ইরানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলাকে ‘বিনা উসকানিতে আগ্রাসন’ বলে অভিহিত করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চলমান এই সংঘাতে মস্কো ইরানি জনগণকে সহায়তা করার চেষ্টা করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সোমবার মস্কোতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে বৈঠকে এই মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পুতিন এই হামলাকে ‘অযৌক্তিক’ বলেও উল্লেখ করেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ভিত্তিহীন। ক্রেমলিনে আরাগচির সঙ্গে আলোচনার শুরুতে পুতিন এ মন্তব্য করেন এবং বলেন, ইরানি জনগণকে সাহায্য করতে রাশিয়া প্রস্তুত রয়েছে।
ইরানের ওপর মার্কিন হামলার নিন্দা করায় পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরাগচি বলেন, রাশিয়া ‘সঠিক ইতিহাসের পক্ষে’ অবস্থান নিয়েছে। এ ঘটনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও পুতিনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে রাশিয়া ইরানকে বিভিন্ন ধরণের সহায়তা দিতে প্রস্তুত, তবে তেহরান কী সহায়তা চায়, তা স্পষ্ট করে বলার দায়িত্ব তাদের।
বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, এক ব্রিফিংয়ে পেসকভ বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়েছি, যা ইরানি পক্ষের জন্য সমর্থনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রূপ। ভবিষ্যতে সবকিছুই নির্ভর করবে এই মুহূর্তে ইরানের কী প্রয়োজন, তার ওপর।
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মস্কো কী কী বাধ্যবাধকতা নিতে প্রস্তুত এবং ইরানকে এস-৩০০ এবং এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ অস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত কি না জানতে চাইলে পেসকভ আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন, ‘সবকিছু (নির্ভর করে) ইরানি পক্ষ কী বলে, আমাদের ইরানি বন্ধুরা যা বলে, তার উপর নির্ভর করছে।’
ব্রিফিংয়ে তিনি পুতিনের মধ্যস্থতার প্রস্তাবের কথাও উল্লেখ করেন। বলেন, আমরা আমাদের মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার প্রস্তাব দিয়েছি, এটি সুনির্দিষ্ট একটি বিষয়।
এর আগে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া।
তুরস্কের ইস্তান্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আরাগচি বলেন, রাশিয়া ইরানের বন্ধু। আমরা একটা কৌশলগত অংশীদারত্ব উপভোগ করছি। সব সময় আমরা পরস্পরের সঙ্গে পরামর্শ করি এবং সমন্বয় করি।
রাশিয়া ও ইরান গত জানুয়ারিতে একটি ‘বিস্তৃত অংশীদারত্ব চুক্তি’ স্বাক্ষর করে, যা তাদের ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মৈত্রীকে আরও মজবুত করে। তবে এ চুক্তিতে কেউ হামলার শিকার হলে পারস্পরিক সামরিক প্রতিরক্ষার কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।
সূত্র: এএফপি, খবর আল-জাজিরার