গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে মারা যান ভারতের বরেণ্য সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ। তার মৃত্যু নিয়ে ক্রমশ ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। এ গায়কের মৃত্যু মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর, বিকালে গ্রেপ্তারকৃতদের কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাকসা ডিস্ট্রিক্ট জেলে নেওয়া হয়।
এসময় জেলের বাইরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কারণ জুবিনের ক্ষুব্ধ ভক্ত ও স্থানীয়রা অভিযুক্তদের “জনতার হাতে তুলে দেওয়ার” দাবি জানিয়ে সহিংস বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ।
এ পরিস্থিতিতে সিঙ্গাপুর পুলিশ অফিসিয়ালি একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মিস্টার জুবিন গার্গের মৃত্যু নিয়ে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া জল্পনা-কল্পনা ও ভুয়া তথ্য সম্পর্কে অবগত সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স। বর্তমানে এই মামলা সিঙ্গাপুরের ‘করোনার্স অ্যাক্ট ২০১০’-এর অধীনে তদন্তাধীন। প্রাথমিক তদন্তে, পুলিশ অপরাধমূলক কোনো কিছুই পায়নি।”
তদন্ত শেষ হতে আরো ৯০ দিন সময় লাগতে পারে। এ তথ্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এ মামলার তদন্ত সম্পূর্ণ করতে আরো তিন মাস বা আরো কিছুটা সময় বেশি লাগবে। তারপর তদন্ত রিপোর্ট সিঙ্গাপুরের স্টেট করোনারের কাছে জমা দেওয়া হবে।”
পেশাদারভাবে তদন্ত সম্পূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “এই মামলা সম্পূর্ণ ও পেশাদার তদন্ত পরিচালনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এসপিএফ। আর এটি সম্পূর্ণ করতে আরো সময় প্রয়োজন। আমরা সংশ্লিষ্ট সবার ধৈর্য ও সহযোগিতা কামনা করছি। পাশপাশি জনগণকে অনুরোধ করছি, যাচাই ছাড়া আপনারা কোনো তথ্য ছড়াবেন না।”
জুবিনের গার্গের মৃত্যুতে গভীরভাবে মর্মাহত আসামবাসী। তারা সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়ং- এর ফেসবুক পোস্টে ব্যাপকভাবে মন্তব্য করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আসাম ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘#JusticeForZubeenGarg’ হ্যাশট্যাগে অতিরিক্ত মন্তব্যের কারণে লরেন্স ওয়ং-এর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিছু সময়ের জন্য ডি-অ্যাক্টিভেট হয়ে যায়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের সেন্ট জন’স দ্বীপ থেকে অচেতন অবস্থায় গায়ক জুবিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেদিনই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এরপর প্রাথমিক তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ভারতের হাইকমিশনকে সরবরাহ করেছে সিঙ্গাপুর পুলিশ। তাতে কারণ হিসেবে স্পষ্ট লেখা—“ডুবে যাওয়া”। সাঁতার কাটতে গিয়েই তার মৃত্যু হয়েছে।
সবুজদেশ/এসএএস