অসহায়ের বয়স্ক ভাতার টাকা চুরি করলেন মেম্বর
সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
অন্যের জমিতে খুপড়ি ঘর তৈরী করে বসবাস শহিদ সরদার। একদিকে অসহায় অন্যদিকে বয়স্ক হওয়ায় একটি বয়স্কভাতার কার্ড পান তিনি। তবে সেই কার্ডের ছয় মাসের টাকাই চুরি করে নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। এখন টাকা চাইলেই ওই ইউপি সদস্য বলছেন, ও টাকার চিন্তা তুমি বাদ দাও।
ঘটনাটি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের। ৩ নং ওয়ার্ডের মাছখোলা ক্লাব মোড় এলাকার বাসিন্দা শহিদ সরদার। পরের জমিতে একটি ঘর তৈরী করে বসবাস করছেন সেখানে। শ্রমিকের কাজ করেই জীবন চলে তার। ২০১৩ সালে একটি বয়স্কভাতার কার্ড পান বৃদ্ধ শহিদ। এই বয়স্কভাতার কার্ড নিয়েই পড়েছেন বিপাকে।
বয়স্কভাতার কার্ডের টাকা না পেয়ে চার মাস ধরে ঘুরেছেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বরের কাছে। তবে কোন সুরহা হয়নি। অবশেষে সরণাপন্ন হয়েছেন সাংবাদিকের।
নিজের অসহায়ত্ব ও বয়স্কভাতার কার্ডের টাকা চুরির বিষয়ে শহিদ সরদার জানান, আমি অন্যের জমিতে ছোট্ট একটি ঘর বেঁধে বসবা করি। নিজের কোন জমি জায়গা নেই। দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নিবাহ করি। আমার অসহায়ত্ব দেখে ও বয়স বেশী হওয়ায় আমাকে একটি বয়স্কভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়। বছরে একবারে তিন হাজার টাকা পাই। আবার কখনো ৬ মাসে ১৫শত টাকা করে পাই। তবে গত ৬ মাসের টাকা আমি পাইনি। আমার টাকা তুলে নিয়েছেন মধু মেম্বর। টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে নলতা ব্রক্ষরাজপুর জনতা ব্যাংকে গিয়েছিলাম। ব্যাংক থেকে বলেছে ম্যানেজার বলেছে, আপনার টাকা মেম্বর নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এরপর মধু মেম্বরের কাছে গেলে ১৫শত টাকা দেওয়ার কথা বলে চার মাস ধরে ঘুরাচ্ছে। চেয়ারম্যানকে বলেছি, চেয়ারম্যান বলেছে যেভাবে পারো আদায় করে নাও। আমি আবার টাকা ফেরৎ চাই। গরীব মানুষের টাকা চুরির জন্য মেম্বরের শাস্তি চাই।
তবে বৃদ্ধের বয়স্কভাতার টাকা উত্তোলনের বিষয়ে ফিংড়ি ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মধুসুদন মন্ডল বলেন, আমি কারো টাকা তুলে নেয়নি। আর ব্যাংক একজনের টাকা আমার কাছে দেবে কেন?
এ বিষয়ে জানতে ফিংড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে, সাতক্ষীরা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক দেবাশীষ সরদার বলেন, বৃদ্ধের বয়স্কভাতার টাকা মেম্বর তুলে নিল কিভাবে ? সমাজসেবা অধিদপ্তর শুধু তালিকা প্রস্তুত করে দেয়। পরে নিজ নিজ ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা লেনদেন হয়। মেম্বর টাকা চুরি বা আত্নসাৎ করলে দায়ী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও মেম্বর। বিষয়টি সমাজসেবার স্থানীয় কর্মকর্তাকে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হবে।
তবে এ বিষয়ে জানতে জনতা ব্যাংকের নলতা ব্রক্ষরাজপুর শাখায় যোগাযোগ করা হলেও ব্যাংক ম্যানেজার ফোনকল রিসিভ করেননি।
তবে শহিদ সরদারকে ব্যাংক ম্যানেজার জানিয়েছেন, টাকা মেম্বর তুলে নিয়ে গেছে। আমাদের কিছু করার নেই।