ঢাকা ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমিরের দায়িত্ব আমার কাছে দিন, এরপর দেখবেন চমক : শোয়েব আখতার

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

পাকিস্তানের বর্তমান টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর রাগে, ক্ষোভে অভিমানে বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির অন্যতম সেরা পেসার মোহাম্মদ আমির।

মাত্র ২৮ বছর বয়সে অবসর নেয়ার কারণ তিনি লুকিয়ে রাখেননি। মিডিয়ার সামনে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি মানসিক নির্যাতনের শিকার। এ কারণে বর্তমান ম্যানেজমেন্টের অধীনে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবো না।’

মোহাম্মদ আমিরের হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে অবাক পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটাররা। সম্প্রতি সব ইস্যুতে মতামত দেয়া শোয়েব আখতার মোহাম্মদ আমিরের এই পরিণতির জন্য তুমুল সমালোচনা করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের।

আমিরের এই ঘোষণা আসার কিছুক্ষণ পর তার অবসর নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পিসিবিও। এরপর বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন শোয়েব আখতার। তিনি সরাসরি পিসিবিকে প্রস্তাব দিয়েছেন, মোহাম্মদ আমিরের দায়িত্ব তার কাছে দিতে। এরপর আমিরকে তিনি শুধু ট্র্যাকেই নিয়ে আসবেন না, দারুণ এক চমকও দেখতে পাবেন তারা।

টুইটারে লেখা এক বার্তায় শোয়েব আখতার লিখেন, ‘মোহাম্মদ আমিরকে আমার অধীনে ছেড়ে দিন। এরপর আশ্চর্য হয়ে দেখবেন শুধু, মাঠে কি পারফরম্যান্সটাই না দেখায় সে।’

অন্য একটি ভিডিও আলোচনায় শোয়েব আখতারকে বলতে শোনা গেছে, তিনি নিজেও পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক একই আচরণের শিকার হয়েছিলেন। বিশেষ করে ২০১১ বিশ্বকাপের সময়। ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব আখতার বলেন, ‘আমি প্রায়ই বলে থাকি যে, ২০১১ বিশ্বকাপের সময়ও আমাকে মূল্যায়ন করা হয়নি। এমনকি আফ্রিদিও (তখনকার অধিনায়ক) নয়, টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যরাও নয়। এটা প্রকাশ্যেই বলে থাকি। আমাকে অসম্মান করা হয়েছিল। তবে এসবকে আমি পরোয়া করতাম না। কারণ, তখনই আমি অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেলেছিলাম।’

আমিরকে নিয়ে শোয়েব আখতার বলেন, ‘আমিরের আরও ভালো বোলিং করা উচিৎ ছিল এবং পারফরম্যান্সের উন্নতি করা প্রয়োজন ছিল। তাহলে কেউই তাকে দল থেকে বাদ দিতে পারতো না। নিজের ভয়কে জয় করা অবশ্যই উচিৎ এবং নিজের পারফরম্যান্সের প্রতিপক্ষ বানিয়ে নেয়া উচিৎ ম্যানেজমেন্টকে।’

ওই ভিডিওতেও আমিরকে তার অধীনে দেয়ার পরামর্শ দেন শোয়েব আখতার। তিনি বলেন, ‘যদি আমিরকে আমার অধীনে শুধু দুই মাসের জন্য দেয় হয়, তাহলে সবাই দেখতো যে সে ১৫০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বোলিং শুরু করেছে। তিন বছর আগে আমি যা চিন্তা করেছিলাম, সেটা তাকে শেখাতে সক্ষম।’

পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজা বলেছেন, এটা হচ্ছে একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারের ক্রিকেট থেকে দুঃখজনক বিদায়। টুইটারে তিনি লিখেন, ‘মোহাম্মদ আমির অবসর নিয়ে ফেলেছেন। খুবই দুঃখজনক। বড় অসময়ে অবসর নিয়েছে একজন সম্ভানাময়ী সুপারস্টার। এবং এটা উঠতি তারকাদের জন্য একটি শিক্ষাও বটে। সুতরাং, আপনার হাতে যে প্রতিভা রয়েছে একে সম্মান করতে শিখুন। নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। সম্মান অর্জনের জন্য অর্থের অপচয় করবেন না।’

অবসর ঘোষণার সময় যে ভিডিওতে কথা বলেছিলেন আমির, সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘সত্যি কথা বলতে, আমি এই ম্যানেজমেন্টের অধীনে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবো, তা চিন্তাও করতে পারছি না। আমি ক্রিকেটই ছেড়ে দিচ্ছি এবং সেটা এখন থেকে। আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এটাকে আর সামলাতে পারছি না। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এটাকে অনেক বেশি দেখেছি। তখন বারবার বলতে শুনেছি, আমার পেছনে নাকি পিসিবি অনেক ইনভেস্ট করেছে। আমি শহিদ আফ্রিদি ভাইয়ের কাছে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ যে, যখন আমি নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে এসেছি, তখন তিনি আমাকে খেলার সুযোগ দিয়েছেন।’

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:৩৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০
২১২ Time View

আমিরের দায়িত্ব আমার কাছে দিন, এরপর দেখবেন চমক : শোয়েব আখতার

আপডেট সময় : ০৮:৩৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০

সবুজদেশ ডেস্কঃ

পাকিস্তানের বর্তমান টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর রাগে, ক্ষোভে অভিমানে বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির অন্যতম সেরা পেসার মোহাম্মদ আমির।

মাত্র ২৮ বছর বয়সে অবসর নেয়ার কারণ তিনি লুকিয়ে রাখেননি। মিডিয়ার সামনে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি মানসিক নির্যাতনের শিকার। এ কারণে বর্তমান ম্যানেজমেন্টের অধীনে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবো না।’

মোহাম্মদ আমিরের হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে অবাক পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটাররা। সম্প্রতি সব ইস্যুতে মতামত দেয়া শোয়েব আখতার মোহাম্মদ আমিরের এই পরিণতির জন্য তুমুল সমালোচনা করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের।

আমিরের এই ঘোষণা আসার কিছুক্ষণ পর তার অবসর নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পিসিবিও। এরপর বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন শোয়েব আখতার। তিনি সরাসরি পিসিবিকে প্রস্তাব দিয়েছেন, মোহাম্মদ আমিরের দায়িত্ব তার কাছে দিতে। এরপর আমিরকে তিনি শুধু ট্র্যাকেই নিয়ে আসবেন না, দারুণ এক চমকও দেখতে পাবেন তারা।

টুইটারে লেখা এক বার্তায় শোয়েব আখতার লিখেন, ‘মোহাম্মদ আমিরকে আমার অধীনে ছেড়ে দিন। এরপর আশ্চর্য হয়ে দেখবেন শুধু, মাঠে কি পারফরম্যান্সটাই না দেখায় সে।’

অন্য একটি ভিডিও আলোচনায় শোয়েব আখতারকে বলতে শোনা গেছে, তিনি নিজেও পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক একই আচরণের শিকার হয়েছিলেন। বিশেষ করে ২০১১ বিশ্বকাপের সময়। ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব আখতার বলেন, ‘আমি প্রায়ই বলে থাকি যে, ২০১১ বিশ্বকাপের সময়ও আমাকে মূল্যায়ন করা হয়নি। এমনকি আফ্রিদিও (তখনকার অধিনায়ক) নয়, টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যরাও নয়। এটা প্রকাশ্যেই বলে থাকি। আমাকে অসম্মান করা হয়েছিল। তবে এসবকে আমি পরোয়া করতাম না। কারণ, তখনই আমি অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেলেছিলাম।’

আমিরকে নিয়ে শোয়েব আখতার বলেন, ‘আমিরের আরও ভালো বোলিং করা উচিৎ ছিল এবং পারফরম্যান্সের উন্নতি করা প্রয়োজন ছিল। তাহলে কেউই তাকে দল থেকে বাদ দিতে পারতো না। নিজের ভয়কে জয় করা অবশ্যই উচিৎ এবং নিজের পারফরম্যান্সের প্রতিপক্ষ বানিয়ে নেয়া উচিৎ ম্যানেজমেন্টকে।’

ওই ভিডিওতেও আমিরকে তার অধীনে দেয়ার পরামর্শ দেন শোয়েব আখতার। তিনি বলেন, ‘যদি আমিরকে আমার অধীনে শুধু দুই মাসের জন্য দেয় হয়, তাহলে সবাই দেখতো যে সে ১৫০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বোলিং শুরু করেছে। তিন বছর আগে আমি যা চিন্তা করেছিলাম, সেটা তাকে শেখাতে সক্ষম।’

পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজা বলেছেন, এটা হচ্ছে একজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারের ক্রিকেট থেকে দুঃখজনক বিদায়। টুইটারে তিনি লিখেন, ‘মোহাম্মদ আমির অবসর নিয়ে ফেলেছেন। খুবই দুঃখজনক। বড় অসময়ে অবসর নিয়েছে একজন সম্ভানাময়ী সুপারস্টার। এবং এটা উঠতি তারকাদের জন্য একটি শিক্ষাও বটে। সুতরাং, আপনার হাতে যে প্রতিভা রয়েছে একে সম্মান করতে শিখুন। নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। সম্মান অর্জনের জন্য অর্থের অপচয় করবেন না।’

অবসর ঘোষণার সময় যে ভিডিওতে কথা বলেছিলেন আমির, সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘সত্যি কথা বলতে, আমি এই ম্যানেজমেন্টের অধীনে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবো, তা চিন্তাও করতে পারছি না। আমি ক্রিকেটই ছেড়ে দিচ্ছি এবং সেটা এখন থেকে। আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এটাকে আর সামলাতে পারছি না। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এটাকে অনেক বেশি দেখেছি। তখন বারবার বলতে শুনেছি, আমার পেছনে নাকি পিসিবি অনেক ইনভেস্ট করেছে। আমি শহিদ আফ্রিদি ভাইয়ের কাছে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ যে, যখন আমি নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে এসেছি, তখন তিনি আমাকে খেলার সুযোগ দিয়েছেন।’