ঢাকা ০৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওয়ার্কার্স পার্টি আগামীতে হাতুড়ি নিয়েই ভোট করবে: মেনন

Reporter Name

জাহিদ হাসান, যশোরঃ

দল ছেড়ে যাওয়া নেতাদের সমালোচনা করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, আমরা এই সরকারকে সমর্থন করেছি। এমনকি সরকারে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদেরকে বলা হয়েছে, আমরা নাকি নৌকা প্রতীক নিয়ে হাতুড়ি আত্মসমর্পণ করেছি বুর্জয়াদের হাতে। নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করে হেরে গেলে তো দুঃখ হবেই। নৌকা প্রতীক আপনারা নেন নাই, নিয়েছেন?।

সেদিন বলেছিলাম বাঘারপাড়ায়, নৌকা প্রতীক যদি নাও পাই, হাতুড়ি নিয়েই লড়াই করবো আমরা। সেদিন আপনারা রাজি হন নাই, কেন রাজি হন নাই। কারণ নৌকা পেলে আপনাদের ভাল হয়। ওয়ার্কার্স পার্টি দশম কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর নৌকা নয়, আগামি নির্বাচনে হাতুড়ি প্রতীক নিয়েই ভোট করবে। শনিবার সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল ময়দানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির খুলনা বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

যশোর জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাড. আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে জনসভায় রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, অভিযোগ করা হয়েছে আমরা ১৪দল করে আত্মসমর্পণ করেছি। যদি ১৪ দল না হতো, আমার রাসেল খান জীবন না দিতো, আপনারা কেন ক্ষমতাসীনরাও এই মাঠে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে পারতেন না। জামায়াত, জঙ্গিবাদ, সায়খুল আযম বাংলাভাইদের হাতে চলে যেত দেশ। আমার গরীব মানুষ, শ্রমিক, ক্ষেতমজুর কোথায় যেত। সমস্ত পাটকল, কেমিক্যাল কোম্পানী ব্যক্তি মালিকানার হাতে তুলে দেওয়া হতো। সেদিন আমরা লড়াই করেছিলাম বলেই পরিবর্তন হয়েছিল। ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দিনের শাসন এসেছিল। ওয়ার্কার্স পার্টি বলেছিল এই শাসন মানি না। তাহলে এই কথায় সত্য, একমাত্র ওয়ার্কার্স পার্টি সাহসের সঙ্গে শ্রমিকের অধিকার, ক্ষেতমজুর, যুবক, ছাত্রের সাংবাদিকের অধিকার নিয়ে লড়াই করেছে। লড়াই করবে। সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। এই আদর্শের রাজনীতিতে গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সঙ্গে থাকবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ কমরেড আসাদ, কমরেড তোজো, কমরেড শান্তি, কমরেড নজরুল, কমরেড হেমকে স্মরণ করে জনসভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, বিভ্রান্তির রাজনীতির সেদিন অসংখ্য তরুণের প্রাণ নিয়েছিল। কিন্তু শহীদের খাতায় তাদের নাম উঠেনি। আজকে আবার সেই যশোর থেকেই দেখি বিভ্রান্তির রাজনীতি শুরু হয়েছে। যখন সমস্ত দেশ উন্নয়নের পথে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সমতার যুদ্ধে লড়াই বিস্তৃত হচ্ছে। কৃষকের ধানের দাম, পাটকল শ্রমিকের জন্য যে লড়াই বিস্তৃত হচ্ছে। তখন আমাদের তত্ত্ব দেওয়া হচ্ছে মতাদর্শ রক্ষা করতে হবে। এমন মতাদর্শ রক্ষা করতে হবে, দল ভেঙে দল ছুট হয়ে। আপসোস আপনাদের কারণে এই দলছুট। এতে ওয়ার্কার্স পার্টির কোন ক্ষতি হয়নি।

জনসভায় বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, যারা যশোরে ওয়ার্কাস পার্টির মতাদর্শ রক্ষার সম্মেলন করেছেন তাদের সংখ্যা ৫৫জন। তারা সারাদেশ থেকে লোকজন ডেকে নিয়ে এসে সম্মেলন দেখিয়েছেন। যারা এই সম্মেলন করেছেন তাদের আদর্শের উৎস বিমল বিশ্বাস। তিনি তাদের প্রধান উপদেষ্টা। এই বিমল বিশ্বাস ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পতাকা চিনতেন না। তিনি আর সিপিবি আজ এক হবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাদের প্রধান প্রবণতা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে তারা দেখতে পান না। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই তারা বুঝতে পারেন না। তারা বাংলাদেশের মূল রাজনীতি বুঝতে পারে না এটাই বাস্তবতা। সিপিবি বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন ভূমিকা পালন করে নাই।

জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, নূর মোহাম্মদ বকুল, সাতক্ষীরার এমপি মোস্তফা লুৎফুল্লা, পলিট ব্যুরোর সদস্য কামরুল হাসান, শ্রমিক নেতা ইউনুস তালুকদার, যুবমৈত্রীর সভাপতি অনুপ কুমার পিন্টু, যশোর জেলা ছাত্রমৈত্রী সভাপতি শ্যামল শর্মা প্রমুখ।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:৫২:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯
৩৮০ Time View

ওয়ার্কার্স পার্টি আগামীতে হাতুড়ি নিয়েই ভোট করবে: মেনন

আপডেট সময় : ০৮:৫২:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

জাহিদ হাসান, যশোরঃ

দল ছেড়ে যাওয়া নেতাদের সমালোচনা করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, আমরা এই সরকারকে সমর্থন করেছি। এমনকি সরকারে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদেরকে বলা হয়েছে, আমরা নাকি নৌকা প্রতীক নিয়ে হাতুড়ি আত্মসমর্পণ করেছি বুর্জয়াদের হাতে। নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করে হেরে গেলে তো দুঃখ হবেই। নৌকা প্রতীক আপনারা নেন নাই, নিয়েছেন?।

সেদিন বলেছিলাম বাঘারপাড়ায়, নৌকা প্রতীক যদি নাও পাই, হাতুড়ি নিয়েই লড়াই করবো আমরা। সেদিন আপনারা রাজি হন নাই, কেন রাজি হন নাই। কারণ নৌকা পেলে আপনাদের ভাল হয়। ওয়ার্কার্স পার্টি দশম কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর নৌকা নয়, আগামি নির্বাচনে হাতুড়ি প্রতীক নিয়েই ভোট করবে। শনিবার সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল ময়দানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির খুলনা বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

যশোর জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাড. আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে জনসভায় রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, অভিযোগ করা হয়েছে আমরা ১৪দল করে আত্মসমর্পণ করেছি। যদি ১৪ দল না হতো, আমার রাসেল খান জীবন না দিতো, আপনারা কেন ক্ষমতাসীনরাও এই মাঠে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে পারতেন না। জামায়াত, জঙ্গিবাদ, সায়খুল আযম বাংলাভাইদের হাতে চলে যেত দেশ। আমার গরীব মানুষ, শ্রমিক, ক্ষেতমজুর কোথায় যেত। সমস্ত পাটকল, কেমিক্যাল কোম্পানী ব্যক্তি মালিকানার হাতে তুলে দেওয়া হতো। সেদিন আমরা লড়াই করেছিলাম বলেই পরিবর্তন হয়েছিল। ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দিনের শাসন এসেছিল। ওয়ার্কার্স পার্টি বলেছিল এই শাসন মানি না। তাহলে এই কথায় সত্য, একমাত্র ওয়ার্কার্স পার্টি সাহসের সঙ্গে শ্রমিকের অধিকার, ক্ষেতমজুর, যুবক, ছাত্রের সাংবাদিকের অধিকার নিয়ে লড়াই করেছে। লড়াই করবে। সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। এই আদর্শের রাজনীতিতে গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সঙ্গে থাকবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ কমরেড আসাদ, কমরেড তোজো, কমরেড শান্তি, কমরেড নজরুল, কমরেড হেমকে স্মরণ করে জনসভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, বিভ্রান্তির রাজনীতির সেদিন অসংখ্য তরুণের প্রাণ নিয়েছিল। কিন্তু শহীদের খাতায় তাদের নাম উঠেনি। আজকে আবার সেই যশোর থেকেই দেখি বিভ্রান্তির রাজনীতি শুরু হয়েছে। যখন সমস্ত দেশ উন্নয়নের পথে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সমতার যুদ্ধে লড়াই বিস্তৃত হচ্ছে। কৃষকের ধানের দাম, পাটকল শ্রমিকের জন্য যে লড়াই বিস্তৃত হচ্ছে। তখন আমাদের তত্ত্ব দেওয়া হচ্ছে মতাদর্শ রক্ষা করতে হবে। এমন মতাদর্শ রক্ষা করতে হবে, দল ভেঙে দল ছুট হয়ে। আপসোস আপনাদের কারণে এই দলছুট। এতে ওয়ার্কার্স পার্টির কোন ক্ষতি হয়নি।

জনসভায় বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, যারা যশোরে ওয়ার্কাস পার্টির মতাদর্শ রক্ষার সম্মেলন করেছেন তাদের সংখ্যা ৫৫জন। তারা সারাদেশ থেকে লোকজন ডেকে নিয়ে এসে সম্মেলন দেখিয়েছেন। যারা এই সম্মেলন করেছেন তাদের আদর্শের উৎস বিমল বিশ্বাস। তিনি তাদের প্রধান উপদেষ্টা। এই বিমল বিশ্বাস ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পতাকা চিনতেন না। তিনি আর সিপিবি আজ এক হবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাদের প্রধান প্রবণতা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে তারা দেখতে পান না। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই তারা বুঝতে পারেন না। তারা বাংলাদেশের মূল রাজনীতি বুঝতে পারে না এটাই বাস্তবতা। সিপিবি বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন ভূমিকা পালন করে নাই।

জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, নূর মোহাম্মদ বকুল, সাতক্ষীরার এমপি মোস্তফা লুৎফুল্লা, পলিট ব্যুরোর সদস্য কামরুল হাসান, শ্রমিক নেতা ইউনুস তালুকদার, যুবমৈত্রীর সভাপতি অনুপ কুমার পিন্টু, যশোর জেলা ছাত্রমৈত্রী সভাপতি শ্যামল শর্মা প্রমুখ।