ঢাকা ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের অভিযোগ

 

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইনজামুল হক। ভুক্তভোগীরা একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

এ নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি প্রশাসনিক তদন্ত ও সুষ্ঠু সমাধানের নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বরাবর অভিযোগ পত্র জমা দেয় বিভাগীয় শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ পত্র গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইনজামুল হকের বিভিন্ন ল্যাব কোর্সের খাতা দেখেন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কতিপয় কিছু শিক্ষার্থী। পরীক্ষার ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগেই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবুল বাশার (রোল: ১৭৩১০১০), আশিকুর রহমান রাব্বি (রোল: ১৭৩১০১৭) ও অনিক হোসাইন (রোল:১৭৩১০১২) পরীক্ষার খাতায় বানান ভুল। কে কত মার্কস পেয়েছে, কে ফার্স্ট হয়েছে এই সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো প্রকাশের মাধ্যমে নিজেদের দাম্ভিকতা প্রকাশ করেন। এই মর্মে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবুল বাশার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিভাগের ছাদে ডেকে নিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এমন মন্তব্য করেন যে ‘এত বেশি যে লাফাচ্ছিস তোদের খাতা কি আমরা দেখি না? বেশি লাফালে ছাদ থেকে ফেলে দেবো’। বিভাগীয় সহকারী অধ্যাপক মো: ইনজামুল হকের ফিজিক্যাল জিওগ্রাফী ল্যাব কোর্সের ক্লাস বরাবরই এই কতিপয় শিক্ষার্থীরা নিয়ে থাকেন। সেই ক্লাসে তারা শিক্ষকদের মত আচরণ করেন এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মানসিক নির্যাতন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন’।

অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, ‘সহকারী অধ্যাপক মোঃ ইনজামুল হকের এসাইন ল্যাব কোর্স (GIS ল্যাব, শিক্ষাবর্ষ: ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি ল্যাব, শিক্ষাবর্ষ: ২০২১-২২, ২০২২-২৩) গুলোর খাতা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এই কতিপয় শিক্ষার্থীদের দিয়ে তিনি দেখান এবং এ নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বিভাগে একটি সুস্পষ্ট পাওয়ার প্রেক্টিস চালান। ২০১৯-২০ হতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এই অনিয়মের শিকার হয়েছে যা ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলেছে। এই প্রক্রিয়ার ফলে অনেক শিক্ষার্থীদের মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন নিশ্চিত হয় না। পরীক্ষার ফলাফলে পক্ষপাতিত্ব ও ভুল সিদ্ধান্তের ঝুঁকি তৈরি হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের ২০১৯-২০ হতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শী এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের কাছে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক হোসাইনের একটি অডিওবার্তাও রয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক মো. ইনজামুল হক বলেন, আমি অভিযোগের বিষয়ে এখনও অবগত না। শিক্ষার্থীদের কাছে প্রমাণ থাকলে ফেস টু ফেস সমাধান করার জন্য প্রস্তুত। খাতার মূল্যায় বলতে এখানে ল্যাবের বিষয়টা একটু ভিন্ন। যেহেতু পর্যাপ্ত শিক্ষক ও স্টাফ নাই, সুতরাং মাঝমধ্যে মাস্টার্সে পড়ুয়া সিনিয়রদের সহযোগিতা নেয়া হয়। ফাইনাল খাতা শিক্ষার্থীদের ধরাছোঁয়ার বাহিরে। যদি মূল খাতার বিষয়ে অভিযোগ দিয়ে থাকে তাহলে ভিত্তিহীন।

সবুজদেশ/আরএ/এসএএস

About Author Information

ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের অভিযোগ

Update Time : ০৭:৪৬:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

 

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইনজামুল হক। ভুক্তভোগীরা একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

এ নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি প্রশাসনিক তদন্ত ও সুষ্ঠু সমাধানের নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বরাবর অভিযোগ পত্র জমা দেয় বিভাগীয় শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ পত্র গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইনজামুল হকের বিভিন্ন ল্যাব কোর্সের খাতা দেখেন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কতিপয় কিছু শিক্ষার্থী। পরীক্ষার ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগেই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবুল বাশার (রোল: ১৭৩১০১০), আশিকুর রহমান রাব্বি (রোল: ১৭৩১০১৭) ও অনিক হোসাইন (রোল:১৭৩১০১২) পরীক্ষার খাতায় বানান ভুল। কে কত মার্কস পেয়েছে, কে ফার্স্ট হয়েছে এই সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো প্রকাশের মাধ্যমে নিজেদের দাম্ভিকতা প্রকাশ করেন। এই মর্মে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবুল বাশার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিভাগের ছাদে ডেকে নিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এমন মন্তব্য করেন যে ‘এত বেশি যে লাফাচ্ছিস তোদের খাতা কি আমরা দেখি না? বেশি লাফালে ছাদ থেকে ফেলে দেবো’। বিভাগীয় সহকারী অধ্যাপক মো: ইনজামুল হকের ফিজিক্যাল জিওগ্রাফী ল্যাব কোর্সের ক্লাস বরাবরই এই কতিপয় শিক্ষার্থীরা নিয়ে থাকেন। সেই ক্লাসে তারা শিক্ষকদের মত আচরণ করেন এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মানসিক নির্যাতন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন’।

অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, ‘সহকারী অধ্যাপক মোঃ ইনজামুল হকের এসাইন ল্যাব কোর্স (GIS ল্যাব, শিক্ষাবর্ষ: ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি ল্যাব, শিক্ষাবর্ষ: ২০২১-২২, ২০২২-২৩) গুলোর খাতা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এই কতিপয় শিক্ষার্থীদের দিয়ে তিনি দেখান এবং এ নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বিভাগে একটি সুস্পষ্ট পাওয়ার প্রেক্টিস চালান। ২০১৯-২০ হতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এই অনিয়মের শিকার হয়েছে যা ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলেছে। এই প্রক্রিয়ার ফলে অনেক শিক্ষার্থীদের মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন নিশ্চিত হয় না। পরীক্ষার ফলাফলে পক্ষপাতিত্ব ও ভুল সিদ্ধান্তের ঝুঁকি তৈরি হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের ২০১৯-২০ হতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শী এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের কাছে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক হোসাইনের একটি অডিওবার্তাও রয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক মো. ইনজামুল হক বলেন, আমি অভিযোগের বিষয়ে এখনও অবগত না। শিক্ষার্থীদের কাছে প্রমাণ থাকলে ফেস টু ফেস সমাধান করার জন্য প্রস্তুত। খাতার মূল্যায় বলতে এখানে ল্যাবের বিষয়টা একটু ভিন্ন। যেহেতু পর্যাপ্ত শিক্ষক ও স্টাফ নাই, সুতরাং মাঝমধ্যে মাস্টার্সে পড়ুয়া সিনিয়রদের সহযোগিতা নেয়া হয়। ফাইনাল খাতা শিক্ষার্থীদের ধরাছোঁয়ার বাহিরে। যদি মূল খাতার বিষয়ে অভিযোগ দিয়ে থাকে তাহলে ভিত্তিহীন।

সবুজদেশ/আরএ/এসএএস