সবুজদেশ ডেস্কঃ

মেহেরী তিলাত স্বর্ণার জন্ম ঝিনাইদহে। তিনি এমবিএ সম্পন্ন করেছেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। সংসার ও পড়াশোনার পাশাপাশি আচার তৈরি সাবলম্বী হয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন তার সফলতার কথা।

কেমন কেটেছে আপনার শৈশব ও কৈশোর?
মেহেরী তিলাত স্বর্ণা: আমার ছোটবেলা কেটেছে ঝিনাইদহ শহরে। আমার দাদাবাড়ি সেখানে। এরপর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎ করেই বরিশালে শিফট হই। এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত বরিশাল ছিলাম। ছোটবেলার দিনগুলো অন্যরকম সুন্দর ছিল।

শিক্ষাজীবনের গল্প শুনতে চাই। পড়াশোনায় কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল কি?
মেহেরী তিলাত স্বর্ণা: ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। এরপর বরিশাল কলেজিয়েট স্কুলে অষ্টম শ্রেণি থেকে এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত পড়াশোনা করি। উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করি ঝিনাইদহ কে সি কলেজ থেকে। বিবিএ এবং এমবিএ করেছি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে।

কেমন ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন? ক্যারিয়ার যাত্রার গল্প ও জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো শুনতে চাই—
মেহেরী তিলাত স্বর্ণা: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরেই বিয়ে হয়ে যায়। তখন আসলে লেখাপড়া করে ক্যারিয়ার কোন দিকে আগাবে, এসব চিন্তা আমার মাথায় আসেনি। তবে পড়াশোনা শেষ করতে হবে—এটা নিয়ে একদম ডিটারমাইন্ড ছিলাম। তবে আমার স্বামীর সহযোগিতা ছিল অনেক। বিবিএ তৃতীয় বর্ষে আমার মেয়ের জন্ম হয়, তখন পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়াই কষ্টকর ছিল। আমার আব্বু, আম্মু, বোন এবং ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা অকল্পনীয় সহযোগিতা করেছে। তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। সবার সহযোগিতায় স্নাতক সম্পন্ন করেছি।

এতদিন মেয়েকে ঠিকভাবে সময় দিতে পারিনি। তাই পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু ভাবছিলাম না। তবে কিছু একটা করার আগ্রহ ছিল খুব। আমার বানানো আচার খেয়ে সবাই অনেক প্রশংসা করত। এছাড়া আমি একজন নিয়মিত অনলাইন ক্রেতা। তাই ভাবলাম, একটা পেজ ওপেন করি। কিন্তু সাহস পাচ্ছিলাম না। পরে অনলাইনে পরিচিত এক আপু আমার আচার খেয়ে খুব পছন্দ করলেন। তিনিই আমাকে উৎসাহ দিলেন পেজ খোলার জন্য। এ জন্য সচি আপুকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এরপর চলতি বছরের ১২ এপ্রিল ‘সুইট অ্যান্ড সাওয়ার বাই স্বর্ণা’ পেজটি ওপেন করি। শুরু থেকেই ভালো রেসপন্স পেতে শুরু করি।

যারা আপনার মতো কাজ করতে চান, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
মেহেরী তিলাত স্বর্ণা: অনলাইন বিজনেসে আমি একদমই নতুন। বলতে গেলে কিছুই জানি না। অনেক কিছু শেখার আছে আমার। তবে যদি কেউ শুরু করতে চান, সেটা যে কোন প্রডাক্টই হোক না কেন—সাহস, পরিশ্রম, ধৈর্য আর সততা থাকা চাই। সবার দোয়া আর ভালোবাসা থাকলে বহুদূর যাওয়া যায়।

কারো কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কি?
মেহেরী তিলাত স্বর্ণা: নিজে কিছু একটা করব—ইচ্ছা থেকেই কাজটা শুরু করা। আমার স্বামীর কাছ থেকে অনেক অনুপ্রেরণা আর সহযোগিতা পেয়েছি। এছাড়া আমার কাস্টমার যারা আছেন, তারাই হচ্ছেন অনুপ্রেরণার প্রধান কারণ। তাদের রিভিউগুলো খুব অনুপ্রেরণা দেয়।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মেহেরী তিলাত স্বর্ণা: খুব ছোট পরিসর আমার কাজের। আচার বানানোর সব কাজই আমি একা হাতে করি। পরিচ্ছন্নতাকে প্রাধান্য দেই সবার আগে। ভবিষ্যতে কাজটা আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে চাই। আশা রাখি, একদিন সবার কাছে আমার বানানো আচার পৌঁছাবে। তবে আচারের স্বাদ ও মান অক্ষুণ্ন থাকবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here