মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণের পর মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিটু শেখ পেশায় রাজমিস্ত্রি। স্বভাবে শান্ত প্রকৃতির। মেশেন না তেমন কারো সাথে। তবে তার মনের মধ্যে কী চলে তা বোঝা মুশকিল। স্থানীয়রা বলছেন, হিটু শেখের চারিত্রিক দুর্বলতার কথা নতুন নয়। পূর্বে একাধিকবার শ্লীলতাহানির সঙ্গে তার জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে সালিশি বৈঠকে তাকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বাসিন্দা জানান, গত বছর রমজান মাসে গোসল করার সময় হিটু শেখ প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে জড়িয়ে ধরেন। ওই সময় ভুক্তভোগী গৃহবধূ চিৎকার দিলে হিটু শেখ দৌড়ে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ করেন নিজনান্দুয়ালী এলাকার পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কমিশনার। শালিসের রায়ে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ‘জুতাপেটা’ করা হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, কিছুদিন আগে নিজের ছেলে সজিবের স্ত্রীকেও একা পেয়ে জড়িয়ে ধরেন হিটু শেখ। এ নিয়ে মনমালিন্য হলে হিটু শেখের স্ত্রী তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
মনিরুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা সমকালকে বলেন, হিটু শেখ স্বভাবে শান্ত প্রকৃতির। এলাকায় কারো সঙ্গে মিশত না। রাজনৈতিক দলের কোনো পদ-পদবী না থাকলেও হিটু শেখ আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিল।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়ুব আলী বলেন, ‘শুনেছি হিটু শেখ আগে থেকেই চরিত্রহীন। রিমান্ডে এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয় আট বছরের শিশুটি। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চারজনের নামে মামলা করেন। ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সবুজদেশ/এসইউ