ঢাকা ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘আমি শেখ মুজিবের মেয়ে, জনগণের স্বার্থ বিক্রি করি না’

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

২০০১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেও ক্ষমতায় যেতে পারিনি। সে নির্বাচনে খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিল। আমাকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তখন আমি বলেছিলাম, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে। ক্ষমতার লোভ করি না, জনগণের স্বার্থ বিক্রি করি না।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর কাওলায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করেন না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের ধারাবাহিকতা নিয়ে চলতে চেয়েছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীকে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছিল। আল বদর, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, যারা এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে দিয়েছে, তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। জিয়াও বসিয়েছিল, খালেদা জিয়াও। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তাদের কোনো অবদান নেই। তারা সেটা করতেও চায় না। এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়।

তিনি বলেন, ’৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, বিদ্যুৎ ছিল মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট। এই বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে সে কানসাটে মানুষকে গুলিকে হত্যা করে। ঢাকা শহরে পানির অভাব, বিদ্যুতের অভাব ছিল। মানুষ বিদ্যুৎ ও পানির জন্য আন্দোলন করেছিল। বিএনপির এক নেতাকে পাবলিক ধাওয়া দিয়েছিল, নামই হয়ে গিয়েছিল দৌড় সালাউদ্দিন। পাবলিকের ধাওয়া খেয়ে সে পালিয়েছিল। খালেদা জিয়া চাহিদা পূরণ করতে পারেনি।

বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অর্থপাচারের কারণে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সেই সময় মুচলেকা দিয়ে খালেদা জিয়ার ছেলে বিদেশে পালিয়ে যায়। যে নাকি জীবনে আর রাজনীতি করবে না। কিন্তু যে টাকা সে পাচার করেছে, সেই মামলায় এফবিআই সাক্ষ্য দিয়ে গিয়েছিল। সে ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তাদের ব্যবসা ছিল অস্ত্র চোরকারবারি, অর্থপাচারকারী।

দেশবাসীর উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ খালেদা জিয়া থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার- এই ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের জন্য কী করেছে? মানুষের জন্য কী করেছে? মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কী করেছে? সেটা একবার চিন্তা করে দেখবেন। অনেকে বড় বড় কথা বলেছে, দেশের মানুষের জন্য তারা কী করেছে?

আওয়ামী লীগ অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে জানিয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে একটা দেশের যে উন্নতি হয়, যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে তারা ক্ষমতা থাকলে যে দেশের জন্য উন্নতি হয়, আজ আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।

উন্নয়ন চাইলে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি এও বলেন, আর ধ্বংস চাইলে বিএনপি-জামায়াতকে বেছে নিতে। 

বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেই- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। জনগণ ভোট দিলে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, না দিলে নেই।

বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন নষ্ট করতে চায়। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। এ জন্য তিনি দেশবাসী এবং ঢাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩
১১৯ Time View

‘আমি শেখ মুজিবের মেয়ে, জনগণের স্বার্থ বিক্রি করি না’

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩

সবুজদেশ ডেস্কঃ

২০০১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেও ক্ষমতায় যেতে পারিনি। সে নির্বাচনে খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিল। আমাকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তখন আমি বলেছিলাম, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে। ক্ষমতার লোভ করি না, জনগণের স্বার্থ বিক্রি করি না।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর কাওলায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করেন না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের ধারাবাহিকতা নিয়ে চলতে চেয়েছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীকে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছিল। আল বদর, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, যারা এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে দিয়েছে, তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। জিয়াও বসিয়েছিল, খালেদা জিয়াও। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তাদের কোনো অবদান নেই। তারা সেটা করতেও চায় না। এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়।

তিনি বলেন, ’৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, বিদ্যুৎ ছিল মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট। এই বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে সে কানসাটে মানুষকে গুলিকে হত্যা করে। ঢাকা শহরে পানির অভাব, বিদ্যুতের অভাব ছিল। মানুষ বিদ্যুৎ ও পানির জন্য আন্দোলন করেছিল। বিএনপির এক নেতাকে পাবলিক ধাওয়া দিয়েছিল, নামই হয়ে গিয়েছিল দৌড় সালাউদ্দিন। পাবলিকের ধাওয়া খেয়ে সে পালিয়েছিল। খালেদা জিয়া চাহিদা পূরণ করতে পারেনি।

বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অর্থপাচারের কারণে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সেই সময় মুচলেকা দিয়ে খালেদা জিয়ার ছেলে বিদেশে পালিয়ে যায়। যে নাকি জীবনে আর রাজনীতি করবে না। কিন্তু যে টাকা সে পাচার করেছে, সেই মামলায় এফবিআই সাক্ষ্য দিয়ে গিয়েছিল। সে ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তাদের ব্যবসা ছিল অস্ত্র চোরকারবারি, অর্থপাচারকারী।

দেশবাসীর উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ খালেদা জিয়া থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার- এই ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের জন্য কী করেছে? মানুষের জন্য কী করেছে? মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কী করেছে? সেটা একবার চিন্তা করে দেখবেন। অনেকে বড় বড় কথা বলেছে, দেশের মানুষের জন্য তারা কী করেছে?

আওয়ামী লীগ অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে জানিয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে একটা দেশের যে উন্নতি হয়, যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে তারা ক্ষমতা থাকলে যে দেশের জন্য উন্নতি হয়, আজ আমরা সেটা প্রমাণ করেছি।

উন্নয়ন চাইলে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি এও বলেন, আর ধ্বংস চাইলে বিএনপি-জামায়াতকে বেছে নিতে। 

বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেই- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। জনগণ ভোট দিলে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, না দিলে নেই।

বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন নষ্ট করতে চায়। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। এ জন্য তিনি দেশবাসী এবং ঢাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।