প্রায় ১৫ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন ছকিনা বেগম। ভিটেমাটি ছাড়া অবশিষ্ঠ কিছুই নেই তার। দুঃখ-কষ্টে সন্তানের মতো লালন-পালন করছিলেন তিনটি গরু। কিন্তু গতকাল রাতে হঠাৎ বড় দুইটি গরু মারা গেছে। আর ছোট গরুটির অবস্থাও আশংকাজনক। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ঈশ্বরবা গ্রামে। এ ঘটনায় শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন ছকিনা বেগম। উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
জানা গেছে, ছকিনা বেগমের স্বামী মারা গেছে ১৫ বছর আগে। এক ছেলে ও এক মেয়ে ছকিনার। কিন্তু ছেলেটি মারা যায় বেশ আগেই। এরপর মেয়েকে বিয়ে দেন উপজেলার মোল্ল্যাডাঙ্গা গ্রামে। কিন্তু মেয়েটিরও সংসার ভেঙে যায় ৫/৬ মাস আগে। সেই থেকে মায়ের সাথেই থাকতো শেফালী। মা ও মেয়ে দুঃখ-কষ্টে লালন-পালন করছিলেন গরুগুলো। বৃহস্পতিবার রাতে গরুগুলোর খাবার দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ছকিনা বেগম। শুক্রবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখেন বড় দুইটি গরু মাটিতে পড়ে আছে। আর একটি গরুও বেশ অসুস্থ।
ছকিনা বেগম বলেন, রাতেও গরুগুলো তিনি খাবার দিয়ে রেখে গেছেন। সকাল গোয়ালঘরে গিয়ে দেখেন দুটি বড় গরু মাটিতে পড়ে আছে। এই গরু ছাড়া তার কিছুই নেই। খুব কষ্টে গরুগুলো লালন-পালন করেন। কিন্তু নিমিষেই সব শেষ হয়ে গেছে। পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
ছকিনার মেয়ে শেফালী খাতুন বলেন, বাবা-ভাই কেউ নেই। মাঠের মধ্যে মা আর আমি থাকি। এই গরু পালন করেই তার মায়ের চলে। তার স্বামী এই গরুগুলোকে বিষ খাওয়ায়ে হত্যা করেছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
ঈশ্বরবা গ্রামের নান্টু হোসেন বলেন, ওই মহিলা খুবই কষ্টে দিনযাপন করেন। গরুগুলো ছাড়া তার আর কিছুই নেই। অনেক কষ্টে সন্তানের মতো করে গরুগুলো লালন-পালন করেন। তিনি গরুগুলোকে যে খাবার খাওয়ান না সেই খাবার শুক্রবার সকাল চাড়িতে পাওয়া গেছে।
কালীগঞ্জ থানার এসআই হাসানুজ্জামান বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। প্রাণীসম্পদ অফিস গরুর মৃত্যুর কারণ জানতে গরুর দেহ থেকে স্যাম্পল নিয়েছে।
ভিডিও…
সবুজদেশ/এসএএস