ঢাকা ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপহরণ করে চাঁদা আদায়

Reporter Name

অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই ছাত্র আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) জবানবন্দি রেকর্ড করে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

দুজন আসামি হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের নবম ব্যাচের গণিত বিভাগের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম রিয়াদ (২২) ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের দশম ব্যাচের ছাত্র নূর-ই-আলম নিশান (২১)।

তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মওতুত হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

মামলার তথ্য বলছে, আবু সাহেদুল ইসলাম নামের এক দোকান কর্মচারী মালামাল কেনার জন্য গত বৃহস্পতিবার সদরঘাটে আসেন। তাঁর কাছে ছিল ২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। কেনাকাটা শেষে তিনি যখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসেন, তখন অজ্ঞাত কিছু লোক তাঁকে রাস্তা থেকে অপহরণ করে আটকে রাখেন। পরে সাহেদুলের মালিক রওশন পারভেজের কাছে চাঁদা চান। এ ঘটনায় রওশন পারভেজ বাদী হয়ে সেদিনই কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

১০ আগস্ট রিয়াদ ও নিশান নামের দুই ছাত্রকে আদালতে হাজির করে ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আদালতকে সেদিন পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সাহেদুলকে অপহরণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বাণিজ্য বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব কোণের চিপা গলিতে নিয়ে মারধর করে সাহেদুলের মালিক রওশন পারভেজের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। পরে বাদীকে আসামিরা বিকাশ নম্বর দেন। সেই নম্বরের সূত্র ধরে দুজনকে নাসির উদ্দিন সরদার লেক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

১২ আগস্ট রিয়াদ ও নিশানকে আদালতে হাজির করে তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন জানায় পুলিশ। সেদিন পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে, ভুক্তভোগী দোকানের কর্মচারী সাহেদুলকে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির নবম ব্যাচের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র খালিদ হাসান অপহরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে নিয়ে যান। এ ঘটনায় তাঁর সহযোগী হিসেবে জড়িত ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মঞ্জুর আহমেদ মিলন, দশম ব্যাচের ফিন্যান্স বিভাগের মোবারক হোসেন (২২), দশম ব্যাচের গণিত বিভাগের আকাশ (২২) এবং ১২তম ব্যাচের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সৌরভ (২১)।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণ ও চাঁদা আদায়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে কোন দুই ছাত্র, তাঁদের নাম-পরিচয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বলেন, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে।

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৮
৩২০ Time View

অপহরণ করে চাঁদা আদায়

আপডেট সময় : ১০:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৮

অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই ছাত্র আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) জবানবন্দি রেকর্ড করে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

দুজন আসামি হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের নবম ব্যাচের গণিত বিভাগের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম রিয়াদ (২২) ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের দশম ব্যাচের ছাত্র নূর-ই-আলম নিশান (২১)।

তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মওতুত হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

মামলার তথ্য বলছে, আবু সাহেদুল ইসলাম নামের এক দোকান কর্মচারী মালামাল কেনার জন্য গত বৃহস্পতিবার সদরঘাটে আসেন। তাঁর কাছে ছিল ২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। কেনাকাটা শেষে তিনি যখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসেন, তখন অজ্ঞাত কিছু লোক তাঁকে রাস্তা থেকে অপহরণ করে আটকে রাখেন। পরে সাহেদুলের মালিক রওশন পারভেজের কাছে চাঁদা চান। এ ঘটনায় রওশন পারভেজ বাদী হয়ে সেদিনই কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

১০ আগস্ট রিয়াদ ও নিশান নামের দুই ছাত্রকে আদালতে হাজির করে ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আদালতকে সেদিন পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সাহেদুলকে অপহরণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বাণিজ্য বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব কোণের চিপা গলিতে নিয়ে মারধর করে সাহেদুলের মালিক রওশন পারভেজের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। পরে বাদীকে আসামিরা বিকাশ নম্বর দেন। সেই নম্বরের সূত্র ধরে দুজনকে নাসির উদ্দিন সরদার লেক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

১২ আগস্ট রিয়াদ ও নিশানকে আদালতে হাজির করে তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন জানায় পুলিশ। সেদিন পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে, ভুক্তভোগী দোকানের কর্মচারী সাহেদুলকে সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির নবম ব্যাচের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র খালিদ হাসান অপহরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে নিয়ে যান। এ ঘটনায় তাঁর সহযোগী হিসেবে জড়িত ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মঞ্জুর আহমেদ মিলন, দশম ব্যাচের ফিন্যান্স বিভাগের মোবারক হোসেন (২২), দশম ব্যাচের গণিত বিভাগের আকাশ (২২) এবং ১২তম ব্যাচের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সৌরভ (২১)।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণ ও চাঁদা আদায়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে কোন দুই ছাত্র, তাঁদের নাম-পরিচয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বলেন, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে।