আজ জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্তে সর্বদলীয় বৈঠক
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে একটি সর্বদলীয় বৈঠক করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে এই বৈঠক। এক্ষেত্রে কবে ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে, তা বৃহস্পতিবার স্পষ্ট হবে। ওই ঘোষণাপত্রের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকার একটি আইনি ডকুমেন্ট প্রস্তুত করার চিন্তা করছে। আগামী নির্বাচনে যারাই জয়ী হোক, এই ঘোষণাপত্রকে ধারণ করবেন।
মাহফুজ আলম বলেন, আশা করি বৃহস্পতিবার এই বৈঠকের ভেতর দিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি দলিল প্রণীত হবে। সেদিনই স্পষ্ট হবে কবে ঘোষণাপত্রটি জারি হবে এবং সরকার কীভাবে ঘোষণাপত্র জারি করার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীরা জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে চেয়েছিল। পরে সরকার বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। গত পনেরো দিন জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আমরা কাজ করেছি। শিক্ষার্থীদের ঘোষণাপত্র অবলম্বনে উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি খসড়া প্রস্তুতের চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া বিভিন্ন নারী সংগঠন, শিক্ষক সংগঠন, শিক্ষার্থীদের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেছি। মাহফুজ আলম, আমরা জানতে পেরেছি তারা সবাই জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে একমত। অর্থাৎ ঘোষণাপত্র দিতে হবে। কিন্তু কবে ঘোষণা হবে বা এর ভেতরে কী কনটেন্ট থাকবে, সে বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারিনি। তবে এটা নিয়ে বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং পক্ষকে আমরা বৈঠকের কথা বলেছি। কীভাবে এটা করা সম্ভব এ ব্যাপারে তাদের কাছ থেকে মন্তব্য পেয়েছি।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। এ ঘোষণাপত্র নিয়ে তখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। হঠাৎ ঘোষণাপত্রের বিষয়টি কেন সামনে আনা হলো, এর প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং তখন এ উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সম্পৃক্ত নয় বলে উল্লেখ করেছিল। তবে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই রাতে বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর শহিদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
সবুজদেশ/এসইউ