জুন সংসদে গৃহীত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকার।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। সেখানেই তিনি অবস্থান করছেন। বিশেষ পরিস্থিতিতে গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। তবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হওয়ায় বর্তমানে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা এবং প্রধান উপষ্টো বা উপদেষ্টার পরিষদ বলে কিছুই নেই।

এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি ভিত্তি নিয়ে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, সে জন্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশে বিলুপ্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টাদের মতোই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় উপদেষ্টাদের সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া থাকলেও এখন উপদেষ্টাদের সর্বোচ্চ সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে না। আইন ও বিচার বিভাগ থেকে প্রণীত অধ্যাদেশের খসড়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছে, যে তারিখে প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, সেই তারিখ থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী তার কার্যভার গ্রহণ করার তারিখ পর্যন্ত অন্তর্ববর্তী সরকার বহাল থাকবে। এর আগে সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মেয়াদ ছিল ৯০ দিন।

সবজদেশ/এসইউ