সবুজদেশ ডেক্সঃ দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও। হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় এই দুই জেলায় শীত ও কুয়াশা আগেভাগেই নামে এবং দেরিতে ছাড়ে। এ অঞ্চলে আশ্বিনের শেষ দিকে শীত ও কুয়াশা শুরু হয়। থাকে চৈত্র মাস পর্যন্ত। প্রচণ্ড শীত থাকে তিন মাস- অগ্রহায়ন, পৌষ ও মাঘ। বাকি তিন মাস স্বাভাবিক শীত।

দীর্ঘ ছয় মাসের শীতে নাজেহাল হয়ে পড়ে এই এলাকার গরিব, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষ। এতো দীর্ঘমেয়াদি শীত বাংলাদেশের অন্য কোনো জেলায় হয় না। তাই আসছে শীত মোকাবেলায় অনেকেই লেপ-তোষক কিনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনেকেই বাড়িতে থাকা পুরনো কাপড় ও লেপ-তোষক ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করছেন।

গত সপ্তাহ থেকে জানান দিচ্ছে শীত আসছে খুব শিগগির। রাস্তাঘাট কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। শীতের আগাম বার্তা প্রেরণ করছে এই কুয়াশা। তবে আপাতত এই কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। দুপুর হতে না হতেই কেটে যাচ্ছে।

শীতের আগমনী সঙ্কেতে লেপ-তোষকের দোকানদাররা খুশি হলেও গরিব-অসহায় মানুষ দুশ্চিন্তায় আছেন।

ইতোমধ্যে শীত মোকাবেলায় আগাম লেপ-তোষক বানিয়ে মজুদ করে রাখতে শুরু করেছেন দোকানদাররা। কারিগরদের যেন কথা বলার ফুসরত নেই। সবাই সুই-সুতো আর তুলা ধুনা নিয়ে ব্যস্ত। তারা অনেক দিন কর্মহীন থাকলেও এখন তাদের কদর বেড়েছে।

লেপ-তোষক শেলাইয়ের কারিগর আজিজুল হক জানান, কুয়াশার মধ্য দিয়ে শীতের আগমন হয়। যতই শীত বাড়ে লেপ-তোষকের চাহিদাও ততো বাড়ে। সাম্প্রতিক সকালগোলা দেখে মনে হচ্ছে এ বার শীতের তীব্রতা ভালোই থাকবে। তাই লেপ-তোষকের চাহিদাও ভালো থাকবে। তবে এ বছর লেপ-তোষকের দাম একটু বাড়বে বলে জানান তিনি। কারণ তুলা ও কাপড়ের দাম একটু বেড়েছে। তবে মজুরি সে হারে না বাড়ায় তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।

বিসমিল্লাহ তুলা ঘরের মালিক মমতাজ আলী বলেন, সকালের কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে এবারও প্রচণ্ড শীত নামবে। প্রচণ্ড শীতের সময় কারিগররা লেপ-তোষকের মজুরি বাড়িয়ে দেয়। তাই আগাম লেপ-তোষক বানিয়ে রাখছি।

লেপ কিনতে আসা মজিবর রহমান জানান, দিনে হালকা গরম থাকলেও রাতে লেপ ছাড়া শীত কাটছেই না। রাতে একটু ঘুমানোর জন্য লেপ কিনতেই হলো।

সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ সকালের কুয়াশা দেখে আশঙ্কা প্রকাশ করছে- “এবার প্রচণ্ড শীত হবে। কারণ আশ্বিনে সাত দিনব্যাপী একটি ঝড় বৃষ্টি হয়। যেটি স্থানীয়ভাবে আশ্বিনের সাতাহা (সপ্তাহব্যাপী ঝড়-বৃষ্টি) নামে পরিচিত। এবছর তা হয়নি। এই সাতাহা না হওয়ায় এবার শীতের তীব্রতা একটু বেশি হতে পারে।”

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here