বিশ্ব রাজনীতিতে ইরানের ব্রিকসে অন্তর্ভুক্তির প্রভাব
ইরান এখন ব্রিকস-এর পূর্ণাঙ্গ সদস্য: প্রেসিডেন্ট পুতিন
২৪ অক্টোবর ২০২৪,মস্কো : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছেন যে, ইরান এখন “ব্রিকস” গোষ্ঠীর পূর্ণ সদস্য”। ইরানকে এই অর্থনৈতিক জোটে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ভারসাম্য আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত এই জোটের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক। ইরানের সম্পদ, বিশেষ করে তেল ও গ্যাস, এই জোটের শক্তি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
পুতিন বলেছেন, “ইরান ব্রিকস জোটে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ সদস্যের মর্যাদা পেয়েছে। এটি শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও বিশাল পরিবর্তন আনবে।”
ব্রিকস গোষ্ঠী ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ক্রমাগত সম্প্রসারণের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। ইরানের মতো শক্তিশালী দেশগুলির অন্তর্ভুক্তি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্রিকস জোটের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। ইরান তার বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষত তেল ও গ্যাস, এবং কৌশলগত অবস্থানের কারণে গোষ্ঠীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোজন।
ব্রিকস সম্প্রসারণের মাধ্যমে গোষ্ঠীটি বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। ইরানের সদস্যপদ এশিয়ার অর্থনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা আনতে পারে এবং জোটের কৌশলগত অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরানের মতো শক্তিশালী অর্থনীতির অন্তর্ভুক্তি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ব্রিকস জোটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
ইরানের ব্রিকস সদস্যপদ আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিসরে নতুন ভারসাম্য তৈরি করতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইরান তার অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিকল্প খুঁজে পাচ্ছে। ব্রিকস জোটে ইরানের অন্তর্ভুক্তি আরও অনেক দেশকে এই জোটের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে, যা বিশ্বের অর্থনৈতিক আয়োজনকে নতুন রূপ দিতে পারে।
ব্রিকস গোষ্ঠীর লক্ষ্য হলো বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা এবং পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলির অর্থনৈতিক আধিপত্য কমানো। ইরানের অন্তর্ভুক্তি এই প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের সম্পদ ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা ব্রিকস জোটের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ইরানের ব্রিকস সদস্যপদ বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। পুতিনের এই ঘোষণা শুধু ব্রিকসের সম্প্রসারণকেই চিহ্নিত করছে না, বরং বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামোকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর একটি সম্ভাবনা তৈরি করছে। ইরানের এই অন্তর্ভুক্তি বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।