ঢাকা ১২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উরুগুয়ের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ত্রাতা মেসি

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

কোচ চাইলে খেলবেন। শুক্রবার ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়ের পর লিওনেল মেসি নিজেই বলেছিলেন এই কথা। আর মেসি খেলতে চাইলে আর্জেন্টিনার কোচ তাকে না খেলিয়ে পারেন! গতকাল রাতে উরুগুয়ের বিপক্ষে মেসি শুধু খেলেন-ই নি, আর্জেন্টিনাকে হার থেকেও বাঁচিয়েছেন। তার অন্তিম সময়ের পেনাল্টি গোলেই ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা।

৩ দিন আগে ব্রাজিলের বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেছিলেন মেসি। সৌভাগ্যের চাকায় ভর করে কাল সেই অনুশোচনা মোচনের সুযোগ পেয়ে যান মেসি। তবে কাল যখন পেনাল্টি শট নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মেসি, মৃদুস্বরে একটা শঙ্কার বাজনা বাজছিল, আজও কি…!

কিন্তু ভেতর-বাহিরের সেই করুণ বাজনা কাল মেসিকে টলাতে পারেনি। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞার প্রমাণ দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ঠিকই পেনাল্টিটিকে রূপ দিয়েছেন গোলে। যে গোলে হারতে বসা আর্জেন্টিনা ফেলেছে ড্র স্বস্তির নিঃশ্বাস।

সাম্প্রতিক রকেট হামলার কারণে ইসরায়েলের তেল আবিবের এই ম্যাচটি বাতিলের শঙ্কা জেগেছিল। ঝুঁকি এড়াতে কেউ কেউ তেল আবিব থেকে ম্যাচ সরিয়ে অন্যত্র আয়োজনের আহ্বানও জানিয়েছিলেন। কিন্তু কাল তেল আবিবে ম্যাচটা শঙ্কামুক্তভাবেই হয়েছে। দুই প্রতিবেশির দ্বৈরথটাও হয়েছে দারুণ আকর্ষণীয়। দর্শকেরা মন ভরেছে ফুটবল বিনোদনের। ২-২ গোলের ফল সেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরই ফসল।

প্রীতি ম্যাচ হলেও দুই দলই মাঠে নামে নিজেদের সর্বোচ্চ অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে। আর্জেন্টাইন কোচ আক্রমণ সাজান মেসি, সার্জিও আগুয়েরো ও লাওতারো মার্টিনেজকে দিয়ে। উরুগুয়েও আর্জেন্টিনার রক্ষণ কাঁপাতে শুরুর একাদশেই নামায় দলের প্রধান দুই গোল-মেশিন এডিনসন কাভানি ও লুইস সুয়ারেজকে।

গোলগুলোও করেছেন দুই দলের আক্রমণভাগের এই সেনানিরাই। উরুগুয়ের হয়ে গোল দুটো করেছেন কাভানি ও সুয়ারেজ। আর্জেন্টিনাকে হাসিয়েছেন দুই বন্ধু মেসি ও আগুয়েরো। শুরু থেকেই বল পজেশনে টেক্কা দিয়েছে আর্জেন্টিনা। তবে প্রতি আক্রমণে উরুগুয়ে ছিল অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। তার ফসল হিসেবেই ম্যাচে দু-দুবার এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। দুবারই পিছিয়ে পড়ে সমতা ফিরিয়েছে আর্জেন্টিনা।

উরুগুয়েকে প্রথম এগিয়ে দেন চোট থেকে ফেরা এডিনসন কাভানি, ম্যাচের ৩৪ মিনিটে। জাতীয় দলের হয়ে যেটি তার ৫০তম গোল। ৬৩ মিনিটে কাভানির এই গোল শোধ করে দেন আগুয়েরো। মেসির মাপা ফ্রি কিক থেকে দুর্দান্ত এক হেডে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড।

এর ৫ মিনিট পরই আবার এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। ক্লাব সতীর্থ মেসিকে দর্শক বানিয়ে ফ্রি কিক থেকে অসাধারণ এক গোল করেন সুয়ারেজ। মেসিকে দেখিয়ে দেন ফ্রি কিক থেকে তিনিও গোল করতে পারেন। সুয়ারেজের এই গোলে জয়ই দেখছিল উরুগুয়ে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিট পর্যন্তও ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে।

উরুগুয়ের দর্শকেরা হয়তো জয় উৎসবের প্রস্তুতিই শুরু করে দিয়েছিল। ঠিক তখনই রেফারির পেনাল্টির বাঁশি। তা থেকে ঠাণ্ডা মাথায় গোল করে আর্জেন্টিনার হার বাঁচান অধিনায়ক মেসি। দলকে উদ্ধার করা গোলে বার্সেলোনা তারকা ছুঁয়েছেন জাতীয় দলের হয়ে ৭০তম গোলের মাইলফলক।

About Author Information
আপডেট সময় : ১১:৪০:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯
৪২৩ Time View

উরুগুয়ের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ত্রাতা মেসি

আপডেট সময় : ১১:৪০:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

সবুজদেশ ডেস্কঃ

কোচ চাইলে খেলবেন। শুক্রবার ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়ের পর লিওনেল মেসি নিজেই বলেছিলেন এই কথা। আর মেসি খেলতে চাইলে আর্জেন্টিনার কোচ তাকে না খেলিয়ে পারেন! গতকাল রাতে উরুগুয়ের বিপক্ষে মেসি শুধু খেলেন-ই নি, আর্জেন্টিনাকে হার থেকেও বাঁচিয়েছেন। তার অন্তিম সময়ের পেনাল্টি গোলেই ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্জেন্টিনা।

৩ দিন আগে ব্রাজিলের বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেছিলেন মেসি। সৌভাগ্যের চাকায় ভর করে কাল সেই অনুশোচনা মোচনের সুযোগ পেয়ে যান মেসি। তবে কাল যখন পেনাল্টি শট নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মেসি, মৃদুস্বরে একটা শঙ্কার বাজনা বাজছিল, আজও কি…!

কিন্তু ভেতর-বাহিরের সেই করুণ বাজনা কাল মেসিকে টলাতে পারেনি। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞার প্রমাণ দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ঠিকই পেনাল্টিটিকে রূপ দিয়েছেন গোলে। যে গোলে হারতে বসা আর্জেন্টিনা ফেলেছে ড্র স্বস্তির নিঃশ্বাস।

সাম্প্রতিক রকেট হামলার কারণে ইসরায়েলের তেল আবিবের এই ম্যাচটি বাতিলের শঙ্কা জেগেছিল। ঝুঁকি এড়াতে কেউ কেউ তেল আবিব থেকে ম্যাচ সরিয়ে অন্যত্র আয়োজনের আহ্বানও জানিয়েছিলেন। কিন্তু কাল তেল আবিবে ম্যাচটা শঙ্কামুক্তভাবেই হয়েছে। দুই প্রতিবেশির দ্বৈরথটাও হয়েছে দারুণ আকর্ষণীয়। দর্শকেরা মন ভরেছে ফুটবল বিনোদনের। ২-২ গোলের ফল সেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরই ফসল।

প্রীতি ম্যাচ হলেও দুই দলই মাঠে নামে নিজেদের সর্বোচ্চ অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে। আর্জেন্টাইন কোচ আক্রমণ সাজান মেসি, সার্জিও আগুয়েরো ও লাওতারো মার্টিনেজকে দিয়ে। উরুগুয়েও আর্জেন্টিনার রক্ষণ কাঁপাতে শুরুর একাদশেই নামায় দলের প্রধান দুই গোল-মেশিন এডিনসন কাভানি ও লুইস সুয়ারেজকে।

গোলগুলোও করেছেন দুই দলের আক্রমণভাগের এই সেনানিরাই। উরুগুয়ের হয়ে গোল দুটো করেছেন কাভানি ও সুয়ারেজ। আর্জেন্টিনাকে হাসিয়েছেন দুই বন্ধু মেসি ও আগুয়েরো। শুরু থেকেই বল পজেশনে টেক্কা দিয়েছে আর্জেন্টিনা। তবে প্রতি আক্রমণে উরুগুয়ে ছিল অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। তার ফসল হিসেবেই ম্যাচে দু-দুবার এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। দুবারই পিছিয়ে পড়ে সমতা ফিরিয়েছে আর্জেন্টিনা।

উরুগুয়েকে প্রথম এগিয়ে দেন চোট থেকে ফেরা এডিনসন কাভানি, ম্যাচের ৩৪ মিনিটে। জাতীয় দলের হয়ে যেটি তার ৫০তম গোল। ৬৩ মিনিটে কাভানির এই গোল শোধ করে দেন আগুয়েরো। মেসির মাপা ফ্রি কিক থেকে দুর্দান্ত এক হেডে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড।

এর ৫ মিনিট পরই আবার এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। ক্লাব সতীর্থ মেসিকে দর্শক বানিয়ে ফ্রি কিক থেকে অসাধারণ এক গোল করেন সুয়ারেজ। মেসিকে দেখিয়ে দেন ফ্রি কিক থেকে তিনিও গোল করতে পারেন। সুয়ারেজের এই গোলে জয়ই দেখছিল উরুগুয়ে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিট পর্যন্তও ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে।

উরুগুয়ের দর্শকেরা হয়তো জয় উৎসবের প্রস্তুতিই শুরু করে দিয়েছিল। ঠিক তখনই রেফারির পেনাল্টির বাঁশি। তা থেকে ঠাণ্ডা মাথায় গোল করে আর্জেন্টিনার হার বাঁচান অধিনায়ক মেসি। দলকে উদ্ধার করা গোলে বার্সেলোনা তারকা ছুঁয়েছেন জাতীয় দলের হয়ে ৭০তম গোলের মাইলফলক।