নোয়াখালীঃ

এবার দলীয় হাইকমান্ডকে সময় বেঁধে দিয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। আগামী এক মাসের মধ্যে তার দাবি মেনে না নিলে পুনরায় আবার আন্দোলন শুরু করার কথা জানান তিনি।

শুক্রবার বিকালে বসুরহাটে সংবাদ সম্মেলনের পর সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।  

কাদের মির্জা বলেন, দলীয় হাইকমান্ড আমাকে বলেছেন, তুমি ঢাকার সংবাদ সম্মেলন বাতিল কর। তুমি কোম্পানীগঞ্জের হরতাল বন্ধ কর। আমি তাই হাইকমান্ডের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তাদের নির্দেশ মান্য করে কোম্পানীগঞ্জে রোববারের হরতাল প্রত্যাহার এবং মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাসের সংবাদ সম্মেলন বাতিল ঘোষণা করেছি।

তিনি বলেন, হাইকমান্ড আমাদের দাবি মোতাবেক যদি নোয়াখালীতে অপরাজনীতি বন্ধ করার লক্ষ্যে একরামুল কমির চৌধুরীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করে তার বাড়িতে ফেরত না পাঠায়, যদি জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি পুনর্গঠিত করা না হয় এবং টেন্ডারবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে জেলার সঠিক উন্নয়ন ধারা চালু করা না হয়- তাহলে এক মাস পর থেকে পুনরায় আবার আন্দোলন শুরু করা হবে। আমার নাকে দম থাকা পর্যন্ত আমার জীবন থাকা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।

বসুরহাট পৌরসভার মেয়র বলেন, কবিরহাট উপজেলায় চলছে হরিলুট। আমাদের নেতাকর্মীরা টিআর-কাবিখা কিছুই পায় না। তারা অসহায় এতিমের মতো দলকে ভালোবেসে দলের কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, একরাম চৌধুরীর হাতে নোয়াখালীতে এ পর্যন্ত ২৪ জন নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। প্রশাসন তার কোনো কূলকিনারা করেনি।

তিনি আরও বলেন, একরাম চৌধুরী বলে বেড়ায়- তার ছেলেটি উচ্চশিক্ষিত অথচ ছেলেটির হাতে সে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তার ছেলেকে আমি বলব তুমি অস্ত্র ছেড়ে রাজনীতিতে আস , আমি তোমাকে সহায়তা করব।

আবদুল কাদের মির্জা বলেন, কবিরহাট উপজেলা ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী আসন, অথচ একরামুল করিম চৌধুরী এখানে মাতব্বরি করে। ওই উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা আমার কাছে এসে কাঁদে, তারা একরামুল করিম চৌধুরী ও তার স্ত্রী উপজেলা চেয়ারম্যানের অত্যাচারে জর্জরিত। এখানে গতবারের মতো আসন্ন ইউনিয়ন নির্বাচনেও মেম্বার-চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কাছে টাকা চায় একরামুল করিম চৌধুরী। এখানে মেম্বার-চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেবেন ওবায়দুল কাদের ও দলীয় নেতারা- আপনি একরাম চৌধুরী কে?

চট্টগ্রামের ভোট সুষ্ঠু হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, সেখানে ৩টি প্রাণ গেছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, চৌমুহনীতে কারচুপির প্রমাণ পেলে একরামের পোষ্য ডিসি-এসপি ও নির্বাচনী কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেয়া হবে না। জনগণ তাদের কাছ থেকে কড়ায়গণ্ডায় হিসাব নিয়ে ছাড়বে।

কাদের মির্জা বলেন, তেলমারা নেতাকর্মীদের থেকে নেত্রীকে ও নেতাদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ মোশতাকরা মরে না, তারা যুগে যুগে বেঁচে থাকে এবং আমাদের নেতাকর্মীদেরও সতর্ক থাকতে হবে। ওই মোশতাক চক্র থেকে প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে রক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা কত দিকে খেয়াল রাখবেন?

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের স্বচ্ছ ও সৎ রাজনীতি করেন। পরিবারের জন্য দূরে থাক নিজের জন্য কিছুই করেন নাই। সরকার থেকে পাওয়া এক টুকরো জমির প্লটে ডেভেলপারকে দিয়ে বাড়ি বানাচ্ছেন তিনি।

কাদের মির্জা বলেন, শেখ হাসিনা দেশের গরিব ও ঘরহারা মানুষদের ৭০ হাজার ঘর দিয়েছে। এটা বিশ্বের নতুন ইতিহাস। শেখ হাসিনার উন্নয়ন সারা বিশ্বের রোল মডেল। চট্টগ্রামে শেখ হাসিনা হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করছেন; এখানে কেন ভোট চুরি করতে হবে- তিনি নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেন?

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মতো রাষ্ট্রনায়কের দরকার, জিল্লুর রহমানের মতো আদর্শবান নেতার দরকার, অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের মতো রাষ্ট্রপতি দরকার।

কাদের মির্জা বলেন, আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরও নীতি-নৈতিকতা নিয়ে রাজনীতি করেন। আমরাও তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করব।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here