আজকের শিশুরাই হবে আগামী দিনের কর্ণধার: প্রধানমন্ত্রী
সবুজদেশ ডেস্ক:
আজকের শিশুরাই সোনার বাংলার আগামী দিনের কর্ণধার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা শিশুদের জন্য একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে যেতে চাই। এজন্য আমি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও করে দিয়েছি। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই মর্যাদা ধরে রেখে আগামী দিনে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো। এটা আমাদের অঙ্গীকার।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের ১নং গেটে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী, জাতীয় শিশু দিবস ও মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই টুঙ্গিপাড়ার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। এই মাটির ধুলোমাটি মেখে হেসে খেলে বড় হয়েছেন। এই মাটি থেকেই শিখেছেন মানুষকে ভালোবাসতে। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে। মানুষের জন্য তিনি কীভাবে একটি উন্নত জীবন দেবেন এই শিক্ষাটাও তার এই মাটি থেকে পাওয়া। আবার এই মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত। তারই নেতৃত্বে পেয়েছি স্বাধীনতা, আত্মমর্যাদা, আত্মপরিচয় ও একটি রাষ্ট্র। আমি আজ জাতির পিতার প্রতি আমার শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না কী অপরাধ ছিল তার। এই দেশকে ভালোবেসেছিলেন আমার বাবা। দেশের মানুষকে ভালোবেসেছিলেন। এই দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। যেন এদেশের মানুষ ভবিষ্যতে উন্নত জীবন পায়। সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের জন্য।
সব শিশুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদেরও গভীরভাবে ভালোবাসতেন। এদেশের অগণিত শোষিত-বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে গিয়ে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন কিন্তু সেই কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি। শিশুদের জাতির পিতা অত্যন্ত ভালোবাসতেন। ভালোবাসতেন বলেই আমরা ১৭ মার্চকে শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা দিই। কারণ স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান দিয়েছিলেন সেই সংবিধানে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। এছাড়া শিশু অধিকার আইনও তিনি করে দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে শিশুদের সুরক্ষার জন্য কেয়ার অ্যান্ড প্রটেকশন সেন্টার, যা বর্তমানে সরকারি শিশু পরিবার নামে পরিচিত সেটা তিনি প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছিলেন।
শিশুদের খেলাধুলার আগ্রহ বাড়াতে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করে দিয়েছি। সেখানে শিশুরা খেলাধুলা করতে পারবে, প্রতিযোগিতা করতে পারবে। আন্তঃস্কুল খেলাধুলা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক চর্চা ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে শুরু থেকেই তারা নানা ধরনের শিক্ষা পেতে পারে সেই ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিশুরা সুরক্ষিত থাকবে, সুন্দর জীবন পাবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন নিয়ে তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী শুরু করেছিলাম। যে অনুষ্ঠানগুলো করার কথা ছিল সেভাবে করতে পারিনি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আমরা সবকিছু ভার্চুয়ালি করেছি। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেছি। ২০২২ সালের ১৭ মার্চ আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ পালিত হবে। ২১ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে লোকজ মেলা আয়োজন করা হয়েছে।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানান। পরে আয়োজিত কর্মসূচি শেষ করে হেলিকপ্টারযোগে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।