ঢাকা ০৫:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমার স্বামী বিয়ের পরও প্রচুর প্রেম করেছে: মৌসুমী

সবুজদেশ ডেস্ক:

ছবি সংগৃহীত-

 

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বড় বৈশিষ্ট্য হলো তিনি সবাইকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করেন। কারণ তার গুরু তরুণ মজুমদার সবাইকে আপনি বলতেন। সেটি এখনো অনুসরণ করছেন তিনি। এ অভিনেত্রী অনেক নায়কের সঙ্গে কাজ করেছেন। সেই ধর্মেন্দ্র থেকে শুরু করে জিতেন্দ্র কিংবা বিনোদ খান্না বা অমিতাভ বচ্চন কিংবা রাজেশ খান্না—সবার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু শাহরুখ খানের কথা বলেননি অভিনেত্রী।

অভিনেত্রী মৌসুমী দক্ষিণ কলকাতার একটি পুরোনো বাড়িতে ‘আড়ি’ ছবির শুটিং করছেন। সে কারণে মুম্বাই থেকে এখন তিনি কলকাতায়। একটি সংবাদমাধ্যমে শুটিংয়ের ফাঁকে জীবনের নানান গল্প বলেছেন অবলীলায়। তারই চুম্বক অংশ যুগান্তর পাঠকদের মাঝে তুলে ধরা হলো—

মৌসুমী বলেন, অনেকের সঙ্গেই কাজ করেছি। এ ক্ষেত্রে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে যখন কাজ করি, তখন সে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। শুরুর দিকে দেখতাম, সেটে শটের বাইরে চুপচাপ একলা বসে আছেন। আমার কেশসজ্জা শিল্পীর সঙ্গে বসে খাবার খাচ্ছেন। খুব কষ্ট করে বড় হয়েছেন, কিন্তু বড় হয়ে যে ভালো হয়েছে, তা নয়। অতিরিক্ত জিনিস পেলে ঠিক থাকে না মানুষ। এটা আমার কথা নয়; বড়রা বলে গেছেন। পুরাণেও তা-ই আছে। আতিশয্য এসে গেলে কারও উপকার করার কথা ভাবতেই পারেন না মানুষ।

অভিনেত্রীর বড় মেয়ে কম বয়সেই প্রয়াত হয়েছেন, সেই আঘাত কীভাবে সামলেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, যদি আধ্যাত্মিক পথে থাকো, কিছু এসে-যাবে না। দুঃখকে আমি কখনো বড় করতে চাই না। নিজের আনন্দ, সুখ যদি কারও সঙ্গে শেয়ার করে নিতে পারো, তাহলে সেটি করো। মানুষ বলবে ‘পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়। তিনি বলেন, আমার বড় মেয়ে পায়েলের মৃত্যুবার্ষিকী গেল কিছু দিন আগে। পায়েল খুব অল্প বয়সে চলে গেল; কিন্তু বেঁচে থাকলে আরও ভুগতে হতো ওকে। আমি এভাবেই নিজেকে বুঝিয়েছি। বাবা তো বলতেন— মৃত্যু একটা আশীর্বাদ। জীবন-মৃত্যু মেনে নিয়েই নিজেকে ভালো রাখতেই হবে।

বর্তমানের রিল বা শর্টস ভিডিও তৈরিকারীদের পছন্দ নয় মৌসুমীর। বরং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো সহজ মানুষের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তার মতো মানুষ হয় না। ওই সাদা হাফহাতা শার্ট আর ধুতি। কেন জানি না মানুষ এগুলো শেখে না।

মেয়েদের সাজগোজ করা খুব পছন্দ অভিনেত্রীর। তিনি বলেন, মেয়েরা সাজলে হাসিখুশি লাগে। ব্যক্তিত্ব ও শিষ্টাচার চোখে পড়লেও ভালো লাগে। আমাদের সময় বিনোদ খান্না, ধর্মেন্দ্র উঠে চেয়ার এগিয়ে দিতেন। মৌসুমী বলেন, এখনকার অভিনেতারা কি হিট দিয়েছে কি দেয়নি, কি হাবভাব— চকলেট খাচ্ছে আর পা দোলাচ্ছে। তাদের ঘিরে আছে আবার বাউন্সারও। তিনি বলেন, আমাকেও বডিগার্ডের কথা বলা হয়েছিল। তবে আমার যা দেহ, তা রক্ষায় দেহরক্ষীর প্রয়োজন নেই।

আপনি অনেক নায়কের সঙ্গে কাজ করেছেন। কিন্তু শাহরুখের কথা বলেননি। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, শাহরুখকে আমি ততটা ভালো করে চিনি না। তবে আমির খান যেমন বলেছিল— ও আমার অনুরাগী। সাইফ আলি খানের সঙ্গে কাজ করেছি। তবে আমাদের মধ্যে একজন নায়ক ছিলেন, যে ভীষণ অহংকারী— রাজেশ খান্না। এত পেয়েছে, মাথা ঠিক থাকবে কীভাবে।

জীবনে কোনো আক্ষেপ নেই উল্লেখ করে মৌসুমী বলেন, দুঃখটা আসলে তোমার হাতে, যতক্ষণ ধরে রাখবে রাখো, হাতে ব্যথা হবে তার পরও। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা কর, আমি যেন নিজেকে আনন্দে রাখতে পারি। আমি আজ আছি, কাল নেই। নিজেরা ভালো করে কাজ কর।

প্রেমজীবনের কাহিনি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি তো সবসময় প্রেম করি। আমার বর, আমি দুজনেই খুব রোমান্টিক মানুষ। আমার স্বামী তো বিয়ের পরও প্রচুর প্রেম করেছে। আমি তো প্রেম করার সময় পাইনি। তবে ফ্ল্যাট করেছি প্রচুর। শাবানা আজমি আমাকে বলেছে— ছয় বছর হোক কি ষাট বছর, মৌসুমী সবার সঙ্গে ফ্ল্যাট করে যাবে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০৪:১৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
৯ Time View

আমার স্বামী বিয়ের পরও প্রচুর প্রেম করেছে: মৌসুমী

আপডেট সময় : ০৪:১৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

 

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বড় বৈশিষ্ট্য হলো তিনি সবাইকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করেন। কারণ তার গুরু তরুণ মজুমদার সবাইকে আপনি বলতেন। সেটি এখনো অনুসরণ করছেন তিনি। এ অভিনেত্রী অনেক নায়কের সঙ্গে কাজ করেছেন। সেই ধর্মেন্দ্র থেকে শুরু করে জিতেন্দ্র কিংবা বিনোদ খান্না বা অমিতাভ বচ্চন কিংবা রাজেশ খান্না—সবার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু শাহরুখ খানের কথা বলেননি অভিনেত্রী।

অভিনেত্রী মৌসুমী দক্ষিণ কলকাতার একটি পুরোনো বাড়িতে ‘আড়ি’ ছবির শুটিং করছেন। সে কারণে মুম্বাই থেকে এখন তিনি কলকাতায়। একটি সংবাদমাধ্যমে শুটিংয়ের ফাঁকে জীবনের নানান গল্প বলেছেন অবলীলায়। তারই চুম্বক অংশ যুগান্তর পাঠকদের মাঝে তুলে ধরা হলো—

মৌসুমী বলেন, অনেকের সঙ্গেই কাজ করেছি। এ ক্ষেত্রে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে যখন কাজ করি, তখন সে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। শুরুর দিকে দেখতাম, সেটে শটের বাইরে চুপচাপ একলা বসে আছেন। আমার কেশসজ্জা শিল্পীর সঙ্গে বসে খাবার খাচ্ছেন। খুব কষ্ট করে বড় হয়েছেন, কিন্তু বড় হয়ে যে ভালো হয়েছে, তা নয়। অতিরিক্ত জিনিস পেলে ঠিক থাকে না মানুষ। এটা আমার কথা নয়; বড়রা বলে গেছেন। পুরাণেও তা-ই আছে। আতিশয্য এসে গেলে কারও উপকার করার কথা ভাবতেই পারেন না মানুষ।

অভিনেত্রীর বড় মেয়ে কম বয়সেই প্রয়াত হয়েছেন, সেই আঘাত কীভাবে সামলেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, যদি আধ্যাত্মিক পথে থাকো, কিছু এসে-যাবে না। দুঃখকে আমি কখনো বড় করতে চাই না। নিজের আনন্দ, সুখ যদি কারও সঙ্গে শেয়ার করে নিতে পারো, তাহলে সেটি করো। মানুষ বলবে ‘পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়। তিনি বলেন, আমার বড় মেয়ে পায়েলের মৃত্যুবার্ষিকী গেল কিছু দিন আগে। পায়েল খুব অল্প বয়সে চলে গেল; কিন্তু বেঁচে থাকলে আরও ভুগতে হতো ওকে। আমি এভাবেই নিজেকে বুঝিয়েছি। বাবা তো বলতেন— মৃত্যু একটা আশীর্বাদ। জীবন-মৃত্যু মেনে নিয়েই নিজেকে ভালো রাখতেই হবে।

বর্তমানের রিল বা শর্টস ভিডিও তৈরিকারীদের পছন্দ নয় মৌসুমীর। বরং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো সহজ মানুষের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তার মতো মানুষ হয় না। ওই সাদা হাফহাতা শার্ট আর ধুতি। কেন জানি না মানুষ এগুলো শেখে না।

মেয়েদের সাজগোজ করা খুব পছন্দ অভিনেত্রীর। তিনি বলেন, মেয়েরা সাজলে হাসিখুশি লাগে। ব্যক্তিত্ব ও শিষ্টাচার চোখে পড়লেও ভালো লাগে। আমাদের সময় বিনোদ খান্না, ধর্মেন্দ্র উঠে চেয়ার এগিয়ে দিতেন। মৌসুমী বলেন, এখনকার অভিনেতারা কি হিট দিয়েছে কি দেয়নি, কি হাবভাব— চকলেট খাচ্ছে আর পা দোলাচ্ছে। তাদের ঘিরে আছে আবার বাউন্সারও। তিনি বলেন, আমাকেও বডিগার্ডের কথা বলা হয়েছিল। তবে আমার যা দেহ, তা রক্ষায় দেহরক্ষীর প্রয়োজন নেই।

আপনি অনেক নায়কের সঙ্গে কাজ করেছেন। কিন্তু শাহরুখের কথা বলেননি। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, শাহরুখকে আমি ততটা ভালো করে চিনি না। তবে আমির খান যেমন বলেছিল— ও আমার অনুরাগী। সাইফ আলি খানের সঙ্গে কাজ করেছি। তবে আমাদের মধ্যে একজন নায়ক ছিলেন, যে ভীষণ অহংকারী— রাজেশ খান্না। এত পেয়েছে, মাথা ঠিক থাকবে কীভাবে।

জীবনে কোনো আক্ষেপ নেই উল্লেখ করে মৌসুমী বলেন, দুঃখটা আসলে তোমার হাতে, যতক্ষণ ধরে রাখবে রাখো, হাতে ব্যথা হবে তার পরও। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা কর, আমি যেন নিজেকে আনন্দে রাখতে পারি। আমি আজ আছি, কাল নেই। নিজেরা ভালো করে কাজ কর।

প্রেমজীবনের কাহিনি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আমি তো সবসময় প্রেম করি। আমার বর, আমি দুজনেই খুব রোমান্টিক মানুষ। আমার স্বামী তো বিয়ের পরও প্রচুর প্রেম করেছে। আমি তো প্রেম করার সময় পাইনি। তবে ফ্ল্যাট করেছি প্রচুর। শাবানা আজমি আমাকে বলেছে— ছয় বছর হোক কি ষাট বছর, মৌসুমী সবার সঙ্গে ফ্ল্যাট করে যাবে।

সবুজদেশ/এসইউ